অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশকদের ‘অর্ধেক খরচে’ স্টল বা প্যাভিলিয়ন করার কথা জানানো হলেও মাঝপথে এসে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে বাকি অর্ধেক টাকা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর এতে প্রকাশকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
অমর একুশে বই মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদের গত ২ মার্চ সাক্ষরিত চিঠিতে এ বকেয়া চাওয়া হয়। যদিও প্রকাশকরা বলছেন, অর্ধেক দাম পরিষদ করে দোকান দেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় তারা নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করেই মেলায় অংশ নিয়েছেন। এখন এসে ‘বকেয়া’ হিসেবে যা চাওয়া হচ্ছে তা তাদের হিসাবের বাইরে।
এদিকে বাংলা একাডেমি বলছে, তাদের পক্ষ থেকে একবারের জন্যও বলা হয়নি অর্ধেক মূল্যের কথা। প্রকাশক নেতারা মন্ত্রণালয়ে প্রণোদনার কথা বলেছিল, তার সাথে এই স্টল মূল্যের সম্পর্ক নেই।
প্রকাশকদের উদ্দেশে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনার নামে … নম্বর প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও ভাড়া বাবদ (ভ্যাটসহ) আপনার কাছ থেকে একাডেমির টাকা পাওনা রয়েছে। চিঠিপ্রাপ্তির দুই কর্মদিবসের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকে সেই টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পরিচালক (অর্থ) মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমাদের অর্ধেক মূল্যে স্টল বরাদ্দের কথা জানানো হয়। সেটি পরিশোধ করে আমরা নিজ খরচায় স্টল সাজিয়েছি। এখন বকেয়া কোনটাকে বলা হচ্ছে সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, কোভিডকালে কয়েক বছর ধরেই খাপছাড়া মেলা হচ্ছে। আমরা কোনোধরনের প্রণোদনা পাইনি। ফলে অর্ধেক দামে মেলা করতে পারার সুযোগটা আমাদের ক্ষতি কিছুটা লাঘব করবে বলে সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনোরকম আলোচনা না করে এধরনের চিঠি পেয়ে আমরা বিস্মিত। এর আগে আমরা চিঠি পেয়ে যোগাযোগ করলে সদস্য সচিব বলেছেন, এটা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত। আজ আবার চিঠি পাঠিয়েছেন। মন্ত্রী বলেছিলেন অর্ধেক দামে মেলা করার সুযোগ দেওয়ার কথা। এরকম চিঠি না দিয়ে মহাপরিচালক কাউন্সিল ডেকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারতেন। আজ আবার যাবো আমরা, দেখি কী বলেন।
এদিকে একাধিক প্রকাশক জানেনই না কেন তাদের চিঠি দেওয়া হলো বা আদৌ চিঠি দেওয়া হয়েছে কিনা। এ পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার (১২ মার্চ) দ্বিতীয়বারের মতো চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন অমর একুশে বই মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ প্রকাশক ইতোমধ্যে পুরো টাকাটা দিয়ে দিয়েছে। দেড়শ প্রকাশক এখনও দেননি। বাংলা একাডেমি স্টল বরাদ্দের লটারিতে যাতে সব প্রকাশক সময় মতো অংশ নিতে পারেন সেকারণে শুরুতে অর্ধেক মূল্য পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন মেলা ১৫ দিন হতে পারে সেই শঙ্কাও ছিল। এখনতো পুরো মাসজুড়েই মেলা হলো। নির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাকি টাকা চাওয়া হয়েছে।