১৪০ কোটি টাকা ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে যাত্রা শুরু হওয়া গাজীপুর সিটির বর্তমান বাজেট প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে নগরে চলছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড। আগামীতে অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে ১৭০ ফুট প্রস্থের ১২ লেইনের ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ অত্যাধুনিক রিং রোড নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে, যাতে ব্যয় হবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। নগরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নগরবাসীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্যও কাজ চলছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে কোন মাষ্টার প্ল্যান না থাকা গাজীপুর সিটি এখন স্থায় মাষ্টার প্ল্যানে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে পাল্টে গেছে গাজীপুর মহানগরের দৃশ্যপট। বর্তমান মেয়রের প্রথম মেয়াদের আজ তৃতীয় বর্ষপূর্তি। এই দিনে গাজীপুর মহানগরকে বিশ্বের মধ্যে একটি রোল মডেল করার স্বাপ্ন দেখছেন সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, মহামারি করোনা কিংবা লকডাউন যে ধরনের পরিস্থিতিই হোক না কেন ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকামার গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় দৃশ্যপট পাল্টে যাচ্ছে। সবুজ শ্যামল গ্রাম গড়ে উঠছে আধুনিক শহর হিসেবে। অচিরেই গাজীপুর হবে দেশের অন্যতম পরিকল্পিত নগরী। একটি পরিকল্পিত সবুজ মহানগর। যোগাযোগ ব্যবস্থায় সড়ক উন্নয়ন দৃশ্যমান হওয়ায় আনন্দিত নগরবাসী। গাজীপুর সিটির প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় একের পর এক পিচঢালা রাস্তা তৈরি হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা থেকে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প ডিপিপি ও দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে। এরমধ্যে প্রায় অর্ধেক প্রকল্পের কাজই দৃশ্যমান হয়েছে। বাকি কাজগুলোও অচিরেই সমাপ্ত হবে। সিটি করপোরেশনের ৫৭ ওয়ার্ডেই সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, পানি নিষ্কাশনের ড্রেন, খাল খননের কাজ একযোগে চলছে। করোনাকালে এমনকি লকডাউনের সময়ও সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কাজ থেমে নেই। চলমান রয়েছে পুরোদমে। সিটির অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উল্লেখযোগ্য সড়ক উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে মাজুখান-জয়দেবপুর, বনমালা-জয়দেবপুর, জয়দেবপুর-ভানুয়া-পাজুলিয়া, জয়দেবপুর-টাকশাল-চতর, চতর-পোড়াবাড়ি, সালনা-কাউলতিয়া, কোনাবাড়ি-কাশিমপুর, ভোগড়া-নাজোড় সড়ক। জেলা শহরের সঙ্গে সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বহু বছরের বাধা পেরিয়ে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক টঙ্গী- বনমালা- গাজীপুর সড়ক। নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩০ ফুট থেকে ৬০ ফুট প্রস্থ নতুন নতুন সড়ক নির্মাণ করায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। নগরের গ্রামীণ মেঠোপথ হচ্ছে পিচঢালা রাজপথ। জয়দেবপুর-পাজুলিয়া সড়কের কাজ মাত্র দেড় মাস হলো শেষ হয়েছে। সড়কটিতে কিছুদিন আগেও পাশাপাশি দুইটি রিকশা চলাচল করতে অসুবিধা হতো। এখন দুইটি বাস যেতে পারবে স্বাচ্ছন্দ্যে। তারপর দুই পাশে ফুটপাথের জন্য তিন ফুট করে রয়েছে চলার পথ। সবুজের মাঝে পিচঢালা রাজপথ গ্রামের মানুষের জীবন জীবিকায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। সড়ক চওড়া হওয়ায় জমির দাম বাড়ছে। নতুন নতুন মিল কারখানাও তৈরি হচ্ছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও আসছে অনেকের জীবনে। মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গাজীপুরকে সব শ্রেণির মানুষের জন্য একটি বাসযোগ্য পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তুলতেই কাজ করছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে আগ্রহ রয়েছে গ্রামগুলো শহরে পরিণত হবে, সেভাবেই আমরা গাজীপুরে কাজ শুরু করেছি। বিগত ৪০/৫০ বছরে এই অঞ্চলে যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে তার চেয়ে বেশি উন্নয়ন হচ্ছে বর্তমান সময়ে। বর্তমানে নগরে চলছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড। আগামীতে আরও অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে ১৭০ ফুট প্রস্থের ১২ লেইনের ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ অত্যাধুনিক রিং রোড নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। যাতে ব্যয় হবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। নগরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নগরবাসীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্যও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পরিকল্পিত গাজীপুর হবে দেশের অন্যতম গ্রিন ও ক্লিন সিটি। সেই লক্ষ্যেই চলছে নগরের উন্নয়ন। আমাদের এই এগিয়ে যাওয়ার পথে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।