শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর এলাকায় জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছয়জনে দাঁড়িয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে তাৎক্ষণিক তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদরদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এমভি রুপসি-৯ নামের জাহাজটি এম এল আফসার উদ্দিন লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চে থাকা ৫০-৬০ যাত্রী পানিতে ডুবে যান। কয়েকজন সাঁতরিয়ে তীরে উঠলে পরলেও এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, মরদেহ আমাদের হেফাজতে রয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন ঘটনাস্থলে ও একজন হাসপাতালে মারা গেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে বন্দর থানার আল আমিননগর ও সৈয়দপুরের মাঝামাঝি কয়লাঘাট এলাকায় নির্মিতব্য নাসিম ওসমান ব্রিজের কাছে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ ডুবে যায়। এরপর উদ্ধার অভিযানে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বস্তা ধরে ভেসে গিয়ে প্রাণে বাঁচলেন পরিচ্ছন্নকর্মী মোকছেদা:
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় পণ্যবাহী কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চের যাত্রী ছিলেন মোকছেদা বেগম। লঞ্চডুবে যাওয়ার পর একটি বস্তা ধরে ভেসে ছিলেন তিনি। পরে একটি ট্রলার এসে তাকে উদ্ধার করলে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। নারায়ণগঞ্জ ৩ শ’ শয্যা হাসপাতালে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করেন মোকছেদা।
তিনি বলেন, দুপুর ২টার কিছুক্ষণ আগে নারায়ণগঞ্জ সেন্ট্রাল লঞ্চঘাট থেকে ছেড়ে আসে যাত্রীবাহী লঞ্চটি। লঞ্চটিতে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিলেন। কার্গো জাহাজটি যখন পেছন থেকে লঞ্চটিকে ঠেলছিল তখন দোতলায় ছিলেন মোকছেদা। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। এরপর নদীতে ভেসে থাকা একটি বস্তা আকড়ে ধরেন তিনি। পরে একটি ট্রলার এসে তাকে উদ্ধার করে। মোকছেদা বলেন, ‘আল্লাহ জানে বাঁচাইছে। নইলে আজকে বাঁচতাম না। অনেক লোক তীরে উঠতে পারে নাই। আমিও পারতাম না। হায়াত আছে দেইখা বাঁচছি। একটা বস্তা ধইরা ভাইসা ছিলাম।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আল-আমিন নগর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে রূপসী-৯ নামে পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় মুন্সিগঞ্জগামী এম এম আশরাফ উদ্দিন নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দিকে রয়েছেন নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। তবে লঞ্চডুবির ঘটনায় নিখোঁজের সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, অন্তত ৩০ জন যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।