পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের টেন্ডার ছাড়াই বিভিন্ন প্রজাতির সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের খাদ্য গুদাম সংলগ্ন সরকারি খাস জমিতে থাকা রেইট্রি, মেহগনী ও চাম্পল গাছ সহ মোট ১৪ টি গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (৯ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে অভিযুক্তরা গাছগুলো কেটেছেন সেগুলো নদীর পারে স্তুপ আকারে রাখা হয়েছে। কেটে নেওয়া ওই সব গাছপালার কিছু অংশ পাশেই পরে আছে। এছাড়া ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নারায়ন চন্দ্র মিস্ত্রী বাদী হয়ে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক, নাজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নাজিরপুর থানায় স্থানীয় প্রভাবশালী সুনিল কুমার হালদারের ছেলে জনি হালদার(৩২), মোনাজ উদ্দিন এর ছেলে রিপন শেখ(৩৪), শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে অনুপ বিশ্বাস(৩৪), মন্নান খাঁ এর ছেলে মোঃ আসলাম খা, মোশারেফ শেখ, শহীদ শেখদের বিরুদ্ধে এই গাছগুলো কাটার অভিযোগ করেছেন। এছাড়া তিনি আরো জানান, প্রায় ৭ লক্ষাধীক টাকার সরকারী গাছ কর্তন করেছে ওই প্রভাবশালীরা। আমি তাদের নিষেধ করলেও তারা আমার অনুরোধ ও প্রশাসনের নিষেধ না শুনে প্রকাশ্যে দিবালোকে গাছ গুলো কর্তন করেছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছগুলো জব্দ করা হয়েছে। তারা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে অবহিত না করে গায়ের জোরে আইন অমান্য করে গাছগুলি কেটেছে। তাই আমি প্রশাসনের সব জায়গায় অভিযোগ করেছি। এ বিষয়ে নাজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আল-মামুন জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি , অভিযোগ পাওয়ার পরে আমরা ঐ স্থানে গিয়ে কাছ কাটার সত্যতা পেয়েছি এবং গাছগুলো যে জায়গায় ছিল সেটি মূলত ডিসিআর ভূক্ত সম্পত্তি, ওদের নামে ডিসি আর ও হয়েছে।
বর্তমানে কর্তনকৃত গাছ গুলো ঘটনাস্থলে রাখতে বলা হয়েছে, যারা গাছ কেটেছে তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে, দোষী প্রমানিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিসি স্যারের অনুমতি পেলে গাছগুলো স্পট নিলাম হবে। এ বিষয়ে জানতে বনবিভাগের বন রক্ষক মোঃ কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান বিষয়টি শুনেছি। তবে ঐ জায়গা প্রত্যেকের নামে ডিসি আর করে দেওয়া হয়েছে, তবে ওই গাছ বনবিভাগের আওতাধীন নয়, এটি সরকারি খাস ল্যান্ডের গাছ বলে জানায়। অভিযুক্ত জনি ও অনুপদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আমরা ওই জায়গা ডিসি আর হিসাবে নিয়েছি। আমাদের পূর্ব পুরুষরা এই গাছগুলি রোপন করায় আমরা কেটেছি। গাছ কাটার টেন্ডার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা জানান আমরা অনুমতি নিয়েছি সত্য কিন্তু কোন কাগজ আমাদের কাছে এই মুহুর্তে নেই। অপর অভিযুক্ত রিপন জানান,ঐ জায়গাটি সরকার আমাদের ডিসি আর দিছে তাই আমরা গাছগুলো কাটার জন্য কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করছি কিন্তু গাছগুলো কারা কাটছে আমি জানিনা।বর্তমানে গাছগুলো এসিল্যান্ড স্যার জব্দ করে রেখেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ্ সাদীদ জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে গাছগুলোর কোন টেন্ডার হয়নি। টেন্ডারের জন্য প্রকৃয়াধীন রয়েছে। যারা গাছগুলো কেটেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।