টপ অর্ডারে ভরাডুবি। মিডল অর্ডারে হাল ধরলেন কয়েকজন। তরুণ আফিফের ব্যাটে এলো ফিফটি। থাকলো মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজের প্রতিরোধ গড়া ইনিংস। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দুই শ’ রানও ছুতে পারলো না বাংলাদেশ। গত রোববার জোহানেসবার্গে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের রান ৯ উইকেটে ১৯৪। সিরিজে সমতা আনতে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার মাত্র ১৯৫ রান। জোহানেসবার্গের উইকেটে এমন টার্গেট স্বাগতিকদের জন্য আহামরি কিছু না। তারপরও সব নির্ভর করছে বাংলাদেশের বোলারদের উপর। অল্প পুঁজি নিয়ে কতটা লড়াই করতে পারে মোস্তাফিজরা। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এনগিডির লাফিয়ে উঠা বল তামিমের ব্যাট ছুয়ে ক্যাচ জমে মাহারাজের হাতে। ৪ বলে মাত্র ১ রান করে ফেরেন বার্থডে বয় তামিম।
ওয়ান ডাউনে নামা সাকিবও সুবিধা করতে পারেননি। পরের ওভারেই তিনি নেন বিদায়। ৬ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি আগের ম্যাচের নায়ক। রাবাদার বলে তিনি ক্যাচ দেন ভেরিনের হাতে। ৮ রানে দুই উইকেট নেই বাংলাদেশের। ভরসা ছিল লিটনের উপর। পারেননি তিনিও থিতু হতে। দলীয় ২৩ রানে তিনি রাবাদার শিকার। ২১ বলে ১৫ রানের মন্থও ইনিংসের পর ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে ককের গ্লাভসে। এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলার চেষ্টা করছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম। তার সঙ্গে তরুণ ইয়াসির আলী। যার ব্যাটে গত ম্যাচে এসেছিল ফিফটি। এই জুটি জমেনি। ১২তম ওভারে রাবাদার বলে মাহারাজের হাতে ক্যাচ দেন ইয়াসির। ১৪ বলে মাত্র দুই রান করেন তিনি।
পরের ওভারে বিদায় নেন মুশফিকুর রহীম। পারনেলের বলে এলবির শিকার হন তিনি। ৩১ বলে কোন বাউন্ডারি ছাড়া ১২ রান করে ফেরেন সাম্প্রতিক সময়টা খারাপ যাওয়া মুশফিক।
৩৪ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে কাপছে তখন বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে হাল ধরার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। অনেকটা সফলও তারা। ৭৪ বলে মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ হোসেন উপহার দেন প্রথম প াশ ছোঁয়া জুটি। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙেন দলে ফেরা প্রোটিয়া স্পিনার তাবরাইজ শামসি। তার ফাঁদে পা দেন মাহমুদউল্লাহ। লেগে ঘুরানোর চেষ্টায় ধরা পড়েন লেগ স্লিপে। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনারের বলে ব্যাটের কানায় লেগে আসা ক্যাচ হাতে জমান ইয়ানেমান মালান। ভাঙে ৮৭ বল স্থায়ী ৬০ রানের জুটি। কঠিন সময় পার করে দিয়ে বাজে শটে থামেন মাহমুদউল্লাহ। তিন চারে ৪৪ বলে তার রান ২৫। এরপর আফিফের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলের ভীষণ বিপদের সময় নেমে দারুণ ব্যাটিংয়ে ফিফটির দেখা পান আফিফ হোসেন। ৭৯ বলে এসেছে তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় প াশ।
ফিফটির পরও আফিফ ছিলেন দুরন্ত। সঙ্গে মিরাজও দিচ্ছিলেন দারুণ সঙ্গে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সে ুরির আভাস দিচ্ছিল আফিফের সামনে। তবে এতেই যেন বাধ সাধেন প্রোটিয়া পেসার রাবাদা। তিনিই ভাঙেন ১১২ বলে ৮৬ রানের জুটি। রাবাদার বলে প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভ’মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আফিফ। ১০৭ বলে তার ব্যাটে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৭২ রান। হাকিয়েছেন নয়টি চার। নেই কোোঁ ছক্কা। ৪৫.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৭ উইকেটে ১৮০। এরপর স্কোর শিটে এক রান যোগ হতেই বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজও। একই ওভারের প ম বলে তিনি ক্যাচ দেন ডেভিড মালানের হাতে। ৪৯ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ৩৮ রান করেন মিরাজ। বল হাতে আগুন ঝড়ান দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ক্যাগিসো রাবাদা। ১০ ওভারে ৩৯ রানে তিনি তুলে নেন ৫ উইকেট। এনগিডি, পারনেল, শামসি ও ডসন নেন একটি করে উইকেট। বাংলাদেশ স্কোয়াড : লিটন দাস, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ, ইয়াসির আলী, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান।