ইউক্রেনের বুচা ও ইরপিন শহরে বেসামরিক নাগরিক হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এসব শহরে বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করে রুশ সেনাদের ‘ঘৃণ্য আক্রমণ’ যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ। রাশিয়া যতই মিথ্যাচার করুক, তারা আর সত্য লুকাতে পারবে না। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, যুদ্ধে হারতে বসে ‘মরিয়া’ হয়ে উঠেছেন পুতিন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। বিবৃতিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরদার করা এবং ইউক্রেনে সামরিক সাহায্য বৃদ্ধির আশ্বাস দেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ক্রেমলিন যত অস্বীকারই করুক বা ভুল তথ্য দিক না কেনো, তারা সত্য গোপন করতে পারবে না। পুতিন এখন মরিয়া, তার আগ্রাসন ব্যর্থ হচ্ছে এবং ইউক্রেনের সংকল্প এখন যে কোনো সময়ের থেকে বেশি দৃঢ়। জনসন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, যতদিন না ন্যায়বিচার নিশ্চিত হচ্ছে বৃটেন থামবে না। রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধ তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে সাহায্য করার জন্য বিশেষ তদন্তকারী নিয়োগের কথা জানান জনসন। এছাড়া ইউক্রেনের জন্য মানবিক সাহায্য বাড়ানো হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। এর আগে বুচা শহর থেকে কমপক্ষে ২০ জন বেসামরিক নাগরিকের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাদের অনেকেরই হাত পেছন থেকে বাধা ছিল। এরপর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো দাবি করে আসছে, রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত করেছে। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে মস্কো। ইউক্রেন জানিয়েছে, রাজধানী কিয়েভের আশেপাশের শহরগুলো আবারও দখলে নিয়েছে তাদের সেনারা। তবে রুশ সেনারা সরে যাওয়ার পরই সেখানে ধ্বংসযজ্ঞের আসল চিত্র বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে। এখন ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা খুব সম্ভবত যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির মুখপাত্র সের্গেই নিকিফোরভ বলেন, এসব শহরে বেসামরিক নাগরিকদের মরদেহ এবং গণকবরের সন্ধান পেয়েছে তারা।
বিবিসিকে নিকিফোরভ বলেন, আমরা যেসব মরদেহ পেয়েছি তাদের অনেকের হাত ও পা বাধা ছিল। তাদের মাথায় পেছন থেকে গুলি করা হয়েছে। নিশ্চিতভাবেই তারা বেসামরিক নাগরিক ছিল। আমরা অনেক অর্ধেক পোড়ানো মরদেহ পেয়েছি। দেখে মনে হচ্ছে, রুশ সেনারা তাদের অপরাধ লুকানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু যথেষ্ট সময় পায়নি। এর আগে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেন, বুচা ও ইরপিনে যে ভয়ঙ্কর অপরাধ হয়েছে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাশিয়াকে তা ঢেকে দিতে দেয়া যাবে না। একইসঙ্গে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বৃটেনের পাশাপাশি অন্য পশ্চিমা দেশগুলোও এই হত্যাকা-ের নিন্দা জানিয়েছে। এছাড়া এই হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে মস্কোর বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান চার্লস মিশেল। টুইটারে তিনি #BuchaMassacre লিখে একটি হ্যাশট্যাগও দিয়েছেন।