জামালপুরে উন্নয়ন সংঘের ‘মর্যদা ও স্থায়িত্বশীলতার সাথে আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়তন(সিডস)’ প্রকল্পের আওতায় ২৪ জানুয়ারি সকালে দেওয়ানগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার, ক্র্যাচ ও শীতার্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফা।দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম। বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন চিকাজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ, চুকাইবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান সেলিম মিয়া, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার প্রতিনিধি ইমরান হোসেন, সিডস কর্মসূচির ব্যবস্থাপক মো. শামসুদ্দিন প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে স্ট্রমি ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ৫ জন প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার, একজনকে ক্র্যাচ বিতরণ করা হয়। এছাড়া ইসলামপুরে ৪টি বকশিগঞ্জে ১টি হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি কাপ আনামুর নামে জার্মানভিত্তিক একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সিডস কর্মএলাকার একশ শীতার্থ মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা করা হয়। এছাড়া হিজড়া ও সংস্থার অন্যান্য কর্মএলাকা আরো ১৫০টি কম্বল বিতরণ করা হবে বলে জানা যায়।সূত্র জানায় ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ কর্মএলাকার ২৫০০ প্রান্তিক পরিবারে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাত্রা আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে উন্নতি করার লক্ষ্যে নরওয়েভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা স্ট্রমি ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় উন্নয়ন সংঘ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সিডস প্রকল্প জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশিগঞ্জ উপজেলায় বহুমাত্রিক কার্যক্রম চলছে। শিক্ষা, জীবীকায়ন, যুবক, যুবতীদের আত্মকর্মসংস্থান, কিশোর, কিশোরীদের ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় কর্মএলাকার আড়াই হাজার পরিবার সরাসরি উপকার ভোগ করছে। জামালপুরে উন্নয়ন সংঘের সিডস কর্মসূচির উদ্যোগে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ কাজ উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফা। অপরদিকে পুষ্টি সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অপুষ্টিজনিত কারণে রোগব্যধির ঝুঁকি নিরসনের লক্ষ্যে উন্নয়ন সংঘের এরিয়া প্রোগ্রাম (এপি) এর উদ্যোগে কর্মএলাকায় পরিবার ভিত্তিক বাড়ির আঙ্গিনায় সঠিক নিয়মে সবজি আবাদের কলাকৌশল শিখানোর উদ্দেশ্যে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের দিনব্যপী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের বগালী গ্রামে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে সহায়কের দায়িত্ব পালন করেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ শাহানুজ্জামান। বগালী গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে অন্যান্যের মাঝে আলোচনায় অংশ নেন ভিডিসির সহসভাপতি ফরিদা বেগম, উন্নয়ন সংঘের এরিয়া প্রোগ্রামের সিডিও সাব্বির হোসেন রিয়াদ প্রমুখ। এদিন ২০জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এপি কর্মএলাকায় মোট ১৬০জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণ পরবর্তী ভূমি তৈরির পর নানা ধরণের শাকসবজির বীজ বিনামূষ্যে বিতরণ করা হবে।শিশুদের মৌলিক চাহিদা পুরণের জন্যে খানার স্থায়ী আয়ের উৎসে সহযোগিতা, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, ওয়াস, শিশু সুরক্ষা এবং অংশগ্রহণ কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজের অবস্থা উন্নতির লক্ষ্যে জামালপুরে শুরু হয়েছে এরিয়া প্রোগ্রাম (এপি) নামে ১০ বছর মেয়াদী কর্মসূচি। জামালপুরের ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন সংঘ এপি বাস্তবায়ন করছে।প্রশিক্ষণ সূত্র জানায় উন্নয়ন সংঘ কর্তৃক এরিয়া প্রোগ্রামটি জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষিরচর, শরিফপুর ইউনিয়ন এবং জামালপুর পৌরসভার ১, ১০, ১১, ও ১২ নং ওয়ার্ডে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় ৩৯টি গ্রামে ২৩ হাজার ২৮২ জন উপকারভোগী নির্বাচন করা হয়েছে। কর্মসূচির সকল কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ নিয়ে গ্রাম উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কার্যক্রমের মধ্যে জীবীকায়ন, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, ওয়াস এবং স্পন্সরশীপ অন্যতম। এরমধ্যে আবার খানা জরিপ, দক্ষতা উন্নয়ন, পরিবেশ সম্মত গ্রাম প্রতিষ্ঠা, জিঙ্ক ধান উৎপাদন, অতিদারিদ্রের উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দল গঠন, সক্ষমতার বিকাশ ঘটানো, প্রসবপূর্ব ও প্রসব পরবর্তী সেবা, শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, বিপদাপন্ন শিশুর তালিকা তৈরিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে অর্থায়ন করছে হংকং।