ব্রম্মপুত্র, হলহলি, সোনাভরি, জিঞ্জিরাম, কালাপানি ও ধর্নী নদী। এ ৬ টি নদীর অববাহিকায় উপজেলা রৌমারী। এক সময় এ নদী গুলোতে সারা বছরই অথৈ পানি থাকতো। পানির ¯্রােত ও মাছের কলহলে মানুষ খুশিতে মাছ ধরতো এবং ব্যবসা বানিজ্যে ও যাতায়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো নদী গুলো। এখন আর সেদিন নেই। কালের পরিক্রমায় উপজেলার বুকচিরে বয়ে যাওয়া সেই নদী হাড়িয়ে ফেলছে তার স্বকীয়তা। নদীতে চাষ হচ্ছে নানা ফসলের। আনন্দের সাথে বিভিন্ন উপায়ে মাছ ধরা, সূর্যের আলো কমিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নৌকায় এপার ওপার বয়ে যাওয়া এবং আনন্দের সাথে ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য থেকে মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে। কুড়িগ্রামের রৌমারীর ব্রম্মপুত্র নদের মুখ অববাহিকা থেকে পাখিউড়ার ব্রীজের দিকে হলহলি, বাঘমারা ব্রম্মপুত্র নদের মুখ থেকে জিগ্নীকান্দি, টাপুরচর দিকে বয়ে যাওয়া সোনাভরি, দাঁতভাঙ্গা ইটালুকান্দা ও ভারতীয় সীমান্ত ব্রম্মপুত্র মুখ থেকে আঁকাবাকা বয়ে যাওয়া জিঞ্জিরাম, চর লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রাম ঘেষে পশ্চিম পাশে কালাপানি, ভারত থেকে বয়ে আসা বড়াইবাড়ি-চুলিয়ারচর গ্রামের পাশদিয়ে ধর্নী নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে নদীর আকার। পৌষ, মাঘ মাস পরার আগেই নদী হয়ে যায় পানি শুন্যতা। নদীর তলদেশে সামান্য পানি থাকলেও নদীতে চাষাবাদ হচ্ছে পুরোদমে। নদীর গভীরতা বলতে আর কিছু নেই। নদীর বেশীর ভাগই এখন চর পড়ে সমতল ভূমির মতো হয়েছে। বরো ধান, গম, তিল, তিশি, ধনিয়া, চিনা, বাদাম, মরিচসহ বিবিন্ন জাতের ফসলের চাষ হচ্ছে নদীর অববাহিকায়। এভাবেই এ সকল নদী হারিয়ে যাচ্ছে স্বকীয়তা। নদীর পারের গ্রামের জালাল, ফরিদ, নাসির, হাসু, কাশেমসহ আরো অনেকেই জানান, ১০ বছর আগেও সব সময় নদীতে পানি থাকতো। বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুল কাদের সরকার বলেন, ব্রম্মপুত্র নদ থেকে বয়ে আসা হলহলি ও সোনাভরি নদীতে এক সময় অথৈ পানির কলকলি শব্দ সোনাযেত এবং দেশীয় মাছ ধরার আনন্দ ছিল কত। বর্তমানে নদীতে মাটি পড়ে গভীরতা হারিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। নদী খনন করে আবারো গভীরতা ফিরে এনে দেশীয় প্রজাতির মাছের আমদানী বাড়িয়ে মানুষের দেহে আমিষের প্রয়োজনীয় বাড়ানো প্রয়োজন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, বর্তমানে নদীর নাব্যতা হারিয়ে যাচ্ছে। তবে হলহলি, সোনাভরি ও জিঞ্জরাম নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে দেশীয় প্রজাতির মাছ বাড়ানো দরকার এবং মানুষের দেহে আমিষের অভাব মিটানো প্রয়োজন। সাবেক এমপি রুহুল আমিন জানান, জিঞ্জিরাম ও ধর্নী নদীর গভিরতা না থাকায় নদীর নাম সৌন্দর্য্য ও দেশীয় প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এ নদী গুলো খনন করে ঐতিহ্য বজায় ফিরিয়ে এনে দেশীয় প্রজাতির মাছ টিকে রাখা প্রয়োজন।