পাকিস্তানের অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ক্ষমতায় থাকাকালে তার দল পিটিআই কিছু ভুল করেছে। অতীতের এসব ভুলের জন্য ‘চড়া মূল্য’ দিতে হয়েছে। মঙ্গলবার লাহোরে দলীয় এক সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডন। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী নির্বাচনে দলের ‘আদর্শিক’ সদস্যদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও জানান ইমরান খান। এদিন ফের পাকিস্তানের বর্তমান সংকটের নেপথ্যে বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেন ইমরান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিদেশিদের সঙ্গে এক হয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিরোধীরা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করেছে।
বিদেশের মাটিতে বসে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইমরান খান। ‘বিদেশিদের ষড়যন্ত্রে’ অংশ দেওয়া নিজ দলের সদস্যদের তিনি ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিটিআই ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। সেখানে দলের পক্ষ থেকে মতামত দেওয়া হয়েছে, পার্লামেন্টে আজীবন নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও তাদের কারাগারে পাঠানো উচিত।
ইমরান খানের ভাষায়, ‘আজ যদি আমরা এই বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে না দাঁড়াই তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।’ এদিকে পাকিস্তান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করেছে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, ‘অবাধ্য’ ইমরান খানকে শাস্তি দিতে যুক্তরাষ্ট্র নির্লজ্জভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের আরেকটি চেষ্টা চালিয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘এই বছরের ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি ইমরান খান মস্কোতে আনুষ্ঠানিক সফরের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের পশ্চিমা সহযোগীরা চাপ প্রয়োগ শুরু করে, সফর বাতিল করতে আল্টিমেটাম দেয়।’
মারিয়া জাখারোভা বলেন, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী এই বছরের ৭ মার্চ পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার আলোচনা হয়। এতে ইউক্রেন ইস্যুতে পাকিস্তানি নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়ার নিন্দা জানানো হয় এবং স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরানো হলেই কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অবশ্য পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ওয়াশিংটন শুধু পাকিস্তানে নয় বরং দুনিয়াজুড়ে গণতান্ত্রিক নীতিতে বিশ্বাস করে। পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনের মার্কিন চেষ্টার যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোনও সত্যতা নেই। যুক্তরাষ্ট্র সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক নীতি শান্তিপূর্ণভাবে বজায় রাখার পক্ষপাতী।