বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আয়তনের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন সিটি মেয়র আলহাজ্ব এড. জাহাঙ্গীর আলম। মেয়র বলেছেন, বাংলাদেশের অন্য যে কোন সিটি কর্পোরেশন থেকে এ বাজেট সবচেয়ে বড়। রোববার(২৯ আগষ্ট) সকাল ১০টায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাছা আঞ্চলিক অফিসে এক অনারম্বর অনুষ্ঠানে এই বাজেট ঘোষণা করেন। বাজেটের উদ্বোধনী ভাষনে গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সবচেয়ে বড় বাজেট এবার ঘোষণা করা হলো। এই বাজেটের আয়তন ২০ হাজার ৯ শত ৮৬ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। ২০১৮ সালে মেয়র জাহাঙ্গীরের প্রথম বাজেট ছিল ২৪০ কোটি টাকা। বাজেট বক্তৃতায় মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে গাজীপুর সিটিতে কোন মাস্টার প্ল্যান ছিলনা । এবারই প্রথম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নির্দেশে ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি মহোদয়ের তত্বাবধানে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। বিভিন্ন দাতা সংস্থা, সরকার ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন বাজেটের এই অর্থ যোগান দিবে।
মেয়র বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে ১০টি অঞ্চলে ১০টি খেলার মাঠ ও ১০টি পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে। রাজেন্দ্রপুর থেকে টঙ্গী ও পুবাইল পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার ১২ লেনের রাস্তা নির্মাণ হবে। এই রাস্তা রেল লাইনের উপর ৫টি ফ্লাইওভার গড়ে তুলা হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশন এলাকার খাল ও নদী খনন করে স্থায়ীভাবে বন্যা প্রতিরোধ করা হবে। মেয়র বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সকল নাগরিক নিরাপদে রয়েছেন। আগস্ট মাসের পর বেকারত্ব দূরিকরণে মহানগরের বেকার মানুষদের চাকুরী ও ব্যবসার মাধ্যমে বেকারত্ব সমস্যার সমাধান করা হবে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে মেয়র বলেন, ২০১৮ সালে যে কমিটমেন্ট দিয়েছিলাম তার চেয়ে বেশি বাস্তবায়ন করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী গ্রামকে শহর করার কাজ করছি। অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করায় আমার লক্ষ। চলমান মহামারিতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রতিদিন ৩৪ হাজার ডোজ টিকা দেয়া হচ্ছে বলে মেয়র জানান। গাজীপুর মহানগরের জনগনের সেবায় ৪ শত বলান্টিয়ার কাজ করছে। এদের বেতন-ভাতা সরকারিভাবে দেয়া হচ্ছেনা। ব্যাক্তি উদ্যোগে এদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর সময় মুশতাক ছিল বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সময়েও মুশতাক আছে। আমাদের ভবিষ্যতেও মুশতাক থাকবে। আমি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত মেয়র আমার সময়েও বিরোধী দল থাকবে। তাই সমালোচকদের সমালোচনার মুখে আমাদের সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে। মেয়র ও কাউন্সিলর পরস্পর একই দায়িত্ব পালন করে। তাই যে কোন সমালোচনায় মেয়র কাউন্সিলরদের সতর্ক থাকা উচিৎ। বাজেট বাস্তবায়নে মেয়র সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন। মেয়র বলেন, কোন কিছুই গোপন নয় প্রকাশ্যে করা হবে। প্রতিটি কাজ করার পূর্বে সাংবাদিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হবে। সাংবাদিক ও সুশিল সমাজ সহ সংশ্লিষ্ট সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। চলমান সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান কিছু রেখে যেতে চাই। টঙ্গী গাজীপুর চৌরাস্তা মহাসড়কের বেহাল দশা সম্পর্কে তিনি বলেন, এর দায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নয় । সড়ক ও জনপদ বিভাগ এর পুরো দায় বহন করবে। কারণ সওজ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাথে কোন আলোচনা করেনি। তাদের বারবার ডাকলেও সাড়া দেয়নি। এই মহা সড়কে লক্ষ কোটি মানুষের দূর্ভোগের জন্য মেয়র কাউন্সিলর কেউ দায়ী নয় বলে দাবি করে মেয়র বলেন, এখনো সময় আছে আলোচনা করলে এই সমস্যা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ সমাধান করা সম্ভব। বাজেট অনুষ্ঠানে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উর্ধতন কর্মকর্তা, কাউন্সিলর,রাজনৈতিক, সুশিল ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।