রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ অপরাহ্ন

টি সেল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১

সব করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা আসছে
এক নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, টি সেল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক উদ্ভাবন বিজ্ঞানীদের সেই ভ্যাকসিনের বিকাশের দিকে নিয়ে যেতে পারে যা সব করোনাভাইরাস এবং কোভিড ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করবে। গত বুধবার বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ‘নেচার জার্নাল’ এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে গবেষকরা বলেছেন যে, পরবর্তী প্রজন্মের কোভিড ভ্যাকসিনের লক্ষ্য হওয়া উচিত শরীরে নির্দিষ্ট প্রোটিনের উপর প্রতিক্রিয়া জানানো যা ভাইরাসটির প্রাথমিক পর্যায়ের জন্য আবশ্যক।
স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে আরো বলা হয়ঃ গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সংক্রমিত কোষগুলোকে আক্রমণ করার জন্য রোগ প্রতিরোধী কোষগুলোকে (টি সেল নামে পরিচিত) সক্রিয় করে তুলে এমন টিকা বানাতে পারলে শুরুতেই করোনা নির্মূল করা এবং এর বিস্তার বন্ধ করতে সহায়তা করা সম্ভব হতে পারে।

এটি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে লাইসেন্সকৃত ভ্যাকসিনের পরিপূরক হতে পারে, যা শুধু ভাইরাসের বাইরে থেকে বেরিয়ে আসা স্পাইক প্রোটিনের প্রতি প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। গবেষকরা বলছেন, এই আবিষ্কার সমস্ত করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় সেই ভ্যাকসিন তৈরির দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা কেবল কোভিড এবং এর বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টগুলো থেকেই রক্ষা করবে না, সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী করোনাভাইরাস এবং নতুন উদীয়মান প্রাণীদের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধেও সুরক্ষা দেবে।
উল্লেখ্য, টি-সেল হচ্ছে মানুষের রক্তের মধ্যে থাকে এমন একটি রোগপ্রতিরোধী কোষ যার প্রধান কাজ মানবদেহে কোন প্যাথোজেন (অর্থাৎ রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস) বা কোন সংক্রমিত কোষ ঢুকে পড়লে তাকে চিহ্নিত করা এবং মেরে ফেলা। টি-সেলের ওপরের অংশে থাকা প্রোটিন দিয়ে সে অনুপ্রবেশকারীর গায়ের প্রোটিনের সাথে নিজেকে সেঁটে দেয় এবং তাকে ধ্বংস করে।
মলনুপিরাভির অনুমোদন দিতে ভারতের তোড়জোড়: কোভিড-১৯ সারাতে মুখে খাওয়ার ওষুধ মলনুপিরাভিরের অনুমোদন দিতে তোড়জোড় শুরু করেছে ভারত। চোখ রয়েছে ফাইজারের তৈরি একই ধরনের ওষুধেও। তবে ফাইজারের ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মার্কের তৈরি ওষুধটির অনুমোদন দিতে পারেন ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা। খবর এনডিটিভির। ভারতের বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (সিএসআইআর) কোভিড স্ট্র্যাটেজি গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. রাম বিশ্বকর্মা জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশটিতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেতে পারে মার্কের মলনুপিরাভির। তবে ফাইজারের প্যাক্সলোভিডের ক্ষেত্রে সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে। ভারতীয় এ বিশেষজ্ঞের মতে, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক থেকে আঞ্চলিক মহামারি হয়ে ওঠার মুহূর্তে এ দুটি ওষুধ টিকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এগুলো ‘করোনাভাইরাসের কফিনে বিজ্ঞানের শেষ পেরেক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ডা. বিশ্বকর্মা বলেন, সম্ভবত আমরা মলনুপিরাভির পেতে যাচ্ছি। ওষুধ নির্মাতাদের সঙ্গে পাঁচটি কোম্পানি আলোচনা করছে। মনে হয়, যেকোনো দিন আমরা মলনুপিরাভিরের অনুমোদন পেয়ে যাবো।
সম্প্রতি ফাইজার জানিয়েছে, তাদের প্যাক্সলোভিড করোনা রোগীদের মৃত্যু ৮৯ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে বলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে। ডা. বিশ্বকর্মার কথায়, মার্ক এরই মধ্যে (ভারতের) পাঁচটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আর তারা যেভাবে বিভিন্ন কোম্পানিকে লাইসেন্স দিচ্ছে, তাতে মনে হয় ফাইজারও একই কাজ করবে। ওষুধের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে মার্কের ওষুধের জন্য নির্ধারিত ৭০০ ডলারের চেয়ে অনেক কম দাম থাকবে ভারতের বাজারে। কারণ উৎপাদনের জন্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন কারণে এটি ব্যয়বহুল।
ভারতীয় কর্মকর্তা জানান, ভারতের বাজারে মলনুপিরাভিরের দাম হতে পারে প্রতি কোর্স দুই, তিন অথবা চার হাজার রুপি। পরে সেটি ৫০০, ৬০০ বা এক হাজার রুপিতে নেমে আসতে পারে।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এরই মধ্যে মুখে খাওয়ার ক্যাপসুল ‘মলনুপিরাভির’ বাজারজাতকরণ শুরু করেছে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান। গত সোমবার (৮ নভেম্বর) প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর অনুমোদন পায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এরপর অনুমোদন পায় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস। অপেক্ষায় রয়েছে আরও অন্তত সাতটি প্রতিষ্ঠান।
দেশের বাজারে ২০০ মিলিগ্রামের প্রতিটি মলনুপিরাভির ক্যাপসুলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ টাকা। করোনায় আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এ ক্যাপসুল খেতে পারবেন। চিকিৎসকরা বলছেন, মলনুপিরাভির ক্যাপসুলের ফুল কোর্স হবে পাঁচদিনে। প্রতিদিন আটটি ক্যাপসুল খেতে হবে, যার মধ্যে সকালে চারটি ও রাতে চারটি। অর্থাৎ পাঁচদিনে মোট ৪০টি ক্যাপসুল খেতে হবে। সেই হিসেবে একজন রোগীর জন্য ফুল কোর্সের মলনুপিরাভির দাম পড়বে ২ হাজার ৮০০ টাকা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com