দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের আমেজ। উপজেলার সনাতন ধর্মলম্বীদের সর্বত্রই শুরু হয়েছে দুর্গাৎসবের ঘনঘটা। দেবী দূর্গাকে স্বাগত জানাতে মন্ডবগুলোতে সাজসাজ রব। আশ্বিন মাসের শুক্লা ষষ্ঠী থেকে শুক্লা নবমী পর্যন্ত দেবী দুর্গার পূজা হয়ে থাকে। দেবী দুর্গার সঙ্গে মর্ত্যে আসেন বিদ্যার দেবী সরস্বতী, ধন ও ঐশ্বর্য প্রদায়িনী দেবী লক্ষ্মী, সিদ্ধিদাতা গণেশ ও কার্তিক। ঊর্ধ্বে অবস্থান করেন দেবাদিদেব মহাদেব। শাস্ত্রমতে মহাষষ্ঠীর এই দিনটিতেই মা দুর্গার তাঁর সন্তানদের নিয়ে মর্ত্যে আগমন ঘটে। দুর্গার আগমনী বার্তা যেন শান্তির বাণী নিয়ে আসে। হিন্দু ধর্মমতে, মঙ্গলময়ী মা ধরাধামে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেন। সংকল্প করার নামই ষষ্ঠী। দেবীকে আহ্বান ও বিল্ব বৃক্ষের সমীপে আসনে মঙ্গল ঘট স্থাপন করার নাম ষষ্ঠী মা স্বর্গের থেকে আহ্বান করে মর্ত্যধামে আনয়ন করার নাম ষষ্ঠী। অধিবাস শব্দের অর্থ দেবী দুর্গা ও তার ভক্তদের সঙ্গে মিলনের নামে অধিবাস। বোধন নিদ্রাগত মা, দুর্গাকে মন্ত্র পূত করার নামই বোধন। সপ্তমী শব্দের অর্থ সারদের শুভলগ্নে, স্বর্গ থেকে মর্ত্য ধামের কোনো মন্দিরে বেদের আচরণে প্রাণ, প্রতিষ্ঠ করার নামই সপ্তমী। অষ্টমী কুমারী শব্দের অর্থ কু-কর্ম পরিত্যাগ করে সুন্দর কর্মে রত হয়ে মা দুর্গার চরণে অর্চনা পুজন বন্ধন। বেদের আচরণ করতে পারলে কুমারী নামে খ্যাত হয়। অষ্ট পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মায়ের চরণে শরণ লওয়ার নামে অষ্ট এই পূজার কুমারী পূজা হয়। অষ্টমী শেষে নবমীর সন্ধিক্ষণে মা দুর্গার সঙ্গে ভক্তে সম্পর্ক হয়। দশমী শব্দের অর্থ দশভুজা মা ভগবতী দুর্গা দেবী দশ হাতে ভক্তদের অভয় বাণী আশীর্বাদ দিয়ে আবার স্বর্গে গমন করবেন। পঞ্জিকানুযায়ী ১১অক্টোবর শুভ শারদীয় দূর্গোৎসব মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হয়ে ১৫ই অক্টোবর মহাদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে দূর্গৎসবের ইতি ঘটবে এবং দুর্গাতিনাশিনী দেবী দূর্গা মর্ত্যলোক ছেড়ে স্বর্ণ শিখরে কৈলাসে স্বামী গৃহে ফিরে যাবেন। পেছনে ফেলে যাবেন ভক্তদের শ্রদ্ধা ও আনন্দমাখা অশ্রুজল। রেখে যাবেন আগামী বছরের ফিরে আসার অঙ্গীকার। সোমবার ভোর থেকে ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়। এবার রাণীশংকৈলে ৫৪টি ম-পে দুর্গোৎসব পালিত হচ্ছে। রাণীশংকৈল উপজেলা পূজা উদ্?যাপন পরিষদের সভাপতি ছবিকান্ত দেব জানান, সর্বজনীন দুর্গোৎসবকে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। আর করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিটি মন্দিরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদ্?যাপন করা হবে। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএসম জাহিদ ইকবাল জানান, এই দুর্গোৎসবকে শান্তিপূর্ণভাবে পালনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আনসার সদস্যরা সার্বিকভাবে নিয়োজিত থাকবে।