উত্তরে ৯ কিলোমিটার, দক্ষিণে ০ কিলোমিটার, পূর্বে ১৪ কিলোমিটার আর পশ্চিমে ০ কিলোমিটার, রয়েছে ভারত সীমান্ত, এই হলো দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার সীমানা, যার মোট আয়তন ৯৯.৯২ বর্গকিলোমিটার। উপজেলায় তিনটি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা এবং রয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর স্থলবন্দর। যে বন্দর থেকে সরকার প্রতি বছর কয়েকশো কোটি টাকা আয় করে থাকে। ভারত সীমান্ত ঘেষে অবস্থিত এই বাংলাহিলি সীমান্ত, যেটি একেবারে দিনাজপুর জেলার দক্ষিণে অবস্থিত। আবার পশ্চিমে রয়েছে ভারত হিলি, আর এই ভারত হিলি দক্ষিণ দিনাজপুরে অবস্থিত। মাত্র তিনটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা এই উপজেলায়। এখানে আছে সরকারের আয়ের বড় একটি উৎস স্থলবন্দর। যেখানে রয়েছে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান, আর সরকার এখান পেয়ে থাকে কোটি কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থ বছরে থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছেন ৩৯৯ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রতিদিন ভারত থেকে ২০০ থেকে ২৫০ টি পণ্য বাহী ট্রাক এবন্দরে প্রবেশ করে। আবার ৮০০ থেকে ১০০০ দেশি ট্রাক বন্দর প্রবেশ। ৬০০ থেকে ৭০০ শ্রমিক কাজ করে এই বন্দরে। বন্দরে আছে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বন্দরে আছে অনেক আমদানি-রপ্তানি কারকরা, যাদের রয়েছে শহর জুড়ে অফিস এবং গোডাউন। এদের কাছে ভারতীয় পণ্য নিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে ছুটে আসে ব্যবসায়ীরা। হিলি সীমান্তে রয়েছে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট, যে চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ভারত-বাংলাদেশে ৮০০ থেকে ৯০০ পাসপোর্ট ধারী যাত্রীরা আসা-যাওয়া করে, এখান থেকেও সরকার অনেক টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে যাত্রী পারাপার বন্ধ রয়েছে। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে দুই দেশের যে সকল যাত্রীরা আটকা পড়ে ছিলো, কেবল মাত্র ঐসকল পাসপোর্ট ধারী যাত্রীরা নিজ নিজ দেশে যেতে পারছেন। হিলিত আছে আরনু জুট মিল, এখানেও হাজারের উপরে পুরুষ এবং নারী শ্রমিকরা কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এই উপজেলা, ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ছোট উপজেলায় রয়েছে একটি সরকারি মহিলা ডিগ্রী কলেজ, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি ডিগ্রী কলেজ, একাধিক সরকারি প্রাইমারি স্কুল এবং একাধিক উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। রয়েছে পুলিশ স্টেশন, ফায়ার সার্ভিস, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পশু হাসপাতাল, খাদ্য গোডাউন, এছাড়াও আছে রেলস্টেশন, যেটি এক সময় জংশন ছিলো। তবে বর্তমান নামমাত্রই স্টেশন, এখানে দাঁড়ায় না কোন ঢাকাগামী ট্রেন। ভোগান্তিতে পড়তে হয় ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট ধারী যাত্রী ও স্থলবন্দর ব্যবসায়ীদের। হাকিমপুর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মইনুল ইসলাম জানান, উপজেলায় সরকারি সুবিধাভোগীদের মধ্যে বয়স্ক ভাতার কার্ড ৩ হাজার ৫৬৮ জন, বিধবা ভাতার কার্ড ১ হাজার ৮৪০ জন এবং প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ১ হাজার ৪২০ জন পেয়ে থাকে। হাকিমপুর উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসার আবেদ আলী জানান, উপজেলায় মোট জনসংখ্যা ৯২ হাজার ৫৯৯ জন, পুরুষ ৪৭ হাজার ১৬১ জন, নারী ৪৫ হাজার ৪৩৭ জন। এর মধ্যে পৌরসভায় ২৮ হাজার ৪১১ জন, আলীহাট ইউনিয়নে ২১ হাজার ৯৭৪ জন,বোয়ালদাড় ইউনিয়নে ২২ হাজার ৮৬৬ জন এবং খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৩৪৬ জন বসবাস করে। উপজেলার সর্বমোট আয়তন ৯৯.৯২ বর্গকিলোমিটার।