ভূ-গর্ভস্থ পানির অপচয় রোধ ও পরিবেশ বান্ধব বনায়নের লক্ষ্যে প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল টবের উদ্ভাবন করেছেন মানিকগঞ্জের উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ আব্দুল হালিম। পদার্থ বিজ্ঞানের দুটি সুত্র প্রয়োগ করে উদ্ভাবিত এই টবের বিশেষ সুবিধা হচ্ছে প্রতিদিন পানি দিতে হয় না। ৩ মাসে একবার পানি দিয়েই সতেজ রাখা যায় যে কোন প্রজাতির উদ্ভিদ। এই টবে বিশেষায়িত সার প্রয়োগের ফলে ফুল ও ফলের ফলন দ্বিগুন বৃদ্ধি পায়। এই ডিজিটাল অটো টবের আরেকটি অন্যতম গুণ হলো ডেঙ্গু মশার লাভা জন্মাতে পারে না। উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন এই টবে স্বল্প খরচে অধিক সুবিধা থাকায় প্রচলিত টবের চেয়ে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা শহীদ রফিক সেতু সংলগ্ন সৌদি খেজুর নার্সারীর মালিক মুহাম্মদ আব্দুল হালিম প্রায় দুই বছর ধরে গবেষণা করে ভূগর্ভস্থ পানির অপচয় রোধে এই ডিজিটাল টবের উদ্ভাবন করেন। তিনি ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ডিজিটাল এই টবের অনুমোদন পেয়েছেন এবং প্রযুক্তিনির্ভর এই টবটি রেজিষ্ট্রিকৃত হয়। ডিজিটাল এই টবের উদ্ভাবক মুহাম্মদ আব্দুল হালিম বলেন, টবের মাধ্যমে বিশ্বের সকল শহর এমনকি গ্রাম-গঞ্জেও ছাদ বাগান সহ বিভিন্ন জায়গায় নানা প্রজাতির গাছ রোপনের প্রচলন রয়েছে। প্রচলিত যে কোন টবে গাছের গোড়ায় পানি দিতে হয়। এসব গাছ ও উদ্ভিদের রক্ষণাবেক্ষণে প্রচলিত টবে প্রতিদিন সারা বিশ্বে কোটি কোটি লিটার পানি ব্যবহার করা হয়। যার আশি শতাংশই অপচয় হয়। এভাবে বিশ্বে প্রতিদিন কোটি কোটি লিটার পানি অপচয় হয়ে থাকে। যার নেতিবাচক প্রভাবে ভূ-পৃষ্টের পানির স্তর আশংকাজনক হারে নিচে নেমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় বিশ্ব বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে। তিনি আরোও বলেন, বিশ্বে যেকোন জায়গায় বসে মোবাইল এ্যাপসের মাধ্যমে এই টবে পানি দেওয়া যায়। ডিজিটাল এই টবে যেহেতু গাছের গোড়ায় পানি দিতে হয়না তাই পানির অপচয় হয় মাত্র শতকরা ৫ ভাগ। সারা বিশ্বে যদি ১ কোটি টব থাকে তাহলে গড়ে ১ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন। যার ৮০ শতাংশই অপচয় হচ্ছে। কিন্তু আমার উদ্ভাবিত টবে একদিকে যেমন এমনিতেই তিন মাস পর পর পানি দিলেই চলে এবং অপচয়ের হারও মাত্র ৫ শতাংশ। সুতরাং এই টব ব্যবহার করলে এক দিকে যেমন পানির অপচয় রোধ হবে অন্যদিকে ফুল-ফলের অধিক ফলন হবে। ইতোমধ্যে এই ডিজিটাল টবের উদ্ভাবক মুহাম্মদ আব্দুল হালিম সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে সৌদি আরবের খেঁজুর গাছের চারার নার্সারী করে সফল হয়েছেন। তার এই সৌদি নার্সারীর আরব দেশের খেঁজুর গাছের চারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি আশা করছেন, তার এই ডিজিটাল টব ব্যবহার করে দেশের মানুষ উপকৃত হবে।