শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৪২ অপরাহ্ন

ঝালকাঠির সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালি ওএসডি

মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, ঝালকাঠি
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২২

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা-বরগুনা রুটে অভিযান-১০ নামক যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন লেগে হতাহতের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য জেলার সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালিকে ওএসডি করা হয়েছে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বিশেষ সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। সূত্র অনুসারে, সোমবার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে মঙ্গলবার সিভিল সার্জন স্বাস্থ্য অধিদফতরে যোগ দেবেন তিনি। ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, গত ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকা-ের ঘটনা শুনে দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল। তারপর তিনি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সকাল ১১টার দিকে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে আসেন। তখন হাসপাতালে এসে সিভিল সার্জন ডাক্তার রতন কুমার ঢালিকে না পেয়ে অসন্তুষ্ট হন তিনি। এরপর সিভিল সার্জন কোথায় জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই সময় তার অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগীয় কমিশনার দুর্ঘটনা কবলিত রোগীদের খোঁজ খবর নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। তবে হাসপাতাল ত্যাগ করার পূর্বে বিভাগীয় কমিশনার সিভিল সার্জনের কর্মস্থলে না থাকার বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অবহিত করেন।
এ ঘটনায় সোমবার সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালীকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে রতন কুমার ঢালি বলেন, ‘আমাকে সিভিল সার্জনের পদ থেকে সরিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।’ এর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লঞ্চ দুর্ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনার স্যার গত ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠি এসেছিলেন। এ সময় তিনি রোগেীদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ নিতে সদর হাসপাতালে আসেন। তখন আমাকে না পেয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিষয়টি হচ্ছে, তিনি যে হাসপাতালে এসেছেন সেটি আমাকে কেউ জানায়নি। আমি আশে পাশেই ছিলাম। তার আসার খবর শুনে আমি টেলিফোনে তার সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর দুপুর ২টার দিকে তার সঙ্গে আমি দেখাও করেছি। এরপরও তিনি সন্তুষ্ট হতে না পারায় লিখিতভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালককে জানিয়েছেন। আমি সোমবার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে মঙ্গলবার অধিদপ্তরে যোগদান করবো।’
গত ২৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাত সারে ৩ টা থেকে পরদিন শুক্রবার সকাল ৭ টা পর্যন্ত লঞ্চে দগ্ধ ৭০ জন যাত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
ঝালকাঠিতে বার্ণ ইউনিট না থাকায় সদর হাসপাতালে ১৫ জন রেখে বাকি সকল রোগীকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঝালকাঠি সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, লঞ্চে অগ্নিকান্ডের সময় সিভিল সার্জন ঝালকাঠিতে ছিলেন না, তিনি তার স্ত্রীর কর্মস্থল পিরোজপুরে অবস্থান করছিলেন। পিরোজপুরে অবস্থানের সময় তিনি ছুটি নেননি বলেও জানায় ওই সূত্র।
সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালীকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিয়ে যাওয়ার যে আদেশটি ঝালকাঠিতে পাঠানো হয়েছে সেটির স্বারক নম্বর চাইলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন জেলা ইপিআই সুপারিনটেনডেন্ট জিকে মতিয়র রহমান সিকদার। ঢাকায় যোগদানের জন্য মঙ্গলবার তিনি ঝালকাঠি ত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম কুমার দাস।
গত ২৪ ডিসেম্বর ভোর রাতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com