চলছে অমর একুশে বইমেলা-২০২২। গতবছর করোনায় ছন্দহীন থাকলেও এবার প্রথমদিন থেকেই জমে উঠেছে বইমেলা। তবে গত বৃহস্পতিবার মেলার ১৭তম দিন মেলা প্রাঙ্গণ ছিল কিছুটা ফাঁকা। আজ ১৮তম দিন মেলার তৃতীয় শুক্রবার সকাল থেকেই জমে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে মেলার দ্বার খোলার পর থেকেই আসতে শুরু করে শিশু-কিশোরের দল। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বড়দের আগমনের হার। প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, মেলার অন্য দুই শুক্রবারের তুলনায় আজ সকালে পাঠক ও বিক্রি বেশি।
পাঠকরা বলছেন, মার্চের বিকালে গরম বেশি ও ধুলোবালি উড়তে থাকায় সকালেই অনেকে আসছেন। মেলায় কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী ফাহিম রেজার সঙ্গে। তিনি ধানমন্ডি থেকে সহধর্মিণী উপমা চৌধুরীকে নিয়ে এসেছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মার্চ মাসে গরম বেশি পড়ে, বিশেষ করে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত। এই গরমের কারণে বিকালে বাতাসে ধুলোবালি উড়তে থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আমরা সকাল সকাল এসেছি। বিকালে ভিড় থাকবে, ধুলোবালিও বেশি উড়বে। এখন করোনার প্রকোপ কম আছে, তবে মানুষের উচিত আরও সতর্কতা অবলম্বন করা। মেলায় এসে অনেক মানুষ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে এটি অপ্রত্যাশিত। এ দিন সকাল ১১টা থেকে ছিল ‘শিশু প্রহর’। নানা বয়সের শিশুদের পদচারণায় মুখরিত ছিল শিশু চত্বর। অভিভাবকদের হাত ধরে এক স্টল থেকে আরেক স্টলে ঘুরে বই কিনছে তারা। মেলায় কথা হয় লিটল গার্লস স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়াম শান্তার সঙ্গে। সে বলে, ‘আপুর সঙ্গে মেলায় এসেছি, কমিক্স কিনেছি, কালার পেন্সিল কিনেছি, অনেক ঘোরাঘুরি করেছি, মজা হয়েছে।’ এমনই আনন্দমুখর ছিল মেলায় আসা প্রতিটি শিশু।
শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুশি অভিভাবকরাও। ছোট ভাই আরিয়ান মুন্নাকে নিয়ে মেলায় এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামান্না তাসনীম। তিনি বলেন, ‘ছোটদের মুখে হাসি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য মনে হয় আমার কাছে। আর মেলায় এসে ছোটভাই নতুন বই পেয়ে অনেক খুশি। তার মুখে হাসি দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগছে।’
ছোটদের মেলা প্রকাশক ফয়সাল বলেন, ‘অন্য শুক্রবারগুলোর তুলনায় আজ সকালে পাঠক বেশি। বলতে গেলে সকাল থেকেই মেলা জমে উঠেছে। বিকাল ভিড় আরও বাড়বে।’ শুক্রবার সকাল থেকে জমে ওঠে বইমেলা টইটম্বুরের বিক্রয়কর্মী সাদিয়া বলেন, ‘আজ সকাল থেকে বিক্রি ভালো হচ্ছে। আমাদেরও ভালো লাগছে। আশা করছি, বিকালে আরও ভিড় বাড়বে, বিক্রিও বাড়বে।’
বাংলা প্রকাশের বিক্রয়কর্মী নুরুজ্জামান বলেন, ‘অন্য শুক্রবারগুলোতে সকালে ছোটদের বই বিক্রি বেশি হলেও আজ বড়দের বইয়ের বিক্রিও বেশ ভালো।’