শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন

মাস্ক ব্যবহারে ঘোড়ার গাড়িতে প্রচারণা দোকান মালিক সমিতির

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১

‘মাস্ক নাই, সেবা নাই’, ‘এই মুহূর্তের ভ্যাকসিন, মাস্ক দিয়ে নাকমুখ ঢেকে নিন।’ রাজধানীর মিরপুর রোডে ঘোড়ার গাড়িতে এমন স্লোগানে প্রচারণা চালাতে দেখা গেল ঢাকা মহানগর উত্তর দোকান মালিক সমিতিকে। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকালে প্রচারণার ওই গাড়ি থেকে মাইকে করোনা সংক্রমণ রোধে মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নানান রেকর্ডেড বক্তব্য বাজছিল। ঘোড়ার গাড়িটি ঘুরে বেড়াচ্ছিল বিভিন্ন মার্কেটের সামনে দিয়ে। ঘোড়ার গাড়ির চালকের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, প্রচারণার জন্য ব্যবসায়ীরা ঘোড়ার গাড়িটিকে দিনভিত্তিক চুক্তিতে ভাড়া করে এনেছেন।
জানা গেছে, করোনার বিস্তার রোধে সরকারঘোষিত লকডাউন শেষে ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দোকানপাট ও শপিংমল খোলার আশায় স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে এ প্রচারণায় নেমেছে দোকান মালিক সমিতি। যদিও মার্কেট বা দোকানপাট খোলার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ঘোষিত লকডাউন শেষের দুই একদিন আগে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট-দোকানপাট খোলা হতে পারে বলে ‘সবুজ সংকেত’ পেয়েছেন দোকান মালিকরা। তাই ঈদকে সামনে রেখে তারা প্রতিটি মার্কেট-দোকানে যথোপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নিউমার্কেট, ধানমন্ডি ও কলাবাগান থানা এলাকার একাধিক মার্কেটের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, মার্কেটগুলো খোলা না থাকলেও ভেতরে দোকান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা। চলছে সাজসজ্জা ও মালামাল সাজানোর কাজ চলছে। বিভিন্ন মার্কেটে বসানো হচ্ছে জীবাণুনাশক স্প্রে বাক্স।
একাধিক দোকান মালিকের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে লকডাউন দেয়ায় তারা আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ইতোমধ্যে নয় রোজা চলে গেছে। আগামী সাত দিন গেলে ৩০ রমজানের অর্ধেক শেষ হয়ে যাবে। সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার ঘোষিত লকডাউন শেষ হওয়ার দু’একদিন আগে থেকে মার্কেট খুলে দেয়া হতে পারে। তাই তারা বেচাকেনার আগাম সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন। গত ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির নেতারা নিউমার্কেটে দোকান মালিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তারা ২২ এপ্রিল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট, দোকান ও ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানান। এছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের দুই মাসের বেতন ও বোনাসের ৯৬ হাজার ৭০৮ কোটি টাকার অর্ধেক ৪৮ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা ঈদের আগে ঋণ প্রণোদনা হিসেবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দেয়ার দাবি তোলেন। পাশাপাশি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অচলাবস্থা দূর করার লক্ষ্যে আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনারও দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলালউদ্দিন বলেন, গত এক বছর প্রাণঘাতী মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ যখন বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে তখন আমরা দোকান মালিকরা স্বেচ্ছায় ২৫ মার্চ থেকে সব কিছু বন্ধ করে দেই। সরকার পরদিন ২৬ মার্চ থেকে সব কিছু বন্ধ ঘোষণা করে। তখন থেকে এদেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবনে চরম ব্যবসায়িক মন্দা ও আর্থিক অনিশ্চয়তা নেমে আসে। উল্লেখ্য, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ১৪ এপ্রিল থেকে সাত দিন সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এই অবস্থায় ২২ এপ্রিল থেকে দোকানপাট খোলার দাবি জানাচ্ছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সরকার এর মধ্যে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন বাড়িয়ে দেয়। ব্যবসায়ীরা তা মেনে নিয়েই ২৮ এপ্রিলের দু’একদিন আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খুলতে চাইছেন। সেজন্যই তাদের এ প্রচারণা-প্রস্তুতি বলে মনে করা হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com