শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪২ অপরাহ্ন

দুর্ভোগ এড়াতে আগেভাগেই রাজধানী ছাড়ছে মানুষ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২

ঈদুল ফিতর পরিবারের সাথে উদযাপন করতে আগেভাগেই রাজধানীর ছাড়ছে মানুষ। আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের ছুটি। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে অনেকে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি। এবার করোনার প্রভাব না থাকায় সবাই পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির সুযোগ পাচ্ছেন। এজন্য রাজধানীর কমলাপুর ও গাবতলীতে যাত্রীদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। গতকাল সোমবার রাজধানীর কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। গাবতলী বাস টার্মিনালে খুলনাগামী আসাদুল ইসলাম নামের এক যাত্রী রাইজিংবিডিকে বলেন, গত দুই বছর পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে না পারায় এবার আগেভাগেই ঢাকা ছাড়ছি। এ বছর করোনা মহামারি না থাকায় আমরা পরিবারের সাথে ঈদ করতে পারবো। গত দুইটি বছর আমরা এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতার স্বীকার হয়েছি। এ বছর অবশ্য স্বস্তি ফিরেছে। তিনি বলেন, রাজধানীজুড়ে শুধুই যানজট। আমার আজিমপুর থেকে এখানে আসতে লেগেছে প্রায় ২ ঘণ্টা। ঈদের ছুটি না দিতেই শহরে যে পরিমাণ যানজট, ছুটি পড়ার সাথে সাথে এর তীব্রতা আরো প্রকট হবে।
এদিকে, ঢাকা থেকে বরিশালগামী আরিফুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, এর আগে সবশেষ ঈদে গ্রামে যাওয়ার সময় যানজটের কবলে পড়ে বাড়ি পৌঁছেছি ঈদের দিন সকালে। তাই এবার আগেই বাড়ি চলে যাচ্ছি৷ এবার আর কোন রিস্ক নিতে চাই না। আরেক যাত্রী বলেন, ঈদ আসলেই ঢাকা শহর নানান অব্যবস্থাপনায় নিমজ্জিত হয়। অতিরিক্ত ভাড়া, সিট না পাওয়া, যানজটসহ বিভিন্ন কারণে ঘরমুখো মানুষদের ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, অনন্ত এই সময়ে মানুষ যেন দুর্ভোগের স্বীকার না হয়। সবাই যেন ঠিক সময়ে বাড়ি পৌঁছাতে পারে এবং পরিবারে সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারে। কল্যাণপুরে হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার রাকিন হোসেন বলেন, এবারের ঈদের বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ বেশি। ২০ তারিখের পর থেকে মানুষের চাপ বেশি। অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে, তবুও যাত্রীদের চাহিদা শেষ হচ্ছে না। সরকারি ছুটি তো এখনও শুরু হয়নি। এবারের ঈদ যাত্রায় গাড়ি সংকটে পড়তে পারে।
টিকিটের লাইনে ভোগান্তিতে নারীরা: আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তৃতীয় দিনের মতো ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে আজ। সোমবার (২৫ এপ্রিল) দেওয়া হচ্ছে ২৯ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট। ঈদ যাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১ মে থেকে। ট্রেনের টিকিট পেতে ভোর থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারের দাঁড়িয়েছে হাজার হাজার টিকিটপ্রত্যাশী। এদিকে অন্য বছরের মতো এবারও নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। তবে তা একেবারেই নগণ্য বলে জানিয়েছেন স্টেশনে আগত টিকিটপ্রত্যাশী নারীরা। ভোগান্তি এড়াতে অন্তত পাঁচটি কাউন্টার নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার দাবি তাদের।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, এবার কমলাপুর থেকে মোট ১৬টি কাউন্টার থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য দুটি (১৮ ও ১৯ নম্বর) কাউন্টার থেকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। তবে নারী ও প্রতিবন্ধীদের উপস্থিতির তুলনায় কাউন্টারের সংখ্যা কম বলে দাবি টিকিটপ্রত্যাশীদের। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করে বেলা ১১টা পর্যন্তও টিকিট পাননি শেফালি শিউলি। লাইনে তার সামনে তখনো ২১ জন নারী। আদৌ টিকিট পাবেন কি না জানেন না তিনি।
তিনি বলেন, এখানে ১৬টি কাউন্টারের মধ্যে মাত্র দুটি কাউন্টারে নারীদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই কম হয়েছে। এখান থেকে আবার প্রতিবন্ধীদেরও টিকিট দেওয়া হচ্ছে।
আয়েশা আক্তার নামে অপর এক টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, নারীরা দীর্ঘসময় কোনো স্থানেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। এখানে তাদের নানা সমস্যা, শারীরিক অসুস্থতা থাকতে পারে। নারীদের কাউন্টারের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত কর্তৃপক্ষের। এ নিয়ে কথা হয় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ারের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্য বছর নারী ও প্রতিবন্ধীদের একটি কাউন্টারে টিকিট দেওয়া হতো। এবছর তাদের জন্য দুটি কাউন্টার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আশা করছি, সবাই সুষ্ঠুভাবেই টিকিট পাবেন। কাউন্টারে যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী, রেলপুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা সহযোগিতা করছে। তিনি বলেন, এবার কালোবাজারে টিকিট পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে সবাই এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) দেখিয়ে টিকিট নিচ্ছেন। এ কারণে একটু দেরি হয়তো হচ্ছে। আশা করি পরিবারের সঙ্গে সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত শনিবার (২৩ এপ্রিল) থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। রোববার (২৪ এপ্রিল) দেওয়া হয় ২৮ এপ্রিলের টিকিট। আজ দেওয়া হচ্ছে ২৯ এপ্রিলের টিকিট। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দেওয়া হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট। আর ২৭ এপ্রিল দেওয়া হবে ১ মে’র টিকিট। এছাড়া ৩ মে ঈদ হলে ২৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২ মে’র ট্রেনের টিকিট। ঈদ যাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১ মে থেকে। এবারের ঈদযাত্রার সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। আজ থেকে বিশেষ ট্রেনের টিকিট বিক্রিও শুরু হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com