আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে পঞ্চমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। অ?্যান্টিগার ফাইনালে ভারতের যুবারা জিতেছে ৪ উইকেটে।
ফাইনাল ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ইংল্যান্ডের অধিনায়ক টম প্রেস্ট। তবে তার সিদ্ধান্তকে বেশ ভুলই প্রমাণ করেন ভারতের বোলাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রবি কুমারের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে আউট ওপেনার জ্যাকব বেথেল। এক ওভার পর ফিরে চতুর্থ ওভারে আবারও আঘাত রবির। এবার শিকার টুর্নামেন্টজুড়ে দারুণ ছন্দে থাকা ব্যাটসম্যান ইংল্যান্ডের অধিনায়ক টম প্রেস্ট। ৪ বল খেলে ০ রানেই প্রেস্ট বিদায় নেন রবির বলে ব্যাটের কোনায় লেগে বোল্ড হয়ে। রবির দেখাদেখি পিচে বোলিংয়ের জাদু দেখাতে শুরু করেন রাজ বাওয়া। বেথেল আউট হলেও টিকে ছিলেন আরেক ওপেনার জর্জ থমাস। তাকে দিয়েই শুরু রাজের। দলীয় ৩৭ রানের সময় ব্যক্তিগত ২৭ রানে থাকা থমাসকে ফেরান রাজ। এরপর একে একে তুলে নেন আরও তিনটি উইকেট। রাজের বোলিংয়ের সামনে যেন দাড়াতেই পারেলো না উইলিয়াম লুক্সটন, জর্জ বেল এবং রেহান আহমেদরা। এরপর আবার অ্যালেক্স হর্টনকে তুলে নেন কৌশল তাম্বে। ইংল্যান্ডের স্কোড় দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৯১। ১০০ রান করার আগেই ইংলিশদের অলআউট করার চিন্তা ভারতের। তবে সেখানেই বাঁধা হয়ে দাঁড়ান দাত কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকা জেমস রিউ। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন জেমস সেলস। দুজন মিলে করেন ৯৩ রানের জুটি। সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে রিউকে ফেরান রবি। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৮ উইকেটে ১৮৩। তারপর অবশ্য আর বেশিদূর এগোতে পারেনি ইংল্যান্ড। রবি আর রাজ আরও একটি করে উইকেট তুলে নিয়ে ফিরিয়ে দেন ইংল্যান্ডের শেষ দুই ব্যাটারকেও। ৪৪.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ১৮৯।
১৯০ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই আঘাত ভারতীয় শিবিরে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই রানের খাতা না খুলতেই জশুয়া বয়ডেনের বলে স্ট্যাম্পের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার অংক্রিশ রঘুবংশী। সেই ধাক্কা অবশ্য দারুণভাবে সামাল দিয়েছেন আরেক ওপেনার হার্নুর সিং আর তিনে নামা সেখ রশিদ। ৪৯ রানের জুটি গড়ে থমাস আস্পিনওয়ালের বলে ব্যক্তিগত ২১ রানে ফেরেন হার্নুর। হার্নুর ফিরে গেলেও অধিনায়ক যশ ধুলকে সাথে নিয়ে ৪৬ রানের জুটির পাশাপাশি নিজের অর্ধশত তুলে নেন রশিদ। তবে ঠিক ঐ অর্ধশত রানেই দলীয় ৯৫ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রশিদ।
রশিদ ফেরার পর আর টিকতে পারেননি ধুলও। ২ রান বাদেই সাজঘরে ফেরেন ভারতের অধিনায়ক। ভারতের স্কোড় তখন ৪ উইকেটে ৯৭। ইংল্যান্ড প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলো ম্যাচে ফিরতে। তবে তাদের সেই চেষ্টায় জল ঢালার কাজটি করেন নিশান্ত সিন্ধু আর বোলিংয়ে দারুণ করা সেই রাজ বাওয়া। দুজন মিলে গড়েন ৬৭ রানের জুটি। ৩৫ রান করে দলীয় ১৬৪ রানে ফিরে যান রাজ। তবে এদিকে নিশান্ত তুলে নেন নিজের ফিফটি।
রাজ ফেরার পর অবশ্য আবারও একটা শঙ্কা চেপে বসে। রাজের পর নামা কৌশল তাম্বে ফিরে যান ১ রান করেই। তবে বাকি সময়ে আর কোনো বিপদ আসতে দেননি নিশান্ত আর দিনেশ বানা। নিশান্ত ধীরস্থির থাকলেও দিনেশ ৫ বলে ২ ছক্কায় ১৩ রান করে ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাকে যেন আরও এগিয়ে আনেন। শেষমেশ ১৪ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে ৫ম বারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ভারতের যুবারা।
বোলিংয়ে ৩১ রান দিয়ে ৫ উইকেট আর ব্যাটিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৫৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংসের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ফাইনাল সেরার পুরষ্কার জিতে নেন রাজ বাওয়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল?্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৪.৫ ওভারে ১৮৯/১০ (জেমস রিউ ৯৫, জেমস সেলস ৩৪*, জর্জ থমাস ২৭; রবি ৯-১-৩৪-৪, বাওয়া ৯.৫-১-৩১-৫) ভারত অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৭.৪ ওভারে ১৯৫/৬ (শেখ রশিদ ৫০, নিসান্ত সিন্ধু ৫০, রাজ বাওয়া ৩৫; বয়ডেন ৭-১-২৪-২, আস্পিনওয়াল ৯-০-৪২-২)