ভিক্ষুক,নাম ছমির আলী, থাকেন শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর পশ্চিম পার্শ্বে সরকারি খাস জমিতে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাছা ইউনিয়নের নামারচর এলাকার এই ছমির আলী প্রায় ২০ বছর আগে পৈত্রিক ভিটা ধরলা নদীর ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে জীবিকার তাগিদে আশ্রয় নেন ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের যতীন্দ্রনারায়ন মৌজার চরাঞ্চালে। যৌবন বয়সে এক ছেলে-এক মেয়ে ও স্ত্রীর মুখে দু’বেলা খাবার যোগার করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত তাকে চরাঞ্চলের বিরুপ প্রাকৃতির সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছিল। কখনওবা ধরলা নদীতে মানুষ পারাপারের নৌকার শ্রমিক, কখনওবা নদীতে মাছ ধরা, কখনওবা দিনমজুরের কাজ ইত্যাদি করেই চলছিল ছমির আলীর সংসার। সর্বদা অভাব-অনটনের সংসারে প্রতিবছর বন্যার পানিতে প্লাবিত জড়াজীর্ন কুড়েঁঘর তার কষ্টের মাত্রাটি বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েকগুন। ছেলে-মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তারা আলাদা-আলাদা সংসার পাতেন। প্রতিনিয়ত অমানসিক শারীরিক পরিশ্রম সেই সাথে পুষ্টিকর খাবারের অভাবে ছমির আলীর বয়স যখন ৭০ ছুঁইছুঁই, যখন শরীর কোন ধরনের কায়িক পরিশ্রম মেনে নিতে চায় না; সে জীবন বাঁচানোর তাগিদে ভিক্ষাবৃত্তিতে নেমে পরে, প্রায় ১ যুগ হলো ছমির আলী ভিক্ষা করছেন। স্ত্রী জরিনা বেগমকে নিয়ে শুরু হয় বেঁচে থাকার নতুন যুদ্ধ। দুজনের সংসারে দু’বেলা ভাত-ডাল এর সংস্থান করাই যেখানে জীবন মরণ সমস্যা, সেখানে মাথা গোজাঁর জন্য একটা নিরাপদ আবাস ছমির আলীর জন্য ছলি এক স্বপ্ন- বিলাস। চরাঞ্চলে গ্রীষ্মকালের তপ্ত বালু, কালবৈশাখির তান্ডব, বর্ষার প্রবলবর্ষনের সাথে বন্যার পানি উঠার ঝুঁকি, শীতে উত্তরের কণকণে বাতাস সবাই যেন ছমির আলীর কুঁড়েঘরটাকে প্রতিনিয়ত তাচ্ছিল্ল করছিলো। ঠিক তখনি মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ক শ্রেনীর ভূমিহীন/গৃহহীনদের জন্য দ্বিতীয় ধাপে বরাদ্ধকৃত ১০৫ টি ঘরের মধ্যে এক লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি ঘর উপহার পান ছমির আলী। নতুন ঘরে কেমন আছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে ছমির আলী’র চোখ পানি। তিনি বললেন “স্বপ্নোতো ভাবং নাই বাহে, এমন একটা ঘর পামো”। আর জানান, ঘরের আবেদন নিয়া চেয়ারম্যান মেম্বররের কাছে অনেকেরবার গেইছং কোন কাজ হয় নাই। পরে শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফুল আলম সোহেল বাপোকে জানাং তিনি তৎক্ষনাত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকারকে তার দুরবস্থা স্বচোক্ষ্যে দেখানোর জন্য সরোজমিনের তার বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় একটি পাকা ঘরের ব্যবস্থা করে দিছে। আমার স্ত্রীকে নিয়ে সুখেই আছি, হাসিনার সরকারের জন্য নামাজ পড়ি দোয়া করমো। ভিক্ষুক নাম ছমির আলীর স্ত্রী ছমির আলী জানান,আমার স্বামী ভিক্ষা কোনভাবে সংসার চালাত থাকার কোন ঘর ছিলনা, শেখের বেটি হাসিনা আমাদের একটা সুন্দর ঘর দিছে হামরা ওমাক ধন্যবাদ জানাই।