রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন

নিপা ভাইরাস: রসেও যেতে পারে জীবন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১

করোনাসৃষ্ট মহামারি থেকে মুক্তি পেতে লড়াই করছি আমরা। এ দিকে পরবর্তী মহামারি নিপা ভাইরাস’-এর কারণে হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। নিপা ভাইরাসে অসুস্থ চার জনের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু ঝুঁকি থাকে। অর্থাৎ এই ভাইরাসে মৃত্যুর হার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। ফলে নিপা ভাইরাস সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে। জানতে হবে এই ভাইরাসের রহস্য। নিপা ভাইরাস হলো এক ধরনের আরএনএ ভাইরাস, যা প্যারামিক্সোভিরিডি পরিবারের হেনিপাহ ভাইরাসের অর্ন্তগত। এই ভাইরাস প্রাণী থেকে প্রথমে মানুষের মধ্যে ছড়ায়, তারপর আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে আরেকজন আক্রান্ত হতে পারে। অর্থাৎ এই ভাইরাসের সংক্রমণের ধরন কিছুটা করোনা ভাইরাসের মতো।
#কীভাবে ছড়ায়: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সাধারণত বাদুড় বা শূকরের মাধ্যমে ভাইরাসটি মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে। যেমন বাদুড়ের লালা, মূত্রের সংস্পর্শে আসা কোনো ফল যদি কেউ খায়, তখন নিপা ভাইরাস তার দেহে প্রবেশ করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খেজুর, পেয়ারা, আম বা লিচুর মতো ফল থেকে সংক্রমণ বেশি হতে পারে। কারণ, এই ফলগুলো বাদুড়ের প্রস্রাব বা লালার মাধ্যমে দূষিত হয়।
#খেজুরের রসে ঝুঁকি বেশি: শীতকালে কাঁচা খেজুরের রসে নিপা ভাইরাস থাকার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন একদল বিশেষজ্ঞ। খেজুরের রস সংগ্রহ করার জন্য গাছে যে হাঁড়ি বাধা হয়, ওই হাঁড়ি থেকে রাতে বাদুড় রস পান করে। ফলে খুব সহজেই বাদুড়ের লালা থেকে নিপাহ ভাইরাস হাঁড়ির রসে মিশে যেতে পারে। এমনকি বাদুড়ের প্রস্রাবের মাধ্যমেও ভাইরাসটি রসে মিশতে পারে। গবেষকরা বলছেন, নিপা ভাইরাস মিশ্রিত খেজুরের রস পান করলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
#উপসর্গ: এই ভাইরাস মানুষের মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টি করে। ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হলে যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে: ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো জ্বর, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, মাংসপেশিতে ব্যথা, বমি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, অচেতন হয়ে পড়া ইত্যাদি। অনেকে খিঁচুনিতেও আক্রান্ত হন। উপসর্গগুলো ১০ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, যার সম্ভাব্য পরিণতি মৃত্যু।
#নিপা ভাইরাস কি পরবর্তী মহামারির কারণ? অপটিক ফ্লাক্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিপা ভাইরাস নিয়ে বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন। ভাইরাসটি সংক্রমণে উচ্চ মৃত্যুহার এবং সা¤প্রতিক সময়ে এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় এটি পরবর্তী মহামারির কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তারা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে নিপা ভাইরাসকে একটি অগ্রাধিকার গবেষণা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কারণ এই সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। অর্থাৎ এর প্রতিকার নেই, প্রতিরোধই একমাত্র পথ।
#প্রতিরোধের উপায়: পাখি বা কোনো পশুর খাওয়া ফলমূল এবং গাছ থেকে সদ্য নামানো খেজুরের রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যে কোনো ফল ভালো করে ধুয়ে খোসা ফেলে খেতে হবে। খেজুরের রস ফুটিয়ে নিলে নিপা ভাইরাস মরে যায়। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে যাওয়া যাবে না। গেলে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। গাছের পরিচর্যা, ফল পাড়া বা খেজুরের রস আহরণের পর স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com