শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
বগুড়া শেরপুরে আগুনে পুড়লো পঁচিশ বিঘা জমির ভুট্টা ইসলামাবাদে ভোট কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন বীর মুক্তিযোদ্ধার নির্মাণাধীন দোকানে সন্ত্রাসী হামলা বাগেরহাট নানান আয়োজনে মে দিবস পালিত ভালুকা বিশেষায়িত পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন বরিশালে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভুট্টা মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকেরা, দ্বিগুণ লাভের আশা নগরকান্দায় অগ্নিকান্ডে চারটি দোকান ঘর ভস্মীভূত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে গণতন্ত্রের মুক্তি হবে না-কেন্দ্রীয় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার গলাচিপায় পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সভা ও জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ দিবস পালিত

রোহিঙ্গা আগমনের চার বছর: আলোর মুখ দেখেনি প্রত্যাবাসন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১

মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ফলে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি রাখাইন রাজ্যে থেকে বাংলাদেশে আগমনের ঢল নেমেছিল। এদিন থেকে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনের স্মৃতি বুকে নিয়ে বেঁচে যাওয়া মানুষজন এক মাসের মধ্যে প্রায় ৮ লাখ ১৯ হাজার ৭৮৭ জন রোহিঙ্গা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়।
বর্তমানে মিয়ানমার থেকে চার দফায় ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। ফলে দেশে রোহিঙ্গারা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ের চূড়ায় এসব রোহিঙ্গাদের অবস্থান।
যারা বেঁচে গেছে তাদের জন্য এটি ছিল এক যন্ত্রণাদায়ক যাত্রা। দীর্ঘ পথ হেঁটে পাহাড়, পর্বত, নদী ও সাগর পেরিয়ে তারা এদেশে এসেছে। এদেশে আসতে কারো কারো কয়েক দিন লাগলেও, অনেকের জন্য এক মাসেরও বেশি সময় লেগেছে। বাড়ি থেকে পালিয়ে আসার সময় সামনে জিনিষপত্র যা পেয়েছে সবই নিয়ে এসেছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থাসহ আশ্রিতদের মধ্য থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করেছে সরকার। তবে দুই দেশ কিছু রোহিঙ্গার স্বদেশে প্রত্যাবাসনে একমত হলেও রোহিঙ্গাদের নানা শর্তে তা আর আলোর মুখ দেখেনি। একে একে দ্বিতীয়বারের মতো প্রত্যাবাসনের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকার। কিন্তু শর্ত না মানার অজুহাতে দীর্ঘ চার বছরেও আলোর মুখ দেখেনি এ প্রক্রিয়া।
পুলিশের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গেল চার বছরের এই সময়ে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে হত্যা, গুমসহ নানা অপরাধে অন্তত ১ হাজার মামলা হয়েছে। তার মধ্যে চলতি বছর ছাড়া গেল তিন বছরে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিরুদ্ধে ১২ ধরনের অপরাধে কমবেশি ৭৩১টি মামলা হয়েছে। যাতে আসামি হয়েছেন ১ হাজার ৬৭১ জন রোহিঙ্গা। এসব অপরাধের মধ্যে আছে- অস্ত্র, মাদক, ধর্ষণ, অপহরণ, বিশেষ ক্ষমতা আইন, পুলিশ আক্রান্ত, ডাকাতি, হত্যা, মানব পাচার।
উখিয়া ও টেকনাফের সর্বত্র শরণার্থী শিবির। দুই উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ লাখ। অথচ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। যা স্থানীয়দের চেয়ে দ্বিগুণ। এছাড়া দিন যতই গড়াচ্ছে, রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়ছে অস্থিরতা। একই সঙ্গে বাড়ছে হত্যা, গুম, অপহরণসহ নানা অপরাধ। প্রতিদিন রোহিঙ্গাদের কাছে কোনো না কোনো সমস্যায় পড়ছেন স্থানীয়রা।
টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, মিয়ানমারের মিথ্যাচারের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা এখন বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাচ্ছে, এতে দেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। তবে রোহিঙ্গার তৎপরতায় নানা সঙ্কট তৈরি করলেও তাদের নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, একে একে চারটি বছর পার হচ্ছে তবুও একজন রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরানো যায়নি। এটা খুবই দুঃখজনক। সরকারের উচিত দৃশ্যমান কিছু করা। না হলে যে হারে রোহিঙ্গারা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে তাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে থাকবে এটা কিন্তু আমরা চাই না। বাংলাদেশ আমাদের বাড়ি নয়। চিরদিন বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে থাকতে চাই না। আমরা নিজ দেশে ফিরতে চাই।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বলেন, উখিয়া-টেকনাফে ৩৪টি শিবিরের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি কাজ করছে এপিবিএনের তিনটি ব্যাটালিয়ন। তবুও নিজেদের আধিপত্য নিয়ে যেসব সংঘাত বা হত্যাকান্ড ঘটছে তা দমনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে পুলিশ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com