চলতি মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের খাদ্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ আমন ধানে ভরে উঠেছে। বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে কৃষকের বাড়ির আঙিনা সোনালি ধানে ভরে উঠবে। আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে। তবে পুরোদমে কাটা-মাড়াই শুরু হতে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন বাকি। এ জন্য কৃষাণ-কৃষাণিরা খলা-আঙিনা পরিষ্কারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। স্থানীয় বাজারে ধানের দামও ভালো রয়েছে। এ মৌসুমে কৃষকরা অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে আশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২ খরিপ-২ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ২৮ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ১৮ হাজার ৫২০ হেক্টর, ১০ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের চিনি আতব (সুগন্ধি) এবং ২৩০ হেক্টরে হাইব্রিড ধান চাষ হয়েছে। এ পরিমাণ জমি থেকে ৮৬ হাজার ৬৭০ মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের কৃষক ছাত্তার হোসেনসহ ১৫-২০ জন আমন ধানচাষী বলেন, ক্ষেতে রোগ-বালাই ও পোকা মাকড় আক্রমণ করতে পারেনি। কৃষি অফিসের পরামর্শে তারা সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। ৫-৬ দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে। গত মৌসুমের ন্যায় এবারও বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন তারা। সিদ্দিকপুর গ্রামের কৃষক মাজেদুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণা-৫, সুমন স্বর্ণা, ব্রিধান ৪৯, ব্রিধান-৫১, গোল্ডেন ও স্থানীয় জাতের চিনি আতব (সুগন্ধি) ধান রোপণ করা হয়েছে। আগামী ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে চিনি আতব ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে। মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ৩০টি ব্লকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিকর পোকা ও রোগের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় আলোচনা সভা, লিফলেট বিতরণসহ নানা সচেতনতামূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষেতের আইলে আলোক ফাঁদ পেতে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি নিশ্চিত করে কৃষকদের বালাইনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন। কৃষি বিভাগ আমন চাষীদের প্রণোদনা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।