ঢাকার অবস্থান স্পষ্ট করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ‘বাস্তুচ্যুত মানুষ’ হিসেবে দেখছে। বিশ্ব ব্যাংক (ডব্লিউবি) বিভিন্ন দেশে আশ্রয়গ্রহনকারী শরণার্থীদের একত্রিত করার জন্য একটি বৈশ্বিক কর্মসূচি ঘোষণার প্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন। তিনি গত সোমবার রাজধানীতে সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গারা এখানে শরণার্থী নয়… তারা নির্যাতিত এবং বাস্তুচ্যুত মানুষ…তারা অস্থায়ী ভিত্তিতে এখানে আশ্রয় নিচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা তার অবস্থানে অটল রয়েছে যে নির্যাতিত জোর পূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারের রাখাইনে তাদের মূল ভূখন্ডে ফিরে যেতে হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আমাদের অগ্রাধিকার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের একত্রিত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বরং ঢাকা বিশ্বাস করে তাদের ‘উন্নত ভবিষ্যৎ’ তখনই সম্ভব হবে যখন তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।
সম্প্রতি, ডব্লিউবি শরণার্থীদের আশ্রয়দানকারী ১৬টি দেশের জন্য ২০ বিলিয়ন টাকার একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, তার শরণার্থী নীতি পর্যালোচনা কাঠামোর অংশ হিসাবে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বিশ্বব্যাংক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে এই প্রস্তাব বিনিময় করে বলেছে যদি সরকার বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের নাগরিকের মতো সামাজিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের অধিকারের সঙ্গে একত্রিত করে তবে ঢাকা তাদের নতুন কর্মসূচি থেকে তহবিল পেতে পারে।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে ঢাকার অগ্রাধিকার দিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবের সঙ্গে কিছু সমন্বয় করা হতে পারে।
তিনি বলেন, যদি বিশ্ব ব্যাংক ঢাকার ‘প্রত্যাবাসনে (রোহিঙ্গা) আমাদের নিজস্ব অবস্থান’ এর সঙ্গে মিলে না এমন সমস্ত ধারণা বাদ দেয়ার প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয় তবে ডব্লিউবি ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলায় ১১ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের পর সেখান থেকে এসেছে। জাতিসংঘ একে ‘জাতিগত নিধনের সুস্পষ্ট উদাহরণ’ এবং একে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে।
গত প্রায় চার বছর মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হলেও একজন রোহিঙ্গাও এখন পর্যন্ত দেশে ফিরে যায়নি।