‘কর্মহীন ও অনাহারী দেশবাসীর সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নিষ্ঠুর রসিকতা করছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী গত পরশু বলেছেন ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই।’ আপনাদের কিছুই করার নেই, তাহলে দেশটা চালায় কে? দেশ কী তাহলে অদৃশ্য শক্তি চালাচ্ছে? মন্ত্রীর এমন বক্তব্য দুর্নীতির পক্ষে জোরালো সাফাই ছাড়া কিছুই না। কর্মহীন, অর্ধাহার, অনাহারক্লিষ্ট দেশবাসীর প্রতি এটি মন্ত্রীর নিষ্ঠুর রসিকতা।’ গতকাল রোববার (২০ ফেব্রয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিএনপি পাঁচ বছরের ক্ষমতাকালে দেশকে ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ কোন দিক দিয়ে এগিয়েছে, সেটির বিষয়ে কিছুই বলেননি। আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে যে পেছনের দিকে নিয়ে গেছে, সে বিষয়ে কিছুই বলেননি। ব্যাংক লুট, দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচারে যে সরকার দায়ী, তাদের উপদেষ্টার মুখে এমন কথাই মানায়। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী শাসনে ফরমায়েশি রায় এখন বিচার বিভাগের রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এ শতকে সভ্যতার সবচেয়ে বড় সংকট সৃষ্টি করেছে আওয়ামী সরকার। এরা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আদিম হিংস্রতা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।’
বিএনপি ও আওয়ামী শাসনামলে দ্রব্যমূল্যের তুলনামূলক তথ্য তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, বিএনপির আমলে মোটা চালের দাম ছিল ১৬ থেকে ১৭ টাকা, যা বর্তমানে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। চিকন চালের দাম ছিল ২২ থেকে ২৪ টাকা, যা বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সয়াবিন তেলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা, বর্তমানে দাম ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। গরুর গোশতের দাম ছিল কেজিপ্রতি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, যা বর্তমানে ৬৫০ টাকা। মসুর ডালের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা, যা বর্তমানে ১৩০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা, এখন তা ১৭৫ টাকা। পেঁয়াজের কেজি ছিল ৮ থেকে ১০ টাকা, যা বর্তমানে ৫৫ টাকা। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।