শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন

দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি বেসরকারি খাত: রুশনারা আলী

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী বলেছেন বেসরকারি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) গুলশান সেন্টারে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটেনের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, এপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, এসবিকে টেক ভেঞ্চার-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মিরান আলী এবং ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনউদ্দিন হাসান রশিদ যোগদান করেন।
রুশনারা আলী বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে বাংলাদেশের বেশ সাফল্য রয়েছে। তবে এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় খুবই জরুরি।’ বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণকে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। দুদেশের বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের পার্টনারশিপ সুদৃঢ়করণের ওপর তিনি জোরারোপ করেন। সেইসঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসনে সক্ষম হলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেশটির দারিদ্র্য বিমোচনে কতটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, সেটা নিরূপনে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।’ বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটেনের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, ‘বেসরকারি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।’ তিনি জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা ও আর্থিক খাতে ব্রিটেনের দক্ষতা রয়েছে। তবে শিল্প খাতের পণ্যের নতুন নতুন ডিজাইনে বাংলাদেশিদের দক্ষতা উন্নয়নে ব্রিটেন বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রামের মিরসরাইতে স্থাপিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন, ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা সেখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘২০২১ সালে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪.১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশে ব্রিটেনের বিনিয়োগ প্রায় ২.৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’ তিনি জানান, ব্রিটেন বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য এবং আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে রফতনির এ ধারা আরও বৃদ্ধি পাবে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্রিটেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাদুকা, হালকা-প্রকৌশল, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্য শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার ২০২৯ সালের পরও বর্ধিতকরণের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও ব্রিটেনে রফতানির ক্ষেত্রে রুল অব অরিজিন সুবিধাকে আরও সহজীকরণ ও বর্ধিতকরণেরও প্রস্তাব করেন। সেইসঙ্গে কৃষি ও খাদ্যপণ্য রফতানি সম্প্রসারণে বিদ্যমান ‘টেকনিক্যাল ব্যারিয়ার্স টু ট্রেড (টিবিটি)’ হ্রাসের আহ্বান জানান।
এপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘বাংলাদেশের পোশাক খাত, ওষুধ শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পে বেশ দক্ষতা থাকলেও ডিজাইনিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে আছে। তাছাড়া ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশ এখন অনেক ভালো করছে এবং এ খাতে ব্রিটেনের ব্যাবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। এসবিকে টেক ভেঞ্চার-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকিং ইকো-সিস্টেম তৈরিতে ব্রিটিশ বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মিরান আলী বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়েছে এবং কমপ্লায়েন্সের দিক দিয়ে বাংলাদেশের কারখানাগুলো অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। তবে ভালো মানের ডিজাইনিং ও সিনথেটিক সুতা উৎপাদনে ব্রিটিশ বিনিয়োগ আকর্ষণে তিনি একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনউদ্দিন হাসান রশিদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে ভালো মানের নার্স তৈরিতে আমরা যথেষ্ট পিছিয়ে আছি।’ এ ক্ষেত্রে ব্রিটেন সহযোগিতা করতে পারে বলে তিনি মনে করেন। তাছাড়া শিক্ষা খাতেও ব্রিটেনের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং বাংলাদেশের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আরমান হক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com