দেবীগঞ্জে জলপাইয়ের বাগান করে কৃষকরা ব্যাপক সফলতা পাচ্ছে। জলপাইর ভাল দাম ও চাহিদা থাকায় চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। জলপাই ব্যবসায়ীরা বাগান কিনে নিচ্ছে। বাগান মালিকদের জলপাই গাছ থেকে পাড়ায় বাজারে বিক্রি করতে হয় না। জলপাই এ জনপদের মানুষদের অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ হওয়ার এক নতুন মাত্রা যোগ করে দিয়েছে। দেবীগঞ্জ বাজারে আলমগীর নামের এক কৃষক বলেন, আমার একটা ছোট জলপাইয়ের গাছ থেকে প্রায় দুই মন জলপাই বিক্রি করে লাভবান হয়েছি। দেবীগঞ্জে প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকার জলপাই বিক্রি হচ্ছে। মাসে হচ্ছে এক কোটি টাকার ওপরে। প্রতি কেজি জলপাই প্রকারভেদে ১০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেবীগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ৩০ টন থেকে ৪০ টন বা তারও বেশি জলপাই কেনা হয়ে থাকে। কমপক্ষে ২০০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জলপাই কিনে বাইরের থেকে আসা ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করেন। প্রতিদিন ৬/৭টি করে ট্রাক জলপাই লোড করে নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। জলপাই বেচা-কেনা চলবে প্রায় তিন মাস যাবত। আশ্বিনের ১৫ তারিখ থেকে জলপাই বাজারে আসা শুরু করেছে, চলবে পুরো পৌষ মাস পর্যন্ত। এর আমদানি আরো বাড়বে, এমন ধারণা ব্যসায়ীদের। কেনা-বেচার এ ঘনত্বে দেবীগঞ্জে নতুন করে শতাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ জলপাই কেনা-বেচার আড়ৎ হচ্ছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে। প্রতিদিন দেবীগঞ্জে জলপাইয়ের বাজার বসে। দেবীগঞ্জ বাজারে বাইরের জেলা থেকে জলপাই নিয়ে আসে, নীলফামারী, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও । উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, দেবীগঞ্জে রয়েছে জলপাইয়ের ছোট-বড় অসংখ্য বাগান। আরো নতুন নতুন ব্যাপক জলপাইর বাগান গড়ে উঠেছে। পঞ্চগড় জেলায় দিন দিন জলপাইরয়ের চাহিদা বৃদ্ধি সহ এ জেলার লোকজন ব্যাপকহারে জলপাইয়ের বাগান করার দিকে ঝুঁকছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগও কৃষকদের আগ্রহকে দিচ্ছে বেশি করে অনুপ্রেরণা। পঞ্চগড়ে জলপাই বাণিজ্যিক হিসেবে আর্বিভূত হতে চলেছে। জলপাইয়ের গাছ লাগাতে পারলেই হয়। খুব বেশি পরিচর্চার প্রয়োজন হয় না। দিতে হয় না সার ও সেচ। ফলে এটি একটি লাভজনক ফল বাগান। কমপক্ষে একটি গাছে এক থেকে দেড় মন জলপাই ধরে। জলপাইর নার্সারী করে এখন অনেকে বেশি স্বাবলম্বী। জলপাইয়ের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ভবিষ্যতে এ জেলার অর্থনীতিতে আরো ব্যাপক গতি সঞ্চার করবে মর্মে আশাবাদ এ কৃষি কর্মকর্তার।