‘সচেতনতা অবলম্বন ও নিয়ম মেনে চললে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনা থেকে সেরে ওঠা যায়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’
কথাগুলো বলছিলেন করোনা জয় করা ডা. আব্দুল্লাহ আল নোমান (২৮)। তিনি শেরপুরের নকলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন। শনিবার দুপুরে দিকে তাকে ছাড়পত্র প্রদান করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ মজিবুর রহমান।
রোববার সকালে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় করোনা থেকে সেরে ওঠা ডা. আব্দুল্লাহ আল নোমানের। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সকলের কি করা উচিৎ জানতে চাওয়া হয় তার কাছে।
ডা. নোমান জানান, পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় ফল ও শাক-সবজি খেতে হবে। এছাড়া কিছুক্ষণ পর পর লবন বা ভিনেগার মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে গারগল করা উচিৎ। এছাড়া সম্ভব হলে আধা ঘণ্টা পর পর গরম পানি পান করা ভালো।
আক্রান্তদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আইসোলেশনের সকল নিয়ম-কানুন মেনে চললে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হওয়া খুব কঠিন কিছু না। যার বাস্তব প্রমাণ আমি নিজে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে সামাজিকভাবে অনেকে হেয় চোখে মূল্যায়ন করেন, যা মোটেই ঠিক নয় জানিয়ে ডা. নোমান সকলের উদ্দেশে বলেন, কভিট-১৯ এর কারণে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হন। এই ভাইরাস অন্য সকল রোগের মতোই। তবে সচেতনতার অভাব হলে সমস্যাতে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
নকলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু কাউসার বিদ্যুত জানান, করোনায় নকলায় আক্রান্তদের মধ্যে ডা. আব্দুল্লাহ আল নোমান নকলা স্বাস্থ্য কপপ্লেক্সের আইসোলেশনে, ডা. সৌরভ কুমার সরকার, রনি মিয়া ও গৃহবধূ সরুফা বেগম ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের আইসোলেশন ওয়ার্ডে এবং রমজান আলী শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ডা. আব্দুল্লাহ আল নোমান, সরুফা বেগম ও রমজান আলী সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে ওঠেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ মজিবুর রহমান জানান, সহকারী সার্জন ডা. আব্দুল্লাহ আল নোমানকে আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। সরুফা বেগম ও রমজান আলীকে আজ রোববার সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে।
তিনি জানান, গত ১৫ এপ্রিল বুধবার ডা. আব্দুল্লাহ আল নোমানের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে তা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। ১৭ এপ্রিল শুক্রবার তিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। এরপর তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ এপ্রিল সোমবার ও ২৯ এপ্রিল বুধবার দুই দফায় আবারো নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ সময় তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নেগেটিভ আসে। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তিনি কিছুদিনের মধ্যে নিজের কর্মস্থলে যোগদান করবেন। তার বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।
এমআর/প্রিন্স