কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে একটি সরকারি নালায় বাঁধ দিয়ে মাটি ভরাট করে ঘরবাড়ি ও পুকুর নির্মাণ করায় প্রায় সাতশো একর ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। স্থায়ী জলাবদ্ধতায় এসব জমিতে আমন ও বোরো ধানের চারা রোপন করতে পারছেন না প্রায় দুই শতাধিক কৃষক। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। এলাকাবাসী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারীয়া ও নলেয়া মৌজার কুড়ার পাড়, শর্ষার ডারা ও মরা দুধকুমার এলাকার বৃষ্টির পানি সলক ডারা (নালা) দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দুধকুমার নদে যেতো। সলকের ডারাটি সরকারী খাস জমি। অভিযোগকারীদের একজন কৃষক আনিছুর রহমান জানান, ‘মৃত দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি সলকের ডারার কিছু অংশ লিজ নেন। পরবর্তীতে তিনি ওই জমি মজিবর, হেকমত ও মোতালেবের নিকট বিক্রি করেন। তারা জমি ক্রয় করে নালা ভরাট করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করেন।’ শুধু তাই নয়, অপর একটি প্রভাবশালী মহল মরা দুধকুমার নদের মাথায় নিজস্ব জমিতে পুকুর খনন করায় গোটা এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিস্তৃর্ণ কৃষি জমি কয়েক ফুট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। এতে ওই এলাকার কৃষকরা প্রায় ৭শ’ একর ফসলি জমিতে আমন ও বোরো ধান চাষ করতে পারছেন না। সলকের ডারার জমি ক্রেতা মজিবর, হেকমত ও মোতালেব জানান, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবত এখানে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছি। এই এলাকার পানি আগে মরা দুধকুমার নদ দিয়ে চলে যেত। মরা নদের মুখে একটি পুকুর করায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।’ কৃষক সুলতান, আব্দুল হাকিম ও নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অত্র এলাকার পানি নিস্কাশনের একমাত্র নালাটিতে বাঁধ দিয়ে ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ ও পুকুর করায় চলতি মৌসুমে আমন চারা লাগাতে পারি নাই। আবাদ না হলে খাবো কি? সেই চিন্তাই করছি।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ছাড়া সৃষ্ট সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মা জানান, ‘একজন কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে এখনো তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।’