মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন

নাজিরপুরে ভাঙ্গনের মুখে বিদ্যালয় তবুও ভবন নির্মাণ কাজ চলমান

এইচ এম আনিচুর রহমান নাজিরপুর (পিরোজপুর) :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৩নং দেউলবাড়ি দোবড়া ইউনিয়নের ১১৯ নং পশ্চিম গাঁওখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীভাঙনের মুখে পড়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ১৯৮১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ৩৩ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি থাকলেও নদী গর্ভে বিলিন হওয়ায় বর্তমানে ২৫ শতাংশে দড়িয়েছে। নদীতে পানি বাড়ার কারণে প্রতিদিনই স্কুল গ্রাউন্ডের কিছু কিছু অংশ ভেঙে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের অধিকাংশ স্থান চলে গেছে নদীগর্ভে। নাজিরপুরের ৩ নং দেউলবাড়ী দোবড়া ইউনিয়নের অনগ্রসর এই বিল এলাকার মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে স্থাপন করেন বিদ্যালয়টি। বিদ্যাপিঠটির এক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে তালতলা নদী। বিদ্যালয়টি মূলত তালতলা নদীর শাখা ডুমুরিয়া গাঁওখালী নদীর তীরে অবস্থিত। বর্তমানে নদী ও বিলে আবৃত ৫টি গ্রামের প্রায় দুইশ’ শিক্ষার্থী এই বিদ্যাপিঠে পাঠ গ্রহণ করে। তবে ৩ নং দেউলবাড়ী দোবড়া ইউনিয়নের পশ্চিম গাঁওখালী গ্রামের মানুষের শিক্ষার উন্নয়ন ঘটলেও পিছু ছাড়েনি তাদের দুর্ভোগ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সঙ্গে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দেউলবাড়ী দোবড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম গাঁওখালী। বর্ষাকালে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী এবং গ্রামের মানুষের এপাড়া থেকে ওপাড়ায় যাতায়াতে একমাত্র ভরসা নৌকা। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের অধিকাংশ অংশ এবং স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করা সুরক্ষা প্রাচীর ইতোমধ্যেই চলে গেছে নদীগর্ভে। আর বিদ্যালয়ের সামনে নেই সুরক্ষা প্রাচীর যেটি আছে সেটিও নরবরে, পুরাতন ভবনের অর্ধেকটা নদীগর্ভে প্রায় বিলিন হওয়ার পথে। ভাঙ্গনটি ক্রমান্বয়ে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের দিকে এগিয়ে আসছে। বর্তমানে ভাঙন ভবনের কাছাকাছি আসায় বিদ্যালয় রক্ষা করা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকরা। তার পরেও বিদ্যালয় ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে তৃতীয় তলার কাজ চলমান। নদী ভাঙনের পর শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোন খেলার মাঠ। প্রাচীর নরবরে থাকার কারণে যেকোনও সময় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সবার অজান্তে নদীতে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক খেলার উপকরণগুলো থাকার কথা থাকলেও নেই এই বিদ্যাপিঠে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ছালামতুল্লাহ্ বলেন ১৯৮১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ৩৩ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি থাকলেও নদী গর্ভে বিলিন হওয়ায় বর্তমানে আমাদের ২৫ শতাংশে দড়িয়েছে এবং বি এস রেকর্ডেও ২৫ শতাংশ’ই রেকর্ড হয়েছে। তিনি আরও জানান, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের প্রায় ৮ শতাংশ জমি নদীতে চলে গেছে। পানির স্রোত এত বেশি যে ভাঙন ক্রমেই বেড়ে এগিয়ে আসছে বিদ্যালয়ের প্রধান ভবনের দিকে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি মিস্ত্রী বলেন, বিদ্যালয়টিকে রক্ষা করতে হলে নদীতে মজবুদ পাইলিং এর ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক দপ্তরে লিখিত ভাবে আবেদন করতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল বাশার বলেন, এ বিষয়টি সম্পূর্ণ ইঞ্জিনিয়ার অফিস দেখাশুনা করে বর্তমানে কি অবস্থা আমার জানা নাই। উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল গাফ্ফার বলেন, ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয় বোর্ড কর্তপক্ষের নিকট আবেদন করা উচিৎ। এছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দ দিয়েও পাইলিং এর ব্যবস্থা করতে পারে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com