মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বরিশালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সর্বজনীন পেনশন মেলার উদ্বোধন শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ ফটিকছড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত ও অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ইউএনও মোজাম্মেল হক চৌধুরী কিশোরগঞ্জে শহীদ পরিবারের জায়গাজমি জবরদখল বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ নিরাপদ সড়ক চাই দাউদকান্দি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা টমেটো চাষে কৃষক ফিরোজের বাজিমাত, ঝুঁকছেন অন্য কৃষকরাও দাউদকান্দিতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৫ সদস্য গ্রেফতার তৃতীয় দিনের মতো চলছে সুন্দরবনের আগুন নেভানোর কাজ বাড়ির ভিতর স্বল্প পরিসরে মাছচাষে তিনগুণ লাভে খুশি মাছচাষী শরীয়তপুর সদর উপজেলাকে একটি আধুনিক উন্নত মডেল রূপে গড়ে তুলবো-উজ্জ্বল আকন্দ

কারও সামান্য ত্রুটি থাকলেও ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুসের কারখানায় আগুনের ঘটনায় যে-ই দায়ী থাকুক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, সারা বাংলাদেশ এ ঘটনায় স্তব্ধ। আগুনের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, চার ছেলেসহ শীর্ষ আট কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সামান্য ত্রুটি থাকে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।
গতকাল শনিবার (১০ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় আগুনে পোড়া রূপগঞ্জের হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের জুস কারখানাটি পরিদর্শনে গিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, এখানে কতজন লোক কাজ করছিলো, তারা কী করছিলো? তা তদন্তে বের হয়ে আসবে। তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্তের পর আমরা বলতে পারবো কী ঘটেছে। যা-ই ঘটেছে এটা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা। যারা মারা গেছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। যারা চিকিৎসাধীন আছেন তারা যাতে সুস্থভাবে ফিরে আসেন, আল্লাহর কাছে সে দোয়া করি। সরকারিভাবে যে সহযোগিতা করার কথা ছিলো জেলা প্রশাসক করেছেন। আমরা এরপরও আরও কী করা যায় তা দেখবো।
ঘটনার মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, হত্যা হয়েছে, মামলা হবেই। মামলা হবে, তদন্ত হবে, যারা এর সঙ্গে সামান্য জড়িত তাদেরও আইন অনুযায়ী বিচার হবে। প্রতিষ্ঠানে শিশুশ্রম প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শিশুশ্রমিক ছিলো কি-না, থাকলে কতজন ছিলো সে বিষয়ে তদন্ত রিপোর্টের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, ডিসি, ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে এখানে এসেছে। তাৎক্ষণিকভাবে এসে তারা অনেককে জীবিত উদ্ধারও করেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। এখানে ভবন নির্মাণে কোনো ত্রুটি ছিলো কি-না, শ্রমিকদের পরিচালনার ত্রুটি থাকতে পারে, শিশুশ্রমিক ছিলো কি-না, এসব তদন্তের পরে জানা যাবে। আমি আবারও বলছি, কারও যদি সামান্য ত্রুটি থাকে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ মনে করে, তাদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। তাই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল হাসেম, আবুল হাসেমের চার ছেলে সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিব বিন হাসেম (সজিব), পরিচালক তারেক ইব্রাহীম (সতেজ), পরিচালক তাওসিফ ইব্রাহীম (শীতল), পরিচালক তানজিম ইব্রাহীম; প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, ব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, অ্যাডমিন সালাউদ্দিনকে এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। অগ্নিকা-ে ৫২ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় ফায়ার সেফটি না থাকা, ভবন নির্মাণে ত্রুটি, ভবনে ওঠানামার জন্য সিঁড়ি কম থাকা, চারতলার কলাপসিবল গেট ঘটনার সময় আটকে রাখাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে ফায়ার সার্ভিস বলেছে, ভবন নির্মাণের ত্রুটি, সেফটি স্বল্পতা, সিঁড়ি না থাকা এবং কারখানায় শ্রমিকদের কাজের জায়গা, পণ্য মজুত ও রাসায়নিক দ্রব্যের মজুত একই ফ্লোরে রাখার কারণে প্রতিটি ফ্লোরে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটি মালিকপক্ষের ইচ্ছাকৃত গাফিলতি, এ কারণে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসন ফায়ার সার্ভিসসহ তিনটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। এ কমিটিগুলো যেসব সুপারিশ দেবে তা আমলে নিয়ে এবং পুলিশ নিজস্বভাবে তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। প্রয়োজন হলে আরও একাধিক মামলা হবে। শিশুশ্রমের বিষয়টি তদন্তে উঠে এলে আলাদা মামলা হবে। প্রসঙ্গত, রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানার ছয়তলা ভবনটিতে তখন প্রায় ৪০০-এর বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে। প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শুক্রবার (০৯ জুলাই) দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরপরই তিনজন নিহত হয়। সবমিলিয়ে, এ পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানায় আগুনের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনা তদন্তে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com