ওয়াজ মাহফিল যদি সুসংগঠিত ও পরিকল্পিত হয় তাহলে সমাজে নীতি-নৈতিকতার চর্চা বৃদ্ধি পাবে, অপরাধপ্রবণতা কমবে, সুন্দর ও আদর্শ কল্যাণ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। কারণ আবহমান কাল থেকে ঈমান, আমল, আদর্শ আচার-আচরণের শিক্ষার বড় একটি অংশ সাধারণ মানুষ ওয়াজ মাহফিল থেকে পেয়ে থাকে। ঈমানের বলে বলিয়ান ও আদর্শ মুসলিম হওয়ার দিকনির্দেশনা দেয়া হয় এ দেশের ওয়াজ মাহফিলে। ‘ওয়াজ’ শব্দের শাব্দিক অর্থ উপদেশ, নসিহত। আল্লাহ তায়ালা কুরআন কারিমে বিভিন্নভাবে ‘ওয়াজ’ শব্দটা ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া সমার্থক শব্দেও উপদেশ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘(আল্লাহ) তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো’ (কুরআন, ১৬:৯০)। ‘তুমি উপদেশ দিতে থাকো, কারণ উপদেশ মুমিনদেরই উপকারে আসে’ (কুরআন, ৫১:৫৫)। রাসূলুল্লাহ সা: উপদেশের মাধ্যমে মানুষকে দ্বীনের পথে আহ্বান করতেন। তিনি বলেছেন, ‘সদুপদেশই দ্বীন’ (সহিহ মুসলিম : ৯৫)। আরো বলেছেন, ‘আমার কাছ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছিয়ে দাও’ (সহিহ বুখারি : ৩৪৬১)।
তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে মানুষকে সদুপদেশ দেয়া উলামায়ে কিরামের দায়িত্ব। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একদল যেন থাকে, যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে; আর তারাই সফলকাম’ (কুরআন, ৩:১০৪)।
সুতরাং বোঝা গেল, ‘ওয়াজ’ তথা দ্বীনি উপদেশ প্রদান ইসলামে নতুন কোনো সংযোজন নয়, বরং আল্লাহ কর্তৃক নির্দেশিত ও রাসূল সা: কর্তৃক প্রদর্শিত পন্থা। তবে তা তখনই সফল ও অর্থবহ হবে যদি তা হয় সঠিক ও সুন্দর পদ্ধতিতে। কিভাবে একটি সুন্দর ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা যায়, এটাই এই নিবন্ধের প্রতিপাদ্য।
উদ্দেশ্য : ১. কুরআন-হাদিসের আলোকে এবং সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে সর্বসাধারণের কাছে ইসলামের সঠিক ধারণা তুলে ধরা। ২. প্রচলিত কুসংস্কার ও সামাজিক অসঙ্গতি এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার মাধ্যমে দূর করার প্রয়াস চালানো। ৩. নীতি-নৈতিকতায় সমৃদ্ধ দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ করা। ৪. সর্বোপরি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
পক্ষান্তরে মাহফিলের আয়োজক কিংবা বক্তা (যিনি ওয়াজ পেশ করেন) উদ্দেশ্য যদি পার্থিব কোনো কিছু হয়, তাহলে তারা এ জন্য আল্লাহর কাছে কোনো বিনিময় পাবেন না; উপরন্তু আখিরাতে তাদেরকে আল্লাহর কাছে ইবাদতের নামে লৌকিকতার কারণে আজাবের মুখোমুখি হতে হবে। এ ধরনের ওয়াজ মাহফিল থেকে সমাজেরও কোনো উপকার হয় না।
সময়সীমা : গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ এবং কৃষক ও গৃহিণীদের জন্য ওয়াজ মাহফিলের জন্য আদর্শ সময় বাদ আসর থেকে রাত ৯-১০টা। তারপর মাহফিলস্থলে এশার সালাত আদায়ের মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্ত হলে সেটা হবে সব দিক থেকে সুন্নাহসম্মত ও যথার্থ। কারণ রাসূলুল্লাহ সা: রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে যাওয়া পছন্দ করতেন এবং এশার পর আলাপচারিতা অপছন্দ করতেন। তা ছাড়া রাতে দেরিতে ঘুমানো শরীরের জন্যও ক্ষতিকর। তাহাজ্জুদ ও ফজরের সালাত আদায়ের জন্য রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়া সবচেয়ে বেশি সহায়ক ভূমিকা রাখে।
আলোচক ও আলোচনার ধরন : শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের কল্যাণ ও দায়িত্ববোধ থেকে ওয়াজ করতে চান এবং কুরআন-হাদিসের পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন, বিনম্রভাবে সুন্দর ও শুদ্ধ ভাষায় আলোচনা ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেন এমন দায়িত্বশীল ও বিচক্ষণ আলেমদেরই কেবল মাহফিলে আলোচনা পেশ করার আহ্বান করা উচিত। ওয়াজের নামে বিভিন্ন শ্রেণী ও গোষ্ঠীর অযাচিত সমালোচনা, দৃষ্টিকটু আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি করা, অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি, বানোয়াট-ভিত্তিহীন উক্তি ও মন্তব্য ওয়াজ মাহফিলের গাম্ভীর্য এবং সৌন্দর্য বিনষ্ট করে। আলোচনা হওয়া উচিত সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ও গঠনমূলক, যা আগে থেকে নির্ধারণ করে নিতে পারলে ভালো হয়।
প্রশ্নোত্তর সেশন ও কুইজ প্রতিযোগিতা : ওয়াজ মাহফিলে শুধু বক্তা বক্তব্য দিলেন আর শ্রোতারা শোনলেন বা সায় দিলেন, এতে শ্রোতাদের অংশগ্রহণ পুরোপুরি নিশ্চিত হয় না। সে জন্য আলোচনা শেষে শ্রোতাদের মনের জিজ্ঞাসাগুলো তুলে আনতে প্রশ্নের উত্তরের সেশন থাকলে মাহফিল অনেক বেশি প্রাণবন্ত হবে। অবশ্য প্রশ্নগুলো আগে থেকে সংগ্রহ করে উত্তরদাতা দেখে প্রস্তুতি নিয়ে নিলে সেটা হবে অনেক বেশি অর্থবহ ও নির্ভুল। আর সবশেষে শ্রোতারা কতটা শিখতে বা জানতে পারলেন সেটা পরখ করার জন্য উপস্থাপিত বক্তব্য থেকে শ্রোতাদের প্রশ্ন করে সঠিক উত্তরদাতাকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে। এতে মাহফিল আরো বেশি উপভোগ্য হতে পারে।
আয়োজকদের দায়িত্ব : স্থানীয় আয়োজকরা মাহফিলের প্যান্ডেল প্রস্তুত, প্রচারণা, স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে শৃঙ্খলা রক্ষা ও সার্বিক বিষয়ে বিচক্ষণতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাহফিলের মূল উদ্দেশ্যে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, বক্তা নির্বাচন থেকে নিয়ে সব কিছুতে সে ব্যাপারে তাদের সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত। ওয়াজ মাহফিলে যেন ইসলামের সুমহান দাওয়াহর আবহ থাকে। মাহফিল যেন প্রদর্শনপ্রিয়তা বা লৌকিকতা বা এ-জাতীয় কোনো মন্দ কিছুর প্লাটফর্ম না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিংবা গাড়ি থামিয়ে ডোনেশন কালেকশন করার মতো অপমানকর এবং বিরক্তিকর কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। ডোনেশন কালেকশনের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব হালাল উপার্জনকারীদের ডোনেশন নেয়ার চেষ্টা করতে হবে।
আলোচকদের জ্ঞাতব্য: শুধু দ্বীন প্রচারের দায়িত্ববোধ থেকেই মাহফিলে আলোচনা করবেন। কুরআন-হাদিস ও সুন্দর উপদেশমালাকে প্রজ্ঞার সাথে পেশ করে ওয়াজ করবেন। মনগড়া কোনো কথা বা বেফাঁস কোনো মন্তব্য করবেন না।
কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আক্রমণ করে কোনো আলোচনা করবেন না। মাহফিলে আলোচনা করবেন অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সাথে। পরিকল্পিতভাবে লোক হাসানো, কৌতুক করা কিংবা অসুন্দর কোনো অঙ্গভঙ্গি করে কথা বলবেন না।
যথাসম্ভব শ্রোতাদের প্রতি সম্মান বজায় রেখে বিনয়ের সাথে আলোকপাত করবেন। শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ কিংবা সম্বোধন করতে গিয়ে ধমকের সুরে কোনো কথা বলবেন না।
মাহফিলে বিরোধপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করবেন না। রাষ্ট্র ও সামাজিক শান্তিশৃঙ্খলা বিঘœ হতে পারে এমন আলোচনা থেকে বিরত থাকবেন। মাহফিলের আবেদন ফরম তৈরি করে নিতে পারেন। যাতে আদর্শ ওয়াজ মাহফিলের জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনার উল্লেখ থাকবে।
প্রশাসনের অনুমোদন ও স্বচ্ছতা: ওয়াজ মাহফিলের লক্ষ্যই যেখানে নীতি-নৈতিকতার দীক্ষা দেয়া, সেখানে মাহফিল করতে গিয়ে যেন কোনো প্রকার অসততা বা অনৈতিকতার আশ্রয় নেয়া না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা অবশ্যই কর্তব্য। স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে বা অনুমোদন নিয়ে মাহফিল আয়োজন করা সুশৃঙ্খল মাহফিলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
বিদ্যুৎ ও মাইকের ব্যবহার: অনেক সময় মাহফিলের বিদ্যুৎ সরাসরি মেইন লাইন থেকে টানা হয়, যা অনুচিত কাজ। প্রয়োজনে আশপাশের কোনো বাসা কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে (নিরাপত্তা ও ধারণক্ষমতা নিশ্চিত করে) সংশ্লিষ্টদের অনুমতি ও বিল পরিশোধ সাপেক্ষে বিদ্যুৎ নেয়া যেতে পারে।
মাহফিলের মাইক অনেক বেশি দূর-দূরান্ত পর্যন্ত স্থাপন করায় যদি অন্য ধর্মের মানুষের বিরক্তি কিংবা কোনো রোগী বা কারো কষ্টের কারণ হয়, তাহলে তা কোনো অবস্থাতেই জায়েজ নয়। কারণ কাউকে ওয়াজ শুনতে বাধ্য করা, কিংবা সাধারণ জীবনযাত্রা ব্যাহত করা ও কষ্ট দেয়া ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ কিংবা গান-বাজনার অনুষ্ঠানে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত মাইক স্থাপন ও হাই ভলিওমের বিরক্তিকর ব্যবহার হয়ে থাকে, সেই যুক্তিতে ওয়াজ মাহফিলেও একই কাজ করা ন্যায়সঙ্গত হবে না। কারণ, মন্দ কোনো কিছু কখনো দৃষ্টান্ত ও অনুকরণীয় হতে পারে না। ওয়াজ মাহফিল তো বরং অন্যায় ও অসঙ্গতি দূর করতে কাজ করবে।
প্রচারণা নীতিমালা: মাহফিলের ব্যানার বা পোস্টারের লেখা যেন বিশুদ্ধ থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখা উচিত। পোস্টার বা ব্যানারে কোনো আলোচকের পরিচয়-পদবি লিখতে গিয়ে ভুল ও অতিরঞ্জন করা চরম অন্যায়। উপস্থাপক কোনো আলোচকের পরিচয় উল্লেøখ করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন ও অত্যুক্তি করবেন না। মাইকের শব্দ এত বেশি উচ্চ করা অনুচিত যাতে মাহফিলস্থলের আশপাশে বসবাসকারী কারো কষ্টের কারণ হয়।
মাহফিলের আলোচনা ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করার জন্য নিজস্ব বা নির্ভরযোগ্য মিডিয়া থাকলে ভালো। অন্য কোনো ইউটিউবার, ফেসবুকার বা মিডিয়ার ক্যামেরা অনুমোদনের আগে তাদের চ্যানেল ও পেজ ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে দায়িত্বশীলতার বিষয়টি নিশ্চিত হলেই শুধু মাহফিল রেকর্ডের অনুমতি দিতে হবে। যারা মাহফিলের ভিডিও ধারণ করে ভিউয়ার বাড়ানোর জন্য দৃষ্টিকটু, মিথ্যা ও আপত্তিকর থাম্বেইল কিংবা শিরোনাম দিয়ে থাকে, তাদের কোনো অবস্থাতেই মাহফিল রেকর্ডের অনুমতি দেয়া উচিত নয়। উত্তম হয় মাহফিলের আগে থেকে তাদের কাছ থেকে রেকর্ডের আবেদন গ্রহণ ও পুরো ব্যাপারটি এ বিষয়ে পারদর্শী কারো দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা।
আলোচকদের সম্মানী: আলোচকদের উচিত দ্বীন প্রচারের মানসিকতা নিয়ে ওয়াজ করা। মাহফিলে ওয়াজ করাকে যদি অন্য দশটা পেশার মতো একটি পেশা বানানো হয় তাহলে সেই ওয়াজ দ্বারা ইসলাম ও মুসলমানদের খুব বেশি উপকার হবে না। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তার অনুকরণ করো যে তোমাদের কাছে (সত্যর পথে আহ্বান করে) কোনো বিনিময় চায় না। আর এমন লোকেরাই হিদায়েতপ্রাপ্ত।’ (আল-কুরআন, ৩৬ : ২০) সুতরাং মৌলিকভাবে দ্বীনি কাজ হবে শুধু আল্লøাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে। তবে যেসব দ্বীনি কাজ আঞ্জাম দিতে গিয়ে প্রায় পুরো সময় সে কাজে আত্মনিয়োগ করতে হয় এবং দ্বীনের জন্য তা অতীব গুরুত্বপূর্ণ সেসব কাজ করে পারিশ্রমিক নেয়াকে বিশ্বের প্রায় সব ইসলামিক স্কলার জায়েজ মনে করেন। সে হিসেবে ওয়াজ করার পর হাদিয়া বা বিনিময় দেয়া-নেয়াও জায়েজ। এ বিষয়ে তেমন কোনো মতপার্থক্য নেই। কারণ, সাধারণত এ জাতীয় কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নিজের সংসার ও পরিবারের ব্যয়ভার বহনের জন্য পৃথক কোনো পেশায় নিয়োজিত হতে গেলে দ্বীন প্রচারের কাজে ব্যাঘাত ঘটে। তবে অর্থলিপ্সা কিংবা সম্পদ আহরণের লক্ষ্যে দ্বীন প্রচারের কাজ দোষণীয়।
সে জন্য কর্তৃপক্ষের উচিত আলোচকের গাড়িভাড়া, পথখরচ ও অন্যান্য খরচের পাশাপাশি সম্মানজনক হাদিয়া পেশ করা। কারণ, রাত-বিরাতে মাহফিল করা নানা কারণে রিস্কি। অনেক সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। এসব দিক বিবেচনা করে আয়োজকদের সাধ্য অনুযায়ী সম্মানী দেয়ার চেষ্টা করা উচিত। এ বিষয়ে চড়া দর কষা যেমন আলোচকের জন্য শোভনীয় নয়, আয়োজকদেরও এ নিয়ে সঙ্কীর্ণ মনের পরিচয় দেয়া উচিত নয়। এ বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আগে থেকে কোনো সমঝোতা হলে সেটাও দূষণীয় নয়। তবে কর্তৃপক্ষের উচিত চড়া মূল্য হাঁকানো বক্তাদের চেয়ে মুখলিস ও নিষ্ঠাবান আলেমদের দাওয়াত করার চেষ্টা করা।
অনেক আয়োজক মাহফিলের জন্য বিস্তর টাকা তুলে আলোচকদের যৎসামান্য হাদিয়া দিয়ে অবশিষ্ট টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বণ্টন করে নেন। কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে মাহফিলের কথা বলে টাকা তুলে মাহফিলে কম খরচ করে তা দিয়ে অন্য কোনো কল্যাণমূলক কাজ করেন, এটি গর্হিত কাজ। কারণ, দাতা যে খাতে ব্যয়ের জন্য দান করবেন, সে খাতেই ব্যয় করা উচিত। অবশ্য সব কিছু যথাযথভাবে সম্পন্ন করার পরও যদি টাকা উদ্বৃত্ত থাকে তাহলে দানকারীদের মৌনসম্মতি থাকবে, এই বিবেচনায় সে টাকা কোনো ভালো কাজে ব্যয় করতে পারে কর্তৃপক্ষ।
আমার বিশ্বাস, উপরিউক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে, পরিকল্পিত ও গোছানো ওয়াজ মাহফিল করা হলে সেটা হবে অনেক বেশি ফলপ্রসূ এবং উপকারী ইনশা আল্লাহ। লেখক: ইসলামী আলোচক এবং চেয়ারম্যান, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন