নেতৃত্ব মহান আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামত। মহান আল্লাহর বিধানমতো এই দায়িত্ব পালন করা গেলে, তা পরকালীন মুক্তির মাধ্যম হতে পারে। এর বিপরীতে তাতে মহান আল্লাহর বিধান অমান্য করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার হয়, তাহলে তা মানুষের ইহকাল-পরকাল ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই মুমিনের উচিত এ বিষয়ে সতর্ক থাকা। নেতৃত্বের সৌন্দর্য হলো, অনুসারীদের সঙ্গে নমনীয় আচরণ করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যেসব মুমিন তোমার আনুগত্য করে তাদের জন্য তুমি তোমার অনুকম্পার বাহু প্রসারিত করো। ’ (সুরা : আশশুআরা, আয়াত : ২১৫)
যেসব নেতা তাদের অনুসারীদের প্রতি সদয় হয়, মহানবী (সা.) তাদের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি মহানবী (সা.)-কে আমার ঘরে বলতে শুনেছি, (তিনি বলেছিলেন) হে আল্লাহ, যে আমার উম্মতের ওপর কোনো ধরনের কর্তৃত্বভার লাভ করে এবং তাদের প্রতি রূঢ় আচরণ করে, তুমি তার প্রতি রূঢ় হও, আর যে আমার উম্মতের ওপর কোনো ধরনের কর্তৃত্ব লাভ করে তাদের প্রতি নম্র আচরণ করে তুমি তার প্রতি নম্র ও সদয় হও। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৬১৬)
নেতা অনুসারীদের মতে পরস্পর সহানুভূতি থাকলে তাদের কাজে মহান আল্লাহর রহমত আসে। আল্লাহর সাহায্য আসে। ফলে নেতৃত্ব আরো দৃঢ় হয়, কল্যাণকর হয়। কিন্তু নিজেদের মধ্যে সহানুভূতি না থাকলে তা থেকে আল্লাহর রহমত উঠে যায়। যার প্রভাব তাদের কাজে কর্মেও পড়ে। আল-মিকদাম ইবনে শুরাইহ (রহ.) থেকে তার পিতা সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-কে ইবাদতের উদ্দেশে নির্জনবাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রাসুল (সা.) নির্জনবাসের জন্য এ টিলাভূমিতে যেতেন। তিনি একবার নির্জনবাসে যাওয়ার ইচ্ছা করেন এবং আমার কাছে সদকার একটি আনাড়ি উট পাঠিয়ে দেন। তিনি বললেন, হে আয়েশা, সদয় হও। কেননা সহানুভূতি কোনো জিনিসের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে। আর সহানুভূতি উঠে গেলে তা ত্রুটিযুক্ত হয়। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪৭৮)
তাই কাউকে মহান আল্লাহ নেতৃত্বের নিয়ামত দান করলে তার উচিত এর মূল্যায়ন করা। অনুসারীদের সঙ্গে সদয় আচরণ করা। ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ তার নেতৃত্বে কল্যাণ দান করবেন। আবুদ দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন; যে ব্যক্তিকে নমনীয়তার অংশ দেওয়া হয়েছে তাকে কল্যাণের অংশ দেওয়া হয়েছে। নমনীয়তার অংশ থেকে যে ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা হয়েছে তাকে কল্যাণের অংশ হতে বঞ্চিত করা হয়েছে। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০১৩)