পাট ও পেঁয়াজের রাজধানী বলে খ্যাত ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা, সারা বছর এখানে কম বেশি প্রায় সব ধরনের ফসল চাষ হলেও পাট ও পেয়াজ সবাই চাষ করে। শীতকালে পেঁয়াজ মৌসুম হলেও থেমে থাকে না সরিষা চাষ। শীত মৌসুমে মাঠের পর মাঠ পেঁয়াজ, গম ও শীত কালীন শাক সব্জি চোখে পরলেও মাঝে মাঝেই চোখে পরে চোখ ধাধানো হলুদ সরিষা ফুল, পুরো সরিষা গাছ সবুজ হলেও ফুল গাঢ় হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে, এ যেন সবুজের মাঠে হলুদের সমারোহ। গাঢ় হলুদ সরিষা ফুলে যেন কৃষকের হাসি ফুটে উঠে। সালথা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় সব খানেই সরিষা চাষ হয়, মোট আবাদি জমির মধ্যে প্রায় ৬ শত হেক্টর জমিতে সরিষা ও রবি সরিষা চাষ হচ্ছে, তুলনামুলকভাবে কিছুটা বেশি জমিতে নগরকান্দায় চাষ হয়েছে এবার। রান্না করার পাশাপাশি খাঁটি সরিষার তেল বিভিন্ন উপকারে আসে। অনেক কৃষক এই সরিষা দিয়ে সারা বছর রান্না-বান্নার কাজে ব্যবহার করে। রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে, নদীর পাড়ে, বাড়ির উঠানেও কৃষকেরা সরিষা চাষ করে থাকে। অনেকেউ শখের বসে সরিষা চাষ করে থাকে। কয়েকজন সরিষা চাষির সাথে কথা হলে তারা জানায়, সরিষা হল মাঠের শোভা। সরিষা চাষের মাধ্যমে মাঠের সৌন্দর্য বেড়ে যায়। অনেকেই শখের বসে বাড়ির পাশে সরিষা চাষ করে, এই কারনে বাড়ির শোভা বৃদ্ধি পায়। সব ধরণের জমিতে সরিষা চাষ করা যায়, তেমন সার ও সেচের দরকার হয় না। সরিষা চাষে কৃষকেদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে। সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জীবাংশু দাস বলেন, অকাল বৃষ্টির কারনে কিছুটা সমস্যা তৈরি হলেও উপজেলায় প্রায় ৬ শত হেক্টর জমিতে এ বছর সরিষার আবাদ হচ্ছে। চলতি রবি মৌমুমে বারি সরিষা – ১৪, বারি সরিষা – ১৮, বিনা সরিষা – ৪, বিনা সরিষা – ৯ জাতের সরিষার আবাদ হচ্ছে। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষে আগ্রহী। এবার ভালো দামে বিক্রির আশা কৃষকদের মাঝে। কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এ বছর উপজেলার ১৫৩০ জন কৃষককে বিনামূল্যে স্যার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। সরিষা চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও সরিষা সহ যে কোন চাষাবাদ ও সমস্যার জন্য উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।