দেশে আমদানি ব্যাপক হারে বেড়েছে, তবে সেই তুলনায় রফতানি আয় হচ্ছে না। ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৯০ কোটি ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। গত রবিবার (৮ মে) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্য বলছে, বাণিজ্য ঘাটতির এই অঙ্ক জাতীয় বাজেট অর্থাৎ ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার এক-তৃতীয়াংশের বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে রফতানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৯২ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানি বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এই নয় মাসে রফতানি থেকে দেশ আয় করেছে তিন হাজার ৬৬২ কোটি ডলার। পণ্য আমদানির পেছনে ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় থেকে রফতানি আয় বাদ দিলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় দুই হাজার ৪৯০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৭০৮ কোটি ডলার। অন্যদিকে সেবা খাতে দেশের ব্যয় হয়েছে ৯৮৯ কোটি ডলার। সেবা খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৮০ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ১৯৯ কোটি ডলার।
এদিকে চলতি হিসাব ভারসাম্য (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে এ ঘাটতির (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৪০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। সামগ্রিক লেনদেনে (ওভারঅল ব্যালেন্স) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ সূচকে ৬৯৯ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ৫৭৮ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম। দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই-মার্চে ২৬১ কোটি ৩০ লাখ ডলারের এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে ৩৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। আলোচিত সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগও আগের বছরের চেয়ে ৪৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়ে ১৬৭ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছর একই সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১১৪ কোটি ডলার।