রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আলু চাষ করে লোকসানে আলু চাষিরা। দাম কম থাকায় আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না। ফলে চাষিরা পড়েছেন চরম বিপাকে। আলু আমদানি বেড়ে যাওয়ায় লোকসান নয়, লাভ কমেছে কৃষকের দাবি কৃষি বিভাগের। সরেজমিনে দেখা যায়, লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠে চাষিরা মহিলা-পুরুষ শ্রমিক নিয়ে আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ উপজেলায় ৬ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। অধিক লাভের আশায় কৃষকরা এবার আগাম আলু করেছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। মৌসুমের শুরুতে দাম বেশি হলেও বর্তমানে আলুর বাজারে ধস নেমেছে। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গ্র্যানোনা জাতের আলুর ১৫, অ্যাস্টেরিক ও ক্যারেজ, কাটি লাল ৩৫০ এবং দেশি পাকরি জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা মণ দরে। আগাম চাষ করায় বিঘা প্রতি ফরন হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ মণ। যার উৎপাদন খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। সার কীটনাশকের দাম বেশি হলেও আলুর দাম কম থাকায় উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। ৩৩ শতক জমিতে আগাম জাতের কাটি লাল আলু চাষ করেছেন উপজেলার হাবু গ্রামের ফেরদৌস আলম। তিনি বলেন, রোপনের ৬০ দিন বয়সে আমি আলু তুলেছি। জমিতে ফলন হয়েছে ৬৫ মণ। ফসলের উৎপাদন খরচ হয়েছে ২২ হাজার টাকা। ১৫০ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করেছি ১০ হাজার টাকা। তাতে লোকসান হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। বাজার দিন দিন যেভাবে কমে যাচ্ছে তাতে অনেক চাষিকে লোকসান গুণতে হবে আরও মোটা অংকের। আলু চাষি দুলাল বলেন, আলু রোপন থেকে শুরু করে নিড়ানি, বাঁধানো এবং বহনসহ যাবতীয় কাজ করেছি আমি এবং আমার পরিবারের লোকজন। বাহিরের শ্রমিককে নিতে হয়নি। তাই অন্যের থেকে বিঘা প্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ কম হয়েছে। এক বিঘা জমির আলু তুলেছি। ফলন হয়েছে ৬৫ মণ। ৩২০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে দুই হাজার টাকা লাভ হয়েছে। গঙ্গাচড়া বাজারের আলু ব্যবসায়ী লুৎফর হোসেন ও রাজবল্লভ গ্রামের বাবলু মিয়া বলেন, বাজারে এখন আগাম জাতের আলু প্রচুর উঠেছে। এসব আলু ঢাকা, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন শহরের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচামালের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে। আমজাদিনর ওপর তা নির্ভর করবে। উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, বাজারে এখন আলুর দাম তুলনামুলক কম। কারণ গত বছরের যেসব আলু রয়েছে সেগুলো শেষ হলে আশা করি কৃষকরা যথাযথ আলুর দাম পাবে।