বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

হিলি চেকপোস্ট দিয়ে আসছে লাখ লাখ টাকার ভারতীয় অবৈধপণ্য, রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২

দিনাজপুরের হিলি চেকপোস্ট দিয়ে আসা অন্তত ৩০-৪০ জন ভারতীয় পাসপোর্টযাত্রীর বিরুদ্ধে চোরাচালানের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন তারা লাখ লাখ টাকার ভারতীয় বিভিন্ন প্রকারের অবৈধপণ্য নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। এরপর বাংলাহিলি বাজারে বিক্রি করে আবার ভারতে ফিরে যাচ্ছে তারা। বুধবার (১১ মে) দুপুরে হিলি চেকপোস্ট ঘুরে দেখা যায়, চেকপোস্ট গেটে বিজিবি কিছুটা নমনীয় থাকায় আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় রমরমা লাগেজপার্টিদের চলছে এই অবৈধ কারবার। যারা এই কারবারে জড়িত তাদের বলা হয় “লাগেজপার্টি”। একপ্রকার প্রকাশ্যেই সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের সামনেই এসব হচ্ছে। ফলে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। লাগেজপার্টিরা যেসব ভারতীয় অবৈধপণ্য পাচার করে আনছে তারমধ্যে রয়েছে, শাড়ি, থ্রিপিস, কসমেটিক্স সামগ্রী, মদ, বিয়ার, গাঁজা, চকলেট, বিস্কুট, মোবাইল ফোনসেট, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ, বিছানার চাদর ও কম্বল, চানাচুর, হরলিক্স, সাবান, স্যাম্পু, টুথপেস্ট, ডায়পার, জুস ও শনপাপড়িসহ নানা ধরনের পণ্য। কাস্টমসে ও বিজিবি পোস্টে স্ক্যানিং মেশিন না থাকায় এসব মালামালের ভিতরে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার হয়ে আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। জানা গেছে, দুই বছর বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল করোনার বিধিনিষেধ উঠে যায়। ফলে হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাসপোর্ট-ভিসায় যাত্রী যাতায়াত শুরু হয়। আর এই সুযোগ নিয়ে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি ও বালুরঘাটের অন্তত ৩০-৪০ জন চোরাকারবারী পাসপোর্টে বাংলাদেশি বি-শ্রেনীর ভিসা (বিজনেস ভিসা) লাগিয়ে লাখ লাখ টাকার ভারতীয় অবৈধপণ্য হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। আবার সেই পণ্য বাংলাহিলি বাজারে বিক্রি করে ওইদিনই বিকেল বা সন্ধ্যায় ভারতে ফিরে যাচ্ছে। এই লাগেজপার্টিরা ১/২দিন পর পর বাংলাদেশে আসছে। লাগেজপার্টিরা ৩-৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে এই কার্যক্রম চালাচ্ছে। তারা দুই ভাবে বাংলাদেশে অবৈধ মালামাল আনে। কেউ নিজেরা পুঁজি খাটিয়ে। আবার কেউ মহাজনের অধীনে এই কারবারে জড়িত। এই অবৈধ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের হিলি চেকপোস্টে গড়ে উঠেছে লাগেজপার্টির সিন্ডিকেট। হিলি চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করা ভারতীয় লাগেজপার্টিরা হলো, পার্থ দে, শংকর সাহা, শ্যাম দে, সুমন দাস, বিথিশ দে, বিশ্বজিত গোস্বামী, সিরোজ শেখ, শংকর ঘোষ, অনুপ কুমার গুপ্ত, রাজ্জাক মন্ডল, সন্টু অধিকারী, উত্তম রায়, রিপন চন্দ্র দেবনাথ, কমলী চৌধুরী, সাগুতা দাস, সন্টু দে, মদন খতিক, অসিম মৈত্র, সরমা সাহা, প্রতিমা বর্মন, আল আমিন শেখ, সনজিত। এছাড়া আরও ২০২৫ জন এই কারবারের সাথে জড়িত। একটি বিশ্বস্ত্র সুত্র জানায়, দুই দেশের সংশ্লিস্টরা জড়িত না থাকলে কি করে ভারতীয় লাগেজপার্টি নামে এই চোরাকারবারীরা লাখ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য পাচার করে আনে। তারা বেপরোয়া হয়ে উঠায় সাধারণ পাসপোর্টযাত্রীরা হয়রাণীর শিকার হচ্ছে। আবার ভারতীয় লাগেজপার্টিরা ভারত থেকে বাংলাদেশি কোন যাত্রী দেশে ফিরার সময় ওই যাত্রীর ব্যাগে জোরপূর্বক ভারতীয় অবৈধ মালামাল ঢুকিয়ে দিচ্ছে। পরে বাংলাদেশি যাত্রী দেশে প্রবেশ করা মাত্রই ভারতীয় লাগেজপার্টিরা তাদের এপারের এজেন্টকে ফোন করে যাত্রীর নাম বলে দিলে এজেন্টরা যাত্রীর ব্যাগ থেকে মালামাল বের করে নিচ্ছে। এই কৌশলেও লাখ লাখ টাকার চোরাচালান হচ্ছে। এরফলে সাধারণ পাসপোর্টযাত্রীদের বিপাকে এবং বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। ভারতীয় লাগেজপার্টিদের নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে হিলি চেকপোস্ট চোরাচালানের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হবে। ফলে সরকার বঞ্চিত হবে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় থেকে। এবিষয়ে হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম খানের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হিলি চেকপোস্টে যাত্রী পারাপারের শুরু থেকে যাত্রীরা ব্যাগেজে অতিরিক্ত সুবিধা না নিয়ে যেতে পারে এবং সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত না হয়। এব্যাপারে সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দায়িত্বে আছে। আমাদের কঠোর ভাবে তাদের নির্দেশ দেওয়া আছে, ভারত থেকে অবৈধ ভাবে অতিরিক্ত সুবিধা আনতে পারবে না। তবে যদি কেউ এই অবৈধ কাজের সাথে জরিত থাকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন নেওয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com