রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জামালপুর জেলার তিন হাজার প্রান্তিক পরিবারকে উন্নত আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে উপভোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে ইসলামপুরে সিডস কর্মসূচির অবহিতকরণ সভা কে হচ্ছেন নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কেশবপুরে সংবাদ সম্মেলন চিলাহাটি প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক মেয়াদের কমিটি গঠন বদলগাছীতে কৃষকের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ উলিপুরে ইউড্রেনের দুই পাশের সংযোগ সড়ক হওয়ায় এলাকাবাসী আনন্দিত কালীগঞ্জে সরকারি স্থান থেকে ফুলের হাট স্থানান্তর: বিপাকে প্রতিবন্ধী ইজারাদার পিআইবি,র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলো নগরকান্দা ও সালথার সাংবাদিক বৃন্দ গজারিয়া স্বপ্নপূরণে ছেলেকে হেলিকপ্টারে বিয়ে করালেন স্কুলশিক্ষক বাবা বরিশালে প্রচন্ড তাপদাহে বাড়ছে তালপাখার চাহিদা

শরৎ কালের শোভা কাঁশফুল ফুটেছে

মাসুম মাহমুদ সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১

শরৎ কালের বাতায়নে ফুটেছে কাঁশফুল। শরৎত কালের ঋতুতে বাংলাদেশের নদ-নদী ও খালবিল হাওড়ে ঘেষে উঠা মরুভুমির এই রোদ, এই বৃষ্টি, মেঘমুক্ত আকাশ দেখে হয়তো বাইরে বেরিয়েছেন, দেখতে দেখতেই হতে পারেন কাকভেজা। পরক্ষণেই মেঘের কোলে হেসে উঠছে তিরতিরে রোদ। প্রকৃতির এ এক মধুর খামখেয়ালিপনায় আকাশের দিকে তাকালে তা টের পাওয়া যায় বটে। কখনো নীলাভ, কখনো বা পেঁজা তুলার মতো শুভ্র। এ তো গেল আকাশের চিত্র। জমিনেও তার রহস্যময় কত মাধুরী! এই হচ্ছে শরৎকাল, স্বভাবে যেন চপল ও খেয়ালি। কখনো রৌদ্র দহন, কখনো বা আচমকা বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দেওয়া। মেঘ-রৌদ্রের লুকোচুরি খেলা, খেলতে খেলতেই ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে তার অমল ধবল দিন। প্রকৃতির এ রূপ সমাগত। আজ বুধবার, বাংলা ১৪২৬ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসের মধ্যবতি দিন। ঋতুপরিক্রমায় এখন ফুটবে শরতের স্নিগ্ধ ও প্রশান্ত রূপ। প্রতিটি ভোর আসবে ঝরেপড়া শিউলির সৌন্দর্য গাঁয়ে মেখে রোদ্র। ঋতুচক্রে সব থেকে স্নিগ্ধ ও কোমল হচ্ছে এই শরৎকাল। তার আকাশ নীল নির্মল। শিমুল তুলার মতো ভেসে বেড়ায় মেঘেদের দল। এ দেখেই বুঝি কবিগুরু বলেছিলেন, ‘অমল ধবল পালে লেগেছে মন্দ মধুর হাওয়া…’। শরতের পরমায়ু দুই মাসের। ভাদ্রে সূচনা, আশ্বিনে পরিপূর্ণতা। শ্রাবণ শেষে আগমন ঘটেছে এই ঋতুর। তবে বর্ষা শেষ হলেও শরতেও দেখা মেলে রিমঝিম বৃষ্টির। এ সময় কালো মেঘ কেটে গিয়ে সুনীল আকাশে ভেসে বেড়াবে পুঞ্জ পুঞ্জ সাদা মেঘ। ওই সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে নদীতীরে ফুটে ওঠে আরেক শুভ্রতা। মৃদুমন্দ হাওয়ায় লুটোপুটি খাবে কাশবন। শুভ্র কাশের আঁচল উড়িয়ে, কণ্ঠে শিউলি ফুলের মালা দুলিয়ে শরৎ আসে প্রকৃতির রঙ্গমঞ্চে। শুধু কি কাশগুচ্ছ আর শিউলির সৌন্দর্য? এ সময় মাঠে মাঠে দেখা যাবে সবুজ ধানক্ষেতের নয়নাভিরাম দৃশ্য, ধানের শীষে ফুটে ওঠা আগামী দিনের ফসলের হাসি। পানিতে ফোটা শাপলা-পদ্ম, ডাঙায় ফোটা শিউলি-জুঁই আর নীলাকাশ মিলে প্রকৃতি ভরে উঠবে অপরূপ ও মাধুর্যে। শরৎতের জ্যোৎস্নার মতো নির্মল স্বচ্ছ জ্যোৎস্না অন্য ঋতুতে মেলা ভার। শারদীয় পূর্ণিমার খ্যাতি ব্যাপক। নির্মেঘ আকাশ, বর্ষাধৌত প্রকৃতি যে অপরূপ সৌন্দর্য সৃষ্টি করে তার তুলনা অন্য ঋতুতে মিলবে না। তাইতো এ দেশের শরৎকালীন সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন বাঙালি কবি ও লেখকরা। শরৎকালের নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া বাঙালির বড়ই প্রিয়। তাই প্রকৃতির মতো মানুষের মনও প্রশান্তি পায় শরৎকালে। এ মাসেই অনুষ্ঠিত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর তা উপলক্ষ করে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে বাঙালি মাতবে অনাবিল আনন্দে। তার সৌন্দর্যে গ্রাম বাংলার মানুষকে আনন্দে আনন্দিত করেন। দক্ষিনা বাতাসে তার অঙ্গ থেকে কিছু ক্লোন আকাশে বাতাসে উড়তে থাকে। কবি সাহিত্যবিদরা চেয়ে থাকে তার কাছ থেকে কিছু লিখার অপেক্ষায়, এক এক জন এক এক ভাবে তার উপলব্দি অবলম্বন করে তার কাছ থেকে কিছু লেখার জন্য। শত শত বছর ধরে এই কাশফুল আমাদের দেশের সৌন্দর্যকে আরো সুন্দর করে সাজিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে থাকে। যদিও এ কাশফুলে কোন সুগন্ধ নেই। তার পরেও গ্রাম বাংলার মানুষ বিকেলে কাশফুলের ছায়াতলে সামনে বসে গল্প আড্ডায় মেতে উঠেন। বিশেষ করে কাশফুল শরৎ ঋতুতেই বেশি হয়ে থাকে, শীতের সময়ও কিছু কাশফুল ফুটে থাকে, এই কাশফুলকে নিয়ে শিল্পিদের গানের ভাষায় উচ্চারিত হয়ে থাকে। কাশফুল কাশফুল আঁকা আনমনে বাকা ছবিগুলি ছুয়ে থাকে প্রিয়া তুমি আমারি…প্রিয়া তুমি আসবে কখন বল আমারে। আজি আমার অভিলাশ, নীলচরে এসো, হৃদয় খুলে ঘাস ফুলে, নিশি বেলা বসো, ভোরে যেথা সমিরন, রহে উরে উরে, কাশবন দেবে ওগো, প্রতাভার গুরু, হে খোদা বলি যে সদা বাঁচি যতদিন, নীলচরে যেনো মরে, রহি আমি খন। তা ছাড়া হিন্দু ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীও পালন করে নানা ব্রত ও আচার। ভাদ্রের ভাপসা গরমে পাকে তাল। গ্রামবাংলার বাড়িতে বাড়িতে হবে তালের পিঠা। আর এই পিঠাকে উপলক্ষ করেও উৎসবে মাতবে গ্রামবাসী। শরতের মনভোলানো প্রকৃতিতে মন যে কী চায় তা বোঝা ভার! রোদ আর বৃষ্টির লুকোচুরি খেলায় মনেও যেন জমে মেঘ, আবার কখনো প্রকৃতি হয়ে ওঠে রৌদ্রকরোজ্জ্বল। কিন্তু ব্যস্ত এ নগরীতে, শত ব্যস্ততার মাঝে আমরা পারি না মনকে শরতের রঙে সাজাতে। বাস্তবতা হলো, শরতের এই রূপবৈচিত্র শহরে যেন অনেকটাই অনুপস্থিত। হবেই না কেন, ইট-কংক্রিটের জঙ্গলে সে তো বেমানান। শরৎ উপভোগ করতে হলে, তাকে দেখতে, জানতে ও অনুভব করতে হলে যেতে হবে মাটির কাছাকাছি, নদীর কাছাকাছি। কেননা সেখানেই যে সৌন্দর্যের ডালা সাজিয়ে সংসার পাতে নির্মল শরৎ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com