নেই কোন কারিগরি জ্ঞান তবুও বানিয়েছেন অত্যাধুনিক ড্রোন। শুধু তাই নয় প্রতি মাসে ইউটিউব থেকে তার আয় ৩০ হাজার টাকার বেশী। বিষ্ময়কর এই যুবকের নাম সুমন বয়স ২১ কি ২২ হবে। সুমন শেরপুর সদর উপজেলার ৩ নং বাজিতখিলা ইউনিয়নের পশ্চিম কুমরী গ্রামের মোঃ দুলাল মিয়া ও সমতা বানুর ছেলে। এবিষয়ে কথা হয় সুমনের তিনি জানান, ছোট বেলা থেকে দারিদ্রতার মধ্যে বড় হয়েছি। আমার বাবা দুলাল মিয়া একটি প্যাডেল চালিত রিক্সাচালক। তিনি সারাদিন কষ্ট করে যা আয় করতেন তা দিয়ে কোনরকম আমাদের সংসার চলতো। তখন থেকেই আমি চিন্তা করতাম কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়। সুমন আরও বলেন, তিনি যখন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার জন্য শেরপুর জেলা শহরের ডা. সেকান্দর আলী কলেজে ভর্তি হন। তখন ওই কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ফ্রি ওয়াই ফাই সেবা উন্মুক্ত ছিল। সেসময় ক্লাশের ফাঁকে ফাঁকে আমি ইউটিউবে বিভিন্ন কিছু বানানো দেখতাম। একসময় মনে আগ্রহ জাগলো আমি এরকম আনকমন কিছু বানাবো, তাহলে আমারও ইউটিউব থেকে টাকা আসবে। এরকম ভাবনা থেকে হঠাৎ একদিন সাহস করে ম্যাচ (দিয়াশলাই) দিয়ে এয়ারক্রাফটার বানাই। পরবর্তীতে যেটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেটিতে আপলোড দেই। এরপর সেই ভিডিওটি ব্যাপক সাড়া পায় এবং ৯ কোটিরও বেশী ভিউ হয়। এভাবেই আমার পথচলা শুরু। গত ৩ মাস পরিশ্রম করে এই ড্রোনটি বানিয়েছি। এটি উপরে ৩ হাজার ফিট এবং ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ফ্লাই করতে পারে। এই ড্রোনটি রিমোটের সাথে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পাশাপাশি এটাতে একটি ফোরকে ক্যামেরা সংযুক্ত, যেটি দিয়ে দূরের ছবি ও ভিডিও একদম ফুল এইচডি দেখা যায়। আমার ইউটিউব চ্যানেলের নাম “ক্রেজি থিংক” বর্তমানে আমার এই ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার ৬ লক্ষের কাছাকাছি। এখন পর্যন্ত এখানে মোট ২৫০ টির কাছাকাছি কন্টেইন আছে। যেটা থেকে ঘরে বসে আমার মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকারও বেশী। এজন্য প্রতি মাসে আমাকে “ক্রেজি থিংক” ইউটিউব চ্যানেলে আমাকে অন্তত নতুন নতুন ৩-৪ টি ভিডিও আপলোড করতে হয়। আমি এখন শেরপুর সরকারি কলেজের বিএ ১ম বর্ষের ছাত্র। আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনা আমি একজন সেরা ইউটিউবার হব। সুমনের বাবা রিক্সাচালক দুলাল মিয়া বলেন, বাবা আমরা মূর্খ মানুষ এত কিছু বুঝি না। আমার ছেলে বিনা প্রশিক্ষনে কত কিছু যে বানায়, তা দেখতে কতশত লোক প্রতিদিন বাড়িতে ভিড় জমায়। শুধু তাই না তার কাজে আশপাশের আরও কয়েকজন যুবক সহযোগীতা করে, সুমন তাদেরকেও টাকা দেয়। স্থানীয় এলাকাবাসী সাংবাদিক ফজলুল করিম লিচু বলেন, সুমন আমাদের গ্রামের তথা পুরো শেরপুর জেলার গর্ব। আমি মনে করি যেসব শিক্ষিত যুবকেরা চাকরির পেছনে দৌড়ান তারা সুমনকে অনুসরন করতে পারে। কারন একসময় এই সুমনই অনেক যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে।