বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে আশুলিয়ায় শ্রমিকদের সীমাহীন ভোগান্তি

শহীদুল্লাহ মুন্সী আশুলিয়া :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১

বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন। কঠোর লকডাউন থাকলেও এর আওতার বাইরে রয়েছে শিল্প-কারখানা।শিল্প-কারখানাগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপণায় শ্রমিকদের আনা নেওয়ার কথা থাকলেও আশুলিয়ার অধিকাংশ শিল্প-কারখানা তা পালন করেনি। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শ্রমিকদের। সড়ক-মহাসড়কগুলোতে ব্যাটারি চালিত রিকশা, অটোরিকশা চলাচল করেছে স্বাভাবিক দিনের মতই। চলতে দেখো গেছে দুই একটি স্থানীয় বাসও। তবে কঠোর লকডাউনে বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে সড়ক-মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্থানে চেকপোষ্ট বসিয়ে নজরদারি করতেও দেখা গেছে। এছাড়া সেনাবাহিনী এবং বিজিবি সদস্যদের মহাসড়কে টহল দিতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আশুলিয়ার বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে এ চিত্র দেখা গেছে। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় বরাবরের মত বৃহস্পতিবারও কর্মস্থলে যেতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে পোশাক শ্রমিকদের। শিল্প-কারখানার নিজস্ব ব্যবস্থাপণায় শ্রমিকদের আনা নেওয়ার কথা থাকলেও এবারও তাদের আনা নেওয়ার জন্য অধিকাংশ কারখানা কোন যানবাহনের ব্যবস্থা করেননি। ফলে নবীনগর-চন্দ্রা, ঢাকা-আরিচা ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের বিভিন্ন স্থানে পোশাক শ্রমিকদের জটলা চোখে পড়েছে। একটা গাড়ী এসে থামলেই তাতে গাদাগাদি করে উঠতে দেখা গেছে। করোনার যেন কোন বালাই নেই সেখানে। তবে অনেক পোশাক শ্রমিক বলছে তাদের বাড়ি থেকে কারখানায় পৌছাতে স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুন বেশী ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এখনতো কারখানায় যাচ্ছেন কিন্তু বাড়ি ফেরার সময় কি হবে জানেন না তারা। জিরানী বাজার এলাকায় কথা হয় শেরপুরে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে যাবেন মরিয়ম বেগম। তিনি একটি অটোরিকশায় করে আশুলিয়ার গোহাইলবাড়ি থেকে জিরানী বাজার এসেছেন। কিভাবে এত দূরের রাস্তা যাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কি আর করার বলেন, ভেঙ্গে ভেঙ্গে রিকশা-ভ্যান বা অটোরিকশা করে চলে যাব। আমার ৯ বছরের ছেলে অসুস্থ ওকে নিয়েই যেতে হবে। ভোগান্তি হলেও কি করার? নরসিংপুরে পরিবহনের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন আজাদ হোসেন নামের এক পোশাক শ্রমিক। তিনি জানান, এটা কিসের লকডাউন চলতেছে। এটা কোন লকডাউন নাকি? রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা ট্রাক, কাভারভ্যান সব চলতেছে। খালি বাস বন্ধ রাখছে। যত ভোগান্তি শুধু আমাদের। শরিফুল ইসলাম নামের এক শ্রমিকরে সাথে কথা হয় বলিভদ্র বাস স্ট্যান্ড এলাকায়। তিনি জানান, জিরানী বাজার থেকে ব্যাটারি চালিত একটি অটোরিকশায় করে ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে তিনি এখানে এসে নেমেছেন। যাবেন বিশামাইল। ২০ টাকার ভাড়া দিয়ে একশ টাকায়ও বিশমাইল যাওয়া যাবে কিনা দ্বিধাধন্ধে আছেন তিনি। তিনি জানান, অটোরিকশা চালকরা বেশী ভাড়া নিয়ে বেশ চলছে। কিন্তু সরকার আমাদের দিকে কিভাবে চাইল। সরকারতো আমাদের সুবিধার দিকে চাইল না। আমাদের কোন নিরাপত্তা নাই। এব্যাপারে গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়াকার্সলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো: রাকিবুল ইসলাম সোহাগ জানান, বিজিএমইএ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শ্রমিকদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে, এটা তারা করেনি। করোনা মহামারির এ সময়ে কোন শ্রমিক যতি করোনায় আক্রান্ত হন কিংবা কারখানায় আসতে যেতে কোন সমস্যা হয় তার দায়ভার কারখানা কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। এছাড়া এই সময়ে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় করোনার শ্রমিকদের মধ্যে করোনার ঝুঁকিও রয়েছে। তাই শ্রমিকদের প্রতি সরকার ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সুনজর দেওয়ার আহব্বান করেন তিনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com