মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ সড়কের বাম পাশে লাগোয়া প্রাচীণতম কোহেলিয়া নদী ভরাট করে বাণিজ্যিক পয়েন্ট গড়ে তুলেন মুরাদসহ স্থানীয় এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। যার দরুণ ওই বাণিজ্যিক পয়েন্টে মালামাল লোড-আনলোড করতে দীর্ঘক্ষণ সময়ে সৃষ্ট জ্যামঝটে ভোগান্তিতে পড়ে প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তি, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়া রোগি ও স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা। এতে অসহনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। অপরদিকে সরকারও হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। মেগা প্রকল্পগুলির একমাত্র রাস্তা হচ্ছে মাতারবাড়ী টু চালিয়াতলী সড়কটি। এভাবে দিন-দুপুরে নদী দখল করে বাণিজ্যিক পয়েন্ট স্থাপন করে সড়কের উপর ইট-কংক্রিটের স্তুপ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে! সচেতনমহল দাবী করেন এখনো ঘুম ভাঙ্গেনি কর্তৃপক্ষের। এমন দাবী যাতায়তকৃত পথচারীদেরও। দেশের বৃহৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে মাতারবাড়ী কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পটি অন্যতম। অন্যদিকে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দরের অধিগ্রহণ প্রায় শেষের দিকে। অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, মহেশখালী উপজেলার মাঝখানে বুক চিরে বয়ে যাওয়া কোহেলিয়া নদটি। উক্ত নদটি খুবই প্রাচীণতম এবং এক সময় গভীর ছিলো। বর্তমানে নদটির অস্তিত্ব ও বিলীন হতে চলেছে। ভূমি দস্যুরা নদের জমি দখল করে চিংড়ি ঘের, এমনকি অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে চলেছে। প্রশাসন রহস্যজনক কারণে ওইসব ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে নদিটি দিন দিন সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। জীবন জীবিকার প্রধান উৎস ছিলো কোহেলিয়া নদী। নদ সংলগ্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ (মাতারবাড়ী-কালারমারছড়া-ধলঘাটা) নদি থেকে মৎস্য আহরণ করে জীবন যাপন করতেন। কিন্তু এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মূল ভিত্তি কোহেলিয়া নদ এখন কালের বিবর্তনে প্রায় মৃত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভূমিদস্যু ও লোলুপ দৃষ্টি ভঙ্গির মানুষ যুগযুগ ধরে কোহেলিয়া নদকে নানানভাবে ধ্বংস করে যাচ্ছে। প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলেই অসাধু ব্যক্তিদের সাহস সীমাহীনভাবে বেড়ে গেছে। এভাবে প্রতিনিয়তই নদী বা সরকারী জমি দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। এমনও দেখা গেছে নদের মধ্যেই তৈরি করা হয়েছে চিংড়ি ঘের। মহেশখালী উপজেলা কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলী-মাতারবাড়ী সংযোগ সড়ক দ্বারাদিয়া খাল অংশে নদের সীমানার মধ্যে গাছের খুঁটি এবং টিনের ঘেরা দিয়য়েছে হয়েছে। ফলে নদের স্বাভাবিক গতি নষ্ট হয়ে। নদের গতিস্রোত নষ্ট হওয়ার ফলে কিছু কিছু স্থানে পট কঁচুরিপানার সৃষ্টি হয়ে নদ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদ পাড়ের জেলে শাহিন ও শাকের উল্লাহসহ অনেকে জানান, নদ আর নদ নেই। এই নদে সরকারীভাবে প্রতিবছর মাছ অবমুক্ত করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে প্রভাবশালীরা দখল করে মাছ চাষ করে। ফলে গরিব জেলেরা এ মাছ আহরণ করতে বিঘœ সৃষ্টি হয়। যার দরূন তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করেছেন। সচেতন মহল ও পথচারীদের ভাষ্য রাস্তা উপর এভাবে মালামাল স্তুপ করে এবং লোড-আনলোড করার কারণে জ্যামঝট সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ি। তাই অতিদ্রুত তা সম্প্রসারণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি। মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুর রহমান জানান, খোজ নিয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপশি দখলদারদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।