বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে ঢাকা-মালে বন্দী বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা

বাসস :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১

মালদ্বীপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফরকালে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল মন্ত্রিসভায় ‘এগ্রিমেন্ট বিটুইন দি গভর্নমেন্ট অব দি পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ এন্ড দি গভর্নমেন্ট অব দি রিপাবলিক অব মালডিভস অন ট্রান্সফার অফ প্রিজনারস’ শীর্ষক একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। তিনি গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন।
পরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মালদ্বীপে বাংলাদেশের সাজাপ্রাপ্ত ৪৩ জন এবং আরো ৪০ জন বিচারাধীন অবস্থায় বন্দী আছেন। তবে বাংলাদেশে কোনো মালদ্বীপের নাগরিক কারাবন্দি নেই।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চুিক্ত অনুযায়ী উভয় দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় করা যাবে।
তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মালদ্বীপ সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে ‘কোয়ালিফাইড হেলথ প্রফেশনাল’ গ্রহণের জন্য সংশোধিত একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা মালদ্বীপের সঙ্গে আমাদের কোয়ালিফাইড হেলথ প্রফেশনাল গ্রহণের জন্য একটা চুক্তি। চুক্তিটি মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপ গেলে সেখানে এই চুক্তিটা স্বাক্ষরিত হবে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মেডিক্যাল প্রফেশনাল ক্যাটাগরির বেশকিছু লোক সেখানে যেতে পারবেন। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে একটা এমওইউ ছিল, যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হেলথ প্রফেশনাল যেতেন। মালদ্বীপ ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করার এবং এটিকে একটি চুক্তির মধ্যে নিয়ে আসার জন্য আগ্রহী। তাঁরা কোয়ালিফাইড হেলথ প্রফেশনাল, ক্লিনিক্যাল স্পেশালিস্ট, পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট, ডেন্টাল সার্জন, নার্সেস অ্যান্ড আদার অক্সিলারি স্টাফ নেবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রিসভা এছাড়াও মিথ্যা উপাধি, অনুমোদনহীন ওষুধের প্রেসক্রিপশন এবং ডিগ্রির অনুকরণ করলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন, ২০২১’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অধ্যাদেশগুলোকে আইনে পরিণত করার জন্য একটা বিধান অনুযায়ী ১৯৮৩ সালের একটি অর্ডিনেন্সকে আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এতে ৫০ টি ধারা আছে। আইনে ঢাকায় একটি আয়ুর্বেদিক বোর্ড থাকার কথা বলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে যে কোনো স্থানে শাখা করা যাবে। আইন অনুযায়ী একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে, চেয়ারম্যান এবং একজন রেজিস্ট্রার থাকবে। বছর শেষে বোর্ড সার্বিক প্রতিবেদন সরকারকে দেবে। তিনি বলেন, একটি কাউন্সিল থাকবে মেডিক্যাল কাউন্সিলের মতো। তারা একাডেমিক বিষয়গুলো দেখবে। কাউন্সিল তারাই নির্বাচন করবে। তারা না পারলে সরকার চেয়ারম্যান নির্বাচন করে দেবে। কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে ৩ বছরের জন্য। কাউন্সিলই চেয়ারম্যান নির্বাচন করবে।
কাউন্সিলে ১৬ ক্যাটাগরির সদস্য থাকবেন। এর মধ্যে ৩ জন সংসদ সদস্য যাদের স্পিকার মনোনয়ন দেবেন, ডিজি হেলথ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ডিন, চট্টগ্রাম রাজশাহী ও খুলনা মেডিক্যাল থেকে মেডিসিন অনুষদের একজন ডিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্মসচিব, অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব, বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের রেজিস্ট্রার, সরকারি পর্যায়ে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজের অধ্যক্ষ ও বেসরকারি পর্যায়ে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজের অধ্যক্ষ- এরকম প্রায় ১৯-২০ জন সদস্য থাকবেন।
কাউন্সিলের কাজ হলো- ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতোকোত্তর ডিগ্রির রেজিস্ট্রেশন, গবেষণা বা বিশেষ শিক্ষা প্রবর্তন করা সহ অন্যান্য গবেষণা, আর্থিক স্বীকৃতি প্রদান এবং প্রকাশনা। ইউনানি চিকিৎসকরা ‘ডাক্তার’ টাইটেল ব্যবহার করতে পারবেন কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা কাউন্সিল নির্ধারণ করবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনে কিছু সাজার বিধানও রাখা হয়েছে। কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি মিথ্যা উপাধি ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদ- বা ১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ই হতে পারে।
অনুমোদনহীন ওষুধের প্রেসক্রিপশন দিলেও এক বছরের কারাদ- বা ১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ- এবং কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ডিগ্রির অনুকরণ করলে ৩ বছরের কারাদ- অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার শর্ত অনুযায়ী চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের বিদেশে স্বীকৃতিতে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল করতে একটি আইনের খসড়াও এদিন মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ডব্লিউএইচও এবং তাদের সংশ্লিষ্ট যত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সংস্থা আছে, তাদের একটা সিদ্ধান্ত আছে যে, ২০২৪ সালের মধ্যে সবাইকে একটা মিনিমাম সিস্টেমের মধ্যে, অ্যাক্রেডিটেশনের মধ্যে আসতে হবে। যদি কোন দেশ সেই অ্যাক্রেডিটেশনের মধ্যে না আসে তাহলে সেই দেশের ডাক্তার কিংবা কোন হেলথ টেকনিক্যাল লোকজন অন্যদেশে রিকোগনাইজড (স্বীকৃত) হবে না। তারা বিদেশে চাকরি করতে যেতে পারবে না। শিক্ষার্থীরা অন্য দেশে গিয়ে শিক্ষাও গ্রহণ করতে পারবে না। ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই শর্ত ছিল, কোভিডের কারণে তা ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সচিব বলেন, উন্নত দেশে যদি আমাদের মেডিক্যাল শিক্ষা বা পেশাকে স্বীকৃতি দিতে হয় কিংবা দেশে এমবিবিএস করার পর শিক্ষার্থীদের অন্যদেশে উচ্চ শিক্ষা নিতে হয় তবে তাদের একটা অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের আওতায় তাকে স্বীকৃতি নিতে হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই আইনটি নিয়ে আসা হয়েছে।
বিজিবিকে বিশ্বমানের আধুনিক ত্রিমাত্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজিবিকে একটি বিশ্বমানের আধুনিক ত্রিমাত্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে বিজিবিতে একটি স্বতন্ত্র এয়ার উইং সৃজন করে রাশিয়া হতে দুইটি অত্যাধুনিক এমআই-১৭১-ই প্রযুক্তির হেলিকপ্টার সংযোজন করা হয়েছে। যার ফলে দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অরক্ষিত সীমান্ত ও দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ‘বিজিবি ত্রিমাত্রিক বাহিনী’ হিসেবে জল, স্থল ও আকাশপথে দায়িত্বপালনে সক্ষম হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস -২০২১’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে আরো বলেন, এছাড়া ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্রের পরিবর্তে তদস্থলে ১৪টি আধুনিক, যুগোপযোগি ও কার্যকর এন্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন্স, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তেও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় বিজিবি’র সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ১২টি আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) এবং ১০টি রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল, সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে টহল কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে যেকোনো দুর্গম রাস্তায় চলাচলে সক্ষম ২৪৭টি অল ট্যারেইন ভেহিক্যাল (এটিভি) ক্রয় করা হয়েছে।
আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধ এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনের লক্ষ্যে সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩২৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় ‘স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স এন্ড ট্যাকটিকাল বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপন ও সম্প্রসারণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সুন্দরবনের গহীন অরণ্যের জল-সীমান্তে এবং মায়ানমার সীমান্তের নাফ নদী ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাগর উপকূলে ইয়াবা পাচারসহ আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে বিজিবি’র বহরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিভিন্ন সিরিজের ১২টি আধুনিক জলযান সংযোজন করা হয়েছে। বিজিবি’র জন্য অত্যাধুনিক ৪টি এয়ার বোট ক্রয় কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস’ উপলক্ষে এ বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবি ২২৬ বছরের একটি ঐতিহ্যবাহী বাহিনী। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর সাহসী ও গৌরবময় ভূমিকা অবিস্মরণীয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তৎকালীন ইপিআর-এর বাঙালি সদস্যবৃন্দ পাক হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে ইপিআর-এর বেতারকর্মীরা পিলখানা থেকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ওয়্যারলেসযোগে প্রচার করায় ইপিআর-এর সুবেদার মেজর শওকত আলীসহ তিনজনকে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশপ্রেমিক জনসাধারণের সঙ্গে এ বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর ৮১৭ জন অকুতোভয় সদস্য তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ বীরত্বের জন্য এ বাহিনীর দু’জন বীরশ্রেষ্ঠসহ ১১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্য খেতাবপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি তাঁদের মহান আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, এ বাহিনীর ‘স্বাধীনতা পদক’ অর্জন মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানেরই অনন্য স্বীকৃতি।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই এ বাহিনীর পুনর্গঠন ও আধুনিকায়নের কাজ শুরুকরেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার এ বাহিনীকে যুগোপযোগী সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। এ লক্ষ্যে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-২০১০’ প্রণয়নসহ ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১’ এর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। বিজিবি পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় ৫টি নতুন রিজিয়ন স্থাপন করে কমান্ডস্তর বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। সীমান্তে বিজিবি’র কার্যকর নজরদারির লক্ষ্যে ৫টি রিজিয়নাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোসহ নতুন ৫টি সেক্টর, ১৫টি ব্যাটালিয়ন, ১৪২টি বিওপি ও ৩৪টি বিএসপি সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সুন্দরবনের গহীন অরণ্যের ৬০ কিলোমিটার জল-সীমান্তে ২টি ভাসমান বিওপি স্থাপন করা হয়েছে।
বিজিবি’র অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিওপিতে কর্মরত বিজিবি সদস্যদের বাসস্থান সেবা উন্নতকরণ, ভৌত সুবিধা এবং কাঠামোগত নিরাপত্তা জোরদারসহ বাহিনীর সার্বিক কল্যাণ এবং উৎকর্ষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরো ৭৩টি নতুন আধুনিক কম্পোজিট বিওপি নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘গত ১২ বছরে সৈনিকসহ এই বাহিনীতে ৩৩ হাজারের অধিক জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সরকার বিজিবিতে প্রথম নারী সৈনিক নিয়োগ দিয়ে নারীর ক্ষমতায়ণ নিশ্চিত করেছে। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাচে সর্বমোট ৮৬৮ জন নারী সৈনিক ভর্তি করা হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১’ এর আওতায় আরো ১৫ হাজার জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজিবি’র প্রশিক্ষণ কর্মকান্ডের কলেবর বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বিজিবিতে কর্মরত অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা, সৈনিক ও অসামরিক কর্মচারীদের উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য ‘বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ’ সাতকানিয়া চট্টগ্রামের পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গায় আধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধাসম্বলিত আরো একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সীমান্তের নিরাপত্তা ও শান্তিরক্ষা, সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধসহ অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন ও দুর্যোগকালীন উদ্ধার কর্মকান্ডে বিজিবি অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখতে এ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সততা, নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আন্তরিকভাবে পালন করবেন। তিনি ‘বিজিবি দিবস- ২০২১’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com