গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার, রায়েদ, বড়হর, সিংহশ্রী সহ কয়েকটি ইউনিয়নে সংরক্ষিত সরকারি বন থেকে অবাধে উজাড় হচ্ছে গাছ। এতে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। অভিযোগ রয়েছে বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই প্রতিনিয়ত বন থেকে গাছ কাটছে এক শ্রেণির মানুষ। তবে বরাবরের মত জনবল স্বল্পতার দোহাই বন বিভাগের। অথচ রাতের আঁধারে অবৈধভাবে গজারী গাছ কাটছে দেদারসে। বন কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও নিরবতায় স্থানীয় বন খেকো চক্রের সরব দাপটে বন তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গড়ে তোলা হয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সংরক্ষিত বনে প্রবেশ নিষেধ হলেও জ্বালানি কাঠ ও পাতা সংগ্রহের দোহাই দিয়ে সুযোগ বুঝে গাছ কেটে সাবাড় করছে। এছাড়া স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘদিন যাবত রাতের আধারে গজারী গাছ কেটে পাচার করছে। প্রতিনিয়তই যে বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা হয় তার ছাপ পড়ে আছে পুরো বন জুড়ে। বনে যেয়ে দেখা গেছে সদ্য কেটে নেয়া গাছের গোঁড়া ও কাটা গাছ পড়ে আছে বিভিন্ন স্থানে। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে বন কর্তারা বনাঞ্চলে আসলেও রহস্যজনক কারনে দায়সারা ভূমিকা রেখে চলে যায়। বিশাল এলাকাজুড়ে বনবিভাগ সামলানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবল না থাকায় পুরোপুরিভাবে বন দেখাশোনা করা সম্ভব হয় না বলে জনৈক কর্তাদের অজুহাত। এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন যাবত এসব অপকর্মের হোতারা উপজেলার বিভিন্ন সরকারী গজারী বন থেকে রাতের আঁধারে হাজার হাজার গাছ কেটে বন উজাড় করে অন্যত্র পাচার করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক বন কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় বন কর্মকর্তাদের ও প্রভাবশালী মহলের ছত্র ছায়ায় এই বন খেকোরা দীর্ঘদিন যাবত সরকারী বন থেকে রাতের আধারে অবৈধ গজারী গাছ কেটে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করছে বলে জানাযায়। সংশ্লিষ্ট শ্রীপুর রেঞ্জ অফিসার অতি সম্প্রতি রাতের আঁধারে অবৈধভাবে পাচারের সময় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক গজারি বলি জব্দ করেন। এ ব্যাপারে গোসিংগা বিট অফিসার মনিরুল করিম জানান, আটককৃত গজারী কাঠের বৈধতা যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিপূর্বে বেশকিছু গজারী গাছ পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করে উদ্ধারের পর আইনগত কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের কোন সদোত্তর দিতে না পেরে এড়িয়ে যান। ভূমি ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা অনুযায়ী একটি দেশের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার। বন বিভাগের দাবী বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ ১৭ শতাংশ। সে হিসেবে এখনও ৮ শতাংশ বনভূমি দরকার এ দেশে। তবে নতুন করে বনায়ন দুরের কথা যা আছে তা রক্ষায়ও উদাসীন বন বিভাগ।