প্রাচীন রোম সাম্রাজ্যের শাসকদের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতি প্রয়োগ করে ব্রিটিশরা এই উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলমান বিভেদ সৃষ্টি করে ‑ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এতে শুধু জনগোষ্ঠীর সম্প্রদায়গুলোই নয়, জাতি হিসেবে আমরা ক্রমাগত দুর্বল হয়েছি। লাভ হয়েছে গণবিরোধী শাসকদের।’ গতকাল রবিবার (৩১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে এসব কথা উল্লেখ করেছেন নিপুণ রায়। তিনি দাবি করেন, ব্রিটিশদের বিভাজন নীতির মাধ্যমেই হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে সুকৌশলে। বিনষ্ট হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। নিপুণ রায় বলেন, ‘এই দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছে স্বাধীনতার জন্য। এই যুদ্ধ হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সম্মিলিতভাবে করেছে। তখন সম্প্রদায়গত বিভাজন সামনে আসেনি। এটাই ছিলো সম্মিলিত শক্তির অন্যতম প্রধান উৎস।’
‘একটি জনগোষ্ঠী আন্দোলনে অবতীর্ণ হয় অধিকার আদায়ের জন্য অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে। ফলে, মানুষের ঐক্যের শক্তি দুর্বল ও বিভাজিত হলে লাভ হয় স্বৈরশাসকেরই।’ বলেন নিপুণ। তিনি বলেন, ‘মানুষ বিচ্ছিন্ন থাকলে তাতে লাভ হয় স্বৈরশাসকেরই।’ শারদীয়া পূজাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার প্রসঙ্গে নিপুণ রায় বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে শাসকদলই পরিকল্পিতভাবে মানুষ যেন ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে, সেজন্য হামলা করেছে। একচ্ছত্র ক্ষমতার বিরুদ্ধে মানুষ যেন একতাবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে।’ তিনি মনে করেন, ক্ষমতাসীনদের এই কৌশল সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে।
নিপুণ রায় বলেন, ‘ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দেশ, জাতি, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং সর্বোপরি দেশের বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম প্রধান পূর্ব শর্ত।’ নারী ও শিশু ফোরামের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।