কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পের শীর্ষনেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ফতোয়া দেওয়ার অভিযোগে মুফতি জকোরিয়াকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে ১৪-এপিবিএন পুলিশ সদস্যরা । আটক ব্যক্তি আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) ওলামা কাউন্সিল প্রধান ছিলেন বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
উখিয়া থানার ওসি তদন্ত গাজী সালাহ উদ্দিন জানান, এপিবিএনের হাতে আটক জকোরিয়াকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, আটক জকোরিয়া কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্ট ডি/৮ ব্লকের আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মহিবুল্লাহ হত্যাকা-ের ফতোয়াদাতা এবং কথিত ‘আরসা’ ওলামা শাখার প্রধান কমান্ডার। মুহিবুল্লাহ হত্যার পর দীর্ঘদিন তিনি পলাতক ছিলেন। গতকাল রবিবার (৬ মার্চ) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ১৪- এপিবিএন অধিনায়ক (এসপি) নাইমুল হক। অধিনায়ক নাইমুল হক আরও বলেন, শনিবার রাতে উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্প পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে কথিত আরসার ওলামা শাখার প্রধান কমান্ডার মৌলভী জকোরিয়াকে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, ‘জকোরিয়া ২০১৫ মিয়ানমার থেকে এসে ফেরত যায়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে সে দেশ থেকে পালিয়ে উখিয়ার লম্বাশিয়ায় আশ্রয় নেন। এরপর ২০১৯ সালে আরসা ফতোয়া বিভাগের দায়িত্ব পান জকোরিয়া। ২০২০ সাল থেকে আরসার কুতুপালং ক্যাম্প এলাকার ওলামা শাখার প্রধান কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ক্যাম্পের বিভিন্ন অপরাধ কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়লে তখন তার সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয় রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ের শীর্ষনেতা মুহিবুল্লাহর।’
এপিবিএনের এ কর্মকর্তা আরও জানান, মুহিবুল্লাহ হত্যাকা-ের পর ক্যাম্প এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান শুরু হলে জকোরিয়া আত্মগোপনে চলে যান। কিন্তু তাকে ধরার জন্য ১৪ এপিবিএন হত্যাকা-ের পর থেকেই গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। দীর্ঘ চার মাস প্রচেষ্টায় লম্বাশিয়া ক্যাম্প থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুস্কৃতিকারীদের মদতদাতাদের শীর্ষ পরামর্শক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে নিজ কার্যালয়ে অস্ত্রধারীর গুলিতে নিহত হন এআরএসপিএইচ চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ। পরেরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত সরাসরি মুহিবুল্লাহ কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া আজিজুল হকসহ জড়িত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ১৪ এপিবিএন। যাদের চার জন ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।