শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

এজেন্ট ব্যাংকারদের কাছে ২২ হাজার কোটি টাকা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ওপর আস্থা বাড়ছে আমানতকারীদের। যে কারণে এ বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ২২ হাজার ২৬১ কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে খোলা হিসাবগুলোতে আমানত ছিল ১৩ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এ বছর যা বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, এখন ৫-৬ কোটি গ্রাহক নিয়মিত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করছেন। এদের একটি বড় অংশ ব্যবসার প্রয়োজনে নিয়মিত টাকা ট্রান্সফার (টিটি) করছেন। আরেকটি অংশ রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এ ছাড়া হিসাব খুলেছেন এক কোটি ২৯ লাখ ১১ হাজার ৫৪১ জন। এর মধ্যে নারী গ্রাহক আছেন ৬০ লাখ ৪২ হাজার ৯৪৬ জন। গ্রাহকদের মধ্যে এক কোটি ১১ লাখ ২৭ হাজার ৫৪১ জনই প্রত্যন্ত অ লের বাসিন্দা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বি আইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, এজেন্ট আউটলেটগুলো মূল ব্যাংকের মতোই সেবা দিচ্ছে। এ ছাড়া জনগণের রাখা আমানত চলে যাচ্ছে মূল ব্যাংকের কাছে। যে কারণে আমানতকারীরা নিশ্চিন্তে টাকা রাখছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত একমাসে এজেন্টদের কাছে নতুন করে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা জমা রেখেছেন আমানতকারীরা। তিন মাসে রেখেছেন ১ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে আমানতের প্রবৃদ্ধি ৯.২৪ শতাংশ।
সেপ্টেম্বরের শেষে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২২ হাজার ২৬১ কোটি টাকায়। যা আগস্টের শেষে ছিল ২১ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা। জুন শেষে আমানত ছিল প্রায় ২০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যনুযায়ী, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রাহকরা ৮ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা জমা রেখেছেন ইসলামী ব্যাংকের এজেন্টদের কাছে। যা মোট আমানতের ৩৬ শতাংশ। এদিকে এজেন্টদের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো ২২ হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত পেলেও ঋণ বিতরণ করেছে চার হাজার কোটি টাকারও কম। অবশ্য গত বছরের তুলনায় এই বছর এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২৬৭ শতাংশ। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার আওতায় বিতরণ করা ঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯৯৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকায়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ছিল ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। জুন শেষে বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল ৩ হাজার ১৮৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। জুন থেকে সেপ্টেম্বরÍএই তিন মাসে ঋণ বেড়েছে ৮১১ কোটি টাকা।
আরও জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংক। এখন পর্যন্ত ২৯টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের লাইসেন্স নিয়েছে। এজেন্টের মাধ্যমে ঋণ বিতরণে শীর্ষে আছে ব্র্যাক ব্যাংক। এ সেবার আওতায় বিতরণ করা ঋণের ৬৪ শতাংশই ব্যাংকটির দখলে। দ্বিতীয় অবস্থানে ব্যাংক এশিয়া (১৭ শতাংশ) ও তৃতীয় দি সিটি ব্যাংক (১১ শতাংশ)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে নতুন করে ৭ লাখ ৬ হাজার ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ৫২ শতাংশ, নারী ৪৭ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠান ১ শতাংশ। হিসাবগুলোর মধ্যে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বাসিন্দা আছে ৮৬ শতাংশ। জানা গেছে, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার গ্রাহকদের বড় একটি অংশ রেমিট্যান্স গ্রহণ করে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে ৭ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স বিতরণ করেছে এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলো তাদের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমানত রাখা, ঋণ বিতরণ ও রেমিট্যান্স আনার পাশাপাশি তারা স্কুল ব্যাংকিং চালু করেছে। সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতাও বিতরণ করছে এজেন্টরা। সব মিলিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সফলতার হাত ধরে গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন পরিষেবার বিল জমা দেওয়া, অর্থ স্থানান্তর, চেক বই গ্রহণ, এটিএম কার্ড সংগ্রহসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রমই করা যায়। নির্দিষ্ট কমিশনের মাধ্যমে ব্যাংকের পক্ষে সেবাটি দেন এজেন্টরা। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সেবা সহজলভ্য করতে ২০১৩ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১৪ সালে প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করে ব্যাংক এশিয়া।-বাংলাট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com