ঢাকা-সিরাজগঞ্জ সড়কে অন্তত ২৪ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঘরমুখো মানুষ। গতকাল শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) ভোর থেকে সড়কে যানবাহনের চাপ থাকায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোল চত্বর থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত সড়কে থেমে থেমে গাড়ি চলছে। মনির হোসেন নামের এক বাস যাত্রী জানান, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা অতিক্রম করার পর থেকে হাটিকুমরুল গোল চত্বর পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকা পড়ে আছি।
সিরাজগঞ্জ জেলার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আবুল আলা মওদুদ জাগো নিউজকে জানান, যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ, চান্দাইকোনা এলাকায় একটি সেতুতে সমস্যা ও পাঁচলিয়াতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে কিছুক্ষণ যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে যানজট তৈরি হয়। তবে এখন মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও তেমন যানজট নেই।
বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজায় মোটরসাইকেলের দীর্ঘ লাইন: বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্বর থেকে টোলপ্লাজা পর্যন্ত মোটরসাইকেলের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মোটরসাইকেলের যাত্রী ও চালকদের। গতকাল শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সকালে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাশে এ দৃশ্য দেখা গেছে। বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির বাপ্পি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায়ের জন্য ৩-৪টি লেন চালু রাখা হয়। তবে ঈদ সামনে মহাড়কে প্রায় কয়েকগুণ যানবাহন চলাচল বেড়ে যায়। এ কারণে ও যানজটমুক্ত রাখতে সেতুতে বাস-ট্রাক, মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য যানবাহনের জন্য সাতটি লেনে টোল আদায় করা হচ্ছে। মোটরসাইকেলের জন্য গোলচত্বর থেকে বাম দিকের রাস্তা দিয়ে আলাদা দুই লেন করা হয়েছে। এরপরও সকালে হঠাৎ অতিরিক্ত মোটরসাইকেলের চাপ বেড়ে যায়। এ সময় কিছু সময়ের জন্য মোটরসাইকেলে যানজট সৃষ্টি হয়। তবে এখন মোটরসাইকেলের লেন স্বাভাবিক আছে।
শিমুলিয়ার পরিবর্তে পাটুরিয়া রুট ব্যবহারের অনুরোধ প্রতিমন্ত্রীর: ঈদযাত্রায় শিমুলিয়া ফেরিঘাটে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ কমাতে চালকদের পাটুরিয়া রুট ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। প্রতিমন্ত্রী বলেন, যানবাহন পারাপারের জন্য মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় ১০টি, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ২১টি ও আরিচায় চারটি ফেরি রয়েছে। সকালে শিমুলিয়ায় অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের চাপ রয়েছে। চাপের কারণে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। ঘাটে শৃঙ্খলা আছে। পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী শিমুলিয়ায় বড় ধরনের যানবাহন ফেরিতে পার করা হচ্ছে না। ছোট গাড়ি পার করা হচ্ছে। শিমুলিয়ায় যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থেকে রক্ষা পেতে পাটুরিয়া রুট ব্যবহার করতে পুনরায় অনুরোধ করছি।
গতকাল শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া (মাওয়া) লঞ্চ ও ফেরিঘাট পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঘাটে মানুষের অতিরিক্ত চাপ থাকলেও আমরা শৃঙ্খলা ধরে রাখতে পেরেছি। বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা পবিত্র শবে কদরের ইবাদত বন্দেগি করেও মানুষের সেবায় সচেষ্ট রয়েছেন। মানুষ আনন্দের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছে। তাদের কষ্ট দেখলাম না।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন। তখন শিমুলিয়া ঘাটে সমস্যা থাকবে না। ঘাটে গাড়ির জন্য ফেরি অপেক্ষা করবে। লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘাটে ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছেন।’ এসময় অন্যদের মধ্যে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান শামীম আল রাজী এবং বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক উপস্থিত ছিলেন।