রোহিঙ্গা সমস্যার পাঁচ বছরের মাথায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ধীরে ধীরে ইস্যুটির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। গতকাল বুধবার (২৫ আগস্ট) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত রোহিঙ্গাদের জন্য দায়বদ্ধতা বিষয়ক এক ওয়েবিনারে বক্তারা একথা বলেন। ওয়েবিনারে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’ বিষয়টিকে সবাইকে আবার মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি প্রস্তাব করেন যে ২৫ আগস্ট ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা দরকার, যাতে করে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ বৃদ্ধি পায়।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ও আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত খুঁজে পেয়েছে যে মিয়ানমার গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করেছে এবং আমাদের সবার উচিৎ রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে সেটি প্রকাশ্যে বলা, যাতে করে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রায় দশ হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ও আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত। এমনকি মিয়ানমার নেত্রী অং সান সূচি বলেছে, সংখ্যাটি এত বেশি না হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কিছু লোক মারা গেছে। বর্তমান চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তারা অনেকে এটিকে এখন বাংলাদেশের সমস্যা বলে মনে করে। সবার এখন একমত হওয়া দরকার রোহিঙ্গাদের যেন আর কোনও ক্ষতি না হয়।’ অস্ট্রেলিয়াতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সুফিয়ুর রহমান বলেন, এশিয়াতে অবস্থার পরিবর্তন অত্যন্ত দ্রুত হচ্ছে এবং এ প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারের সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। মিয়ানমার মিলিটারি ও বামার জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয় তবে এ সমস্যার জটিলতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন। কানাডা থেকে যোগ দেওয়া রোহিঙ্গা নারী জায়নাব বলেন, ভূ-রাজনীতির শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গারা। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন প্রত্যাবাসন হচ্ছে না কারণ তারা মিয়ানমার সরকারের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছে না। যদি রাখাইনের রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়, তবে আমরা আশ্বস্ত হবো।