৬৫৪ জন নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ৬৫ জন এবং বাকি নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সম্মাননা দেওয়া হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রেস্ট/সম্মাননা স্মারক, উত্তরীয়, শাড়ি ও স্যুভেনিয়র দেওয়া হয়।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ণাঢ্য ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
সব বীরাঙ্গনা বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিনামূল্যে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। জেলা, উপজেলাসহ দেশের বিশেষায়িত হাসপাতালসমূহে চিকিৎসা, ওষুধ, টেস্ট যা প্রয়োজন সবই প্রদান করা হচ্ছে।
এসময় মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা এবং আত্মসম্ভ্রম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন নারী বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের আত্মত্যাগ অপরিসীম। বিধবা হতে পারেন জেনেও তারা স্বামীদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়েছেন। পুত্রহারা হতে পারেন জেনেও মায়েরা পুত্রদের রণক্ষেত্রে পাঠিয়েছেন। নির্যাতিত হতে পারেন জেনেও কন্যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে ও জাতীয় পর্যায়ে একসঙ্গে দেশব্যাপী নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিক সম্মাননা প্রদান করা হয়নি। এবারই আলাদাভাবে বাংলাদেশের সব নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে একই দিনে, একই সময়ে, একই সঙ্গে সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষের থিম সং এবং নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরবময় ও সংগ্রামী জীবনের ওপর নির্মিত গীতি আলেখ্য পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাকদুমা নার্গিস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা খানম সাকী এবং গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া শিরিন অনুভূতি প্রকাশ করেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার অনুষ্ঠানস্থলে এবং জেলা প্রশাসকরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।