শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
মাধবদীতে লোডশেডিং ও গরমে ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে চার্জার ফ্যানের বৃষ্টি প্রার্থনায় অঝোরে কাঁদলেন বরিশালের মুসল্লিরা আদিতমারীতে গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালা নওগাঁয় বোরো ধানের সোনালী শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন ছড়ার পানিই ভরসা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর চকরিয়ায় একাধিক অভিযানেও অপ্রতিরোধ্য বালুখেকো সিন্ডিকেট রবি মওসুমে নওগাঁ জেলায় ৮৮ হাজার ১১০ মেট্রিকটন ভূট্টা উৎপাদনের প্রত্যাশা কটিয়াদীতে প্রচন্ড তাপ প্রবাহ, বৃষ্টির জন্য সালাতুল ইসস্তিকা বরিশালে দাপদাহে স্বাস্থ্য সুরক্ষার্থে শেবাচিম হাসপাতালে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু কালীগঞ্জে রাতের অন্ধকারে কৃষি জমির মাটি লুট

পোশাক শিল্পের বাইরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড 

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১

রূপগঞ্জে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫২ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতদের আসামি করে শনিবার (১০ জুলাই) দুপুরে রূপগঞ্জ থানায় ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. নাজিম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম। মামলার আসামিরা হলেন- সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেম, হাসিব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহিম, তওসিফ ইব্রাহিম, তানজিব ইব্রাহিম, শাহেন শাহ আজাদ, মামুনুর রশিদ ও মো. সালাহউদ্দিন। এরইমধ্যে মামলায় উল্লেখিত আট আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বিকেলে তাদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার গ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবির হোসেন।

এদিকে ৫২ জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করলেও একটিবারের জন্যও আসেননি সজীব গ্রুপের মালিক এমএ হাসেম। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড লিমিটেডের ছয়তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের দুদিন পার হলেও তার দেখা বা বক্তব্য পাননি গণমাধ্যমকর্মীরা। গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার পর রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডস-এর ‘সেজান জুস’ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ১১০ জন সদস্য আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।

শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপরই শুরু হয় মরদেহ উদ্ধারের কাজ। আগুনের ঘটনায় ৫২ জন নিহত হয়েছেন। অগ্নিকা-ের ঘটনায় অধিকাংশ মরদেহই কারখানার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থেকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। কারখানার শ্রমিক ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, কারখানাটি তিন শিফটে পরিচালিত হতো। সেখানে কাজ করেন দুই হাজারের বেশি শ্রমিক। কারখানাটিতে সেজান জুসের কর্ক ও লেভেল প্যাকেটিংয়ের কাজ করা হতো। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে নিচ তলায়। ভবনটির ছাদ থেকে ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। তবে জীবন বাঁচাতে গিয়ে অনেক শ্রমিক ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত হন। নিহতও হন কয়েকজন, যাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।

এদিকে আগুন লাগা ভবনটি নিয়ে বিস্তর অভিযোগের মধ্যে অন্যতম ছিল, ওই ভবনের চারতলায় তালাবদ্ধ থাকা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র না থাকায় এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া ভবনটি কোনো বিল্ডিং কোড মেনে তৈরি করা হয়নি- এমন অভিযোগও উঠেছে স্থানীয় পর্যায়ে। কিন্তু অভিযোগগুলো সত্য নয় বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে, শনিবার সকাল ৭টা থেকে ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠতলায় উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই দুই তলায় কোনো লাশের সন্ধান মেলেনি বলে জানা গেছে। কারখানার ব্যাপারে ওঠা বেশ কিছু অসঙ্গতির অভিযোগ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন শুক্রবারই বলেছেন, ভবনে চারতলায় সিঁড়ির গেট তালাবদ্ধ থাকায় সেখানে আটকা প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে।

আগুন নেভানোর পর তারা চারতলায় তালাবদ্ধ থাকায় ওই তলার একটি জায়গাতেই ৪৯ জনের মরদেহ পেয়েছিলেন। তাছাড়া কারখানার ভবনে আগুন নেভানোর বা অগ্নিনির্বাপণের তেমন ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টিও স্বীকার করেছিলেন এই ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা। তবে এ সব অভিযোগই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন কাজী রফিকুল ইসলাম নামের সজীব গ্রুপের একজন ম্যানেজার। তিনি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে দাবি করেছেন, ‘ইকুইপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) এনাফ (যথেষ্ট) পরিমাণ ছিল। অ্যালার্ম দেওয়ার জন্য সবকিছু ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিচতলায় আগুন ধরার কারণে পুরোটা ছড়িয়ে গেছে।’ চারতলায় তালাবদ্ধ থাকার বিষয়টিও সত্য নয় দাবি করে  তিনি বলেন, ‘এটি মিথ্যা কথা, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যখন নিচতলায় আগুনটা ধরেছে, তখন সবাই আতঙ্কে ওপরে চলে গেছে।’

ইতোমধ্যে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান এবং দায়ীদের খুঁজে বের করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস এবং শ্রম অধিদফতরের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এতদিন পর্যন্ত তৈরি পোশাকবহির্ভূত শিল্পে সবচেয়ে বড় অগ্নিকা- হিসেবে ধরা হয়েছে টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়েলসের বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনাকে। ভয়াবহতার দিক থেকে ওই ঘটনাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানার অগ্নিকা-। রূপগঞ্জের অগ্নিকা-ের ঘটনায় মৃতের নিশ্চিতকৃত সংখ্যা এরই মধ্যে অর্ধশত ছাড়িয়েছে। দেশে শিল্প খাতে কারখানায় অগ্নিকা-ের ঘটনায় সবচেয়ে বড় প্রাণক্ষয় হয়েছে তৈরি পোশাক খাতে। ২০১২ সালে সাভারে তাজরীন ফ্যাশনসের কারখানায় অগ্নিকা-ের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ১১২ জনের। কারখানায় আগুন লেগে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা এটিই। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ট্যাম্পাকো ফয়েলসের কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৪১ জনের। এতদিন পর্যন্ত এটিই তৈরি পোশাকবহির্ভূত শিল্পে প্রাণঘাতী অগ্নিকা-ের সবচেয়ে বড় ঘটনা। এর চেয়েও ভয়াবহ আকার নিয়েছে রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির কারখানার ঘটনাটি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে কারখানা ভবন থেকে লাফ দিয়ে নামার সময় তিনজনের মৃত্যু হয়। গতকাল উদ্ধার করা হয় আরো ৪৯ জনের মরদেহ। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ পাহারায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনা তদন্তের জন্য পৃথক তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ভুলতা ইউনিয়নের কর্নগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের জুস তৈরির কারখানায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের কাঞ্চন, ডেমরা, আদমজী, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ স্টেশনের ১৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এ সময় আগুন নেভানোয় ধীরগতির অভিযোগ তুলে কারখানার শ্রমিকদের স্বজন ও এলাকাবাসী ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধরা গণমাধ্যমের গাড়িসহ বেশকিছু যান ভাঙচুর করে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, কারখানার ভেতরে প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নেভাতে দেরি হয়েছে। গত রাতে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, ছয়তলা ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আগামীকাল (আজ) সকালের মধ্যে তল্লাশি কার্যক্রম শেষ হবে। সেখানে আর কারো মরদেহ আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার পর উদ্ধার অভিযান শেষ হবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ২ লাখ করে ও আহত শ্রমিকদের ৫০ হাজার করে টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি নিহতদের পরিবার যাতে মালিকপক্ষের কাছ থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায়, সেটিও নিশ্চিত করা হবে বলে এ সময় জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া স্থানীয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দাফনসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য ২৫ হাজার টাকা ও গুরুতর আহতদের পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ছয়তলা ভবনটিতে প্রায় ২০০ শ্রমিক কাজ করতেন। ভবনের নিচতলায় প্রচুর পরিমাণে ফয়েল পেপার বা রাঙতা কাগজের কয়েল ছিল। সিঁড়ির নিচে স্তূপ করা ছিল কার্টন ও পুরনো কাগজ। নিচের তলায়ই একটি কক্ষে ছিল বড় আকৃতির বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার। দ্বিতীয় তলায় বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন ও মোড়কজাত করা হতো। তৃতীয় তলায় দুটি হিট মেশিন ছিল। মেশিন দুটিতে প্লাস্টিক গলিয়ে উৎপাদিত পণ্যের মোড়ক তৈরি হতো। চারতলার উত্তর দিকে ছিল বিশালাকৃতির দুটি স্টোর রুম। এছাড়া ছয়তলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরেই ছিল দাহ্য ও রাসায়নিক পদার্থের বিপুল মজুদ।

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক আবুল কাশেম জানান, নিচতলার সিঁড়ির পাশের কার্টন থেকে আগুনের সূত্রপাত। দ্রুত তা ওপরের দিকে উঠতে থাকে। উপায় না পেয়ে অনেক শ্রমিক নিচে নামতে না পেরে ভবনের সামনের অংশের শাটার ভেঙে লাফিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করেন। এ সময় অনেকে আহতও হন। আগুন লাগার প্রায় ২২ ঘণ্টা পর পাঁচতলা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভবনটি ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ফ্লোরেই যন্ত্রপাতিসহ সব ধরনের পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চতুর্থ তলার চিত্র ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। ফ্লোরজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল শ্রমিকদের মরদেহের অংশবিশেষ, কর্মীদের ব্যাগ, পায়ের জুতা ও স্যান্ডেল। এ ফ্লোর থেকেই সবচেয়ে বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন ও স্থানীয়রা। গতকাল সকালে তারা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। ভাঙচুর করা হয় বেশকিছু গাড়ি। কারখানার ফটকসংলগ্ন আনসার ক্যাম্পেও হামলা চালানো হয়। এ সময় ছিনিয়ে নেয়া হয় তিনটি শটগান। পরে এর মধ্যে দুটি উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, স্থানীয় উৎসুক জনতা কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো পুলিশি পাহারায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফায়ার ব্রিগেডের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান জানান, উদ্ধার হওয়া বেশির ভাগ মরদেহ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে স্বজনরাও সেগুলো দেখে চিনতে পারছেন না। তাই এগুলোর ডিএনএ টেস্ট করা হবে। এরপর তা স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, কারখানার মালিক যেন বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য বিমানবন্দরসহ অন্য বন্দরগুলোকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় এক বা একাধিক মামলা হবে। যদি শিশু শ্রমিক নিয়োগের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে সে আইন অনুযায়ী আলাদা মামলা হবে। গত রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কারখানার ফটকের সামনে নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনদের অনেকেই অপেক্ষমাণ ছিলেন। নিখোঁজ স্বজনের খবরের অপেক্ষায় কারখানার ফটকেই অবস্থান নিয়েছিলেন তারা। স্বজনের খোঁজ মেলার আগ পর্যন্ত বাড়ি ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন তারা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, মর্গে নিয়ে আসা ৪৯টি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে ২৬ জন স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মরদেহগুলো গুরুতরভাবে পুড়ে যাওয়ায় সেগুলো দেখে আর শনাক্ত করার উপায় নেই। এ কারণে স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। নমুনা সংগ্রহের পর ডিএনএ পরীক্ষা ও পরিচয় নিশ্চিতের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরো ২০ দিনের মতো সময় লাগতে পারে। হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি হওয়া সাত শ্রমিকের মধ্যে তিন নারী এখনো চিকিৎসাধীন। বাকিরা ছাড়া পেয়েছেন।

 




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com